দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ঢাকা-১৮ আসনে শুধুই সাহারা খাতুনের কর্মী-সমর্থকদের রাজত্ব। খিলক্ষেত থানার নয়টি ভোটকেন্দ্র ঘুরে দেখা গেছে, আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থী সাহারা খাতুনের পোলিং এজেন্ট ও কর্মীদের জয়জয়কার।
এর বিপরীতে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী বাংলাদেশ ন্যাশনালিস্ট ফ্রন্ট (বিএনএফ) সমর্থিত মো. আতিকুর রহমান নাজিমের পক্ষে কোনো এজেন্ট বা কর্মীর দেখাই মেলেনি।
খিলক্ষেত থানার নিকুঞ্জ মডেল কলেজে অবস্থিত তিনটি ভোটকেন্দ্র সকাল আটটা থেকে সাড়ে নয়টা পর্যন্ত ভোটারদের উপস্থিত ছিল হাতে গোনা। এখানে মোট আট হাজার ১০৩ জন ভোটারের বিপরীতে এখন পর্যন্ত ভোট দিয়েছেন মাত্র ১৫ জন। অর্থাৎ দেড় ঘণ্টায় ভোট দিয়েছেন শূন্য দশমিক ১৮ শতাংশ ভোটার।
এ কেন্দ্রের বাইরে যত আয়োজন দেখা যাচ্ছে তার সবই সাহারা খাতুনের পক্ষে। এখানে বিএনএফ প্রার্থীর নেই কোনো পোস্টার-এজেন্ট। কথা বলার মতোও কাউকে খুঁজে পাওয়া যায়নি। এমনকি কোনো কোনো বুথ এজেন্টবিহীন।
জানতে চাইলে ষাটোর্ধ্ব ভোটার আবুল হোসেন রাইজিংবিডিকে বলেন, ‘ভোট দিতে হয় তাই এসেছি। এর আগে আরো অনেকবার ভোট দিয়েছি কিন্তু এবারের পরিবেশ নির্বাচনের নামে বড়ই বেমানান।’ তিনি বলেন, বিএনপি নির্বাচনে থাকলে ভোটারদের মূল্যায়ন হতো।
ওই কেন্দ্রের সহকারী প্রিজাডিং অফিসার শফিকুর রহমান রাইজিংবিডিকে জানান, ‘১৯৯১ সালে আমি এযাবৎ চারটি সংসদ নির্বাচনে দায়িত্ব পালন করেছি। কিন্তু এবারের পরিবেশ একটু ভিন্ন। দেড় ঘণ্টা অতিবাহিত হলেও তার বুথে এখনো একটি ভোটও পড়েনি।’
এদিকে কুর্মিটোলা হাইস্কুল অ্যান্ড কলেজে গিয়ে দেখা গেছে একই চিত্র। এখানেও সব সাহারাময়। এখানের ছয়টি কেন্দ্রে মোট ভোটার ১৮ হাজার ৩৪৫ জন। দেড় ঘণ্টায় মোট ১০ জন ভোটার তাদের ভোট প্রয়োগ করেছেন।
এখানকার ভোটারদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, তারা অনেকটা নিরুৎসাহিত হলেও ভোট দিতে এসেছেন। মৎস্য ব্যবসায়ী মোকলেছুর রহমান বলেন, ‘এটা তো নির্বাচন না। কারণ, ব্যাট আর বল একজনের হাতে। যিনিই বল করছেন তিনিই ব্যাট করছেন।’
তবে ৮৮ বছর বয়স্ক মুক্তিযোদ্ধা মফিজুল ইসলাম বলেন, ‘ভোট দেওয়া গণতান্ত্রিক অধিকার। কোনো দল নির্বাচনে না এলেও ভোট কিন্তু বন্ধ নেই। ভোটাররা ভোট দিচ্ছেন। প্রচুর মানুষও আসছে।
তিনি বলেন, ‘বিএনপি-জামায়াত এ দেশকে ধ্বংস করার ষড়যন্ত্র করছে।