সরকার ও বিরোধী দলের পাল্টাপাল্টি প্রতিহতের ডাকের টানটান উত্তেজনার মধ্য দিয়ে সারা দেশে একযোগে শুরু হয়েছে দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ভোটগ্রহণ। আজ সকাল ৮টায় শুরু হওয়া এ ভোটগ্রহণ শেষ হবে বিকাল ৪টায়। ১৫৩টি আসনে প্রার্থীরা বিনাপ্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হওয়ায় ১৪৭টি আসনে ভোটগ্রহণ চলছে। আর ১৪৭টি আসনে মোট ভোটকেন্দ্র রয়েছে ১৮ হাজার ২০৮টি। এদিকে সকাল ৮টায় ভোটগ্রহণ শুরু হলেও প্রতিটি কেন্দ্রই ফাঁকা রয়েছে। সকাল থেকে ভোটাররা ভোট দিতে ভোট ভোটকেন্দ্রে যাননি। কোন কোন কেন্দ্রে আধা ঘণ্টায়ও একটি ভোটও পড়েনি। আতঙ্কে ভোটাররা উপস্থিত হননি।
এদিকে বিরোধী দলসহ বেশির ভাগ রাজনৈতিক দল অংশ না নেয়ায় প্রতিদ্বন্দ্বিতাহীন হয়ে পড়েছে নির্বাচন। আওয়ামী লীগসহ তাদের শরিক গুটি কয়েকটি দল নির্বাচনে অংশ নিয়েছে। এই একতরফা নির্বাচন ঠেকাতে গতকাল থেকেই ব্যালট পেপার ছিনতাই ও বাক্সসহ নির্বাচনী সরঞ্জামে অগ্নিসংযোগ, ভোটকেন্দ্রে অগ্নিসংযোগ, বিষ্ঠা নিক্ষেপ, পুলিশের ওপর হামলা, নির্বাচন অফিসে ও কেন্দ্রে পেট্রল বোমা ছুড়ে দেশব্যাপী আতঙ্ক সৃষ্টি করেছে বিরোধী জোটের কর্মী-সমর্থকরা। শুক্রবার সন্ধ্যা থেকে গতরাত পর্যন্ত এমন প্রতিরোধের আগুনে পুড়েছে ৩৯ জেলার ১৪২টি ভোটকেন্দ্র। নির্বাচনী মাঠে থাকছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সাড়ে চার লাখ সদস্য। নির্বাচন পরিচালনা কর্মকর্তার বাইরে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট, বিচারিক ম্যাজিস্ট্রেট, পুলিশ, র্যাব, বিজিবি, অঙ্গীভূত আনসার ভিডিপি, আনসার ব্যাটালিয়ান ও এপিবিএন সদস্যরা মাঠে সার্বক্ষণিক টহলে থাকবেন। এসবের মধ্যে অঙ্গীভূত আনসার/ভিডিপি, আনসার ব্যাটালিয়ান গ্রাম্য পুলিশ, চোকিদার ও তদফাদার থাকবে ২ লাখ ১৮ হাজার ৫০৮ জন। পুলিশ প্রতিকেন্দ্রে ৬ জনসহ থাকবে ১ লাখ ৯ হাজার ২৫৪ জন। সেনাবাহিনী থাকছে ৫০ হাজার। বিজিবি থাকছে ৬০ হাজার। এছাড়াও উপকূলীয় এলাকায় কোস্টগার্ড ও পাহাড়ী ও দূর্ঘম এলাকায় বিমান বাহিনীর সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে। পাশপাশি ১৪৭ বিচারিক ম্যাজিস্ট্রেট ও ২৯৪জন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট গুরুতর অপরাধে তাৎক্ষণিক সাজা দেবেন
এদিকে বিরোধী দল বিহীন এ নির্বাচনে জাতিসংঘ, ইউরোপীয় ইউনিয়ন, যুক্তরাষ্ট্র, কমনওয়েলথসহ আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় এ নির্বাচন পর্যবেক্ষণ করছে না। দেশীয় পর্যবেক্ষকদের সংস্থা ইলেকশন ওয়ার্র্র্কিং গ্রুপ সীমিত পরিসরে নির্বাচন পর্যবেক্ষণ করবে। ভুটান এবং ভারত থেকে তিনজন পর্যবেক্ষক এসেছেন এ নির্বাচন পর্যবেক্ষণ করতে। বিদেশী সাংবাদিক এসেছেন মাত্র ২১ জন। বিগত জাতীয় নিবাচনে পাঁচ শতাধিক বিদেশী সাংবাদিক সংবাদ সংগ্রহে ঢাকা এসেছিলেন। এদিকে নির্বাচনকে শান্তিপূর্ণ ও ভোটার উপস্থিতি বাড়াতে সব ধরনের প্রস্তুতি নিয়েছে নির্বাচন কমিশন। সেনা মোতায়েন করা হয়েছে সব কটি নির্বাচনী এলাকায়। পুলিশ, র্যাব ও বিজিবির কড়া পাহারা বসানো হয়েছে নির্বাচনী ভোট কেন্দ্রে।
উল্লেখ্য, গত ২৫শে নভেম্বর দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করেন সিইসি কাজী রকিবউদ্দীন আহমদ। এরপর থেকে বিরোধী জোট ওই তফসিল বাতিলের দাবিতে টানা হরতাল-অবরোধ পালন করে আসছে।