তামাশার নির্বাচন করার জন্য গিনেসবুকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নাম লেখা থাকবে বলে মন্তব্য করেছেন বিকল্পধারা বাংলাদেশের সভাপতি অধ্যাপক ডা. একিউএম বদরুদ্দোজা (বি.) চৌধুরী।
শনিবার জাতীয় প্রেসক্লাবে বাংলাদেশ সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদের গণঅনশন কর্মসূচিতে তিনি এমন মন্তব্য করেন।
বিরোধীদলীয় নেতাকে অবরুদ্ধ করে রাখা ও তার বাসায় বোমা হামলা, সুপ্রিমকোর্টে, জাতীয় প্রেসক্লাবে ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের ওপর আওয়ামী সন্ত্রাসীদের হামলার প্রতিবাদ এবং গণতন্ত্র-আইনের শাসন ও মানবাধিকার নিশ্চিত করার পাশপাশি গণহত্যা বন্ধ এবং প্রহসনের নির্বাচন স্থগিত করে নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবিতে এই কর্মসূচি পালন করা হয়।
বি চৌধুরী বলেন, একতরফা নির্বাচন করে দেশকে গৃহযুদ্ধের দিকে ঠেলে দিয়ে ২১ সালের মধ্যে দেশকে মধ্যম-আয়ের দেশে রূপান্তরের স্বপ্ন দেখানো জনগণের সঙ্গে প্রতারণা ছাড়া কিছুই নয়।
তিনি বলেন, সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনীর ফলে দেশে সংকট তৈরি হয়। দেশের এই অবস্থায় গামের্ন্টস শিল্পের ৪০ ভাগ অর্ডার ভারতে চলে গেছে। এভাবে চলতে থাকলে দেশ গৃহযুদ্ধের দিকে এগিয়ে যাবে।
সাবেক এই রাষ্ট্রপতি বলেন, একতরফা নির্বাচন করে আরো পাঁচ বছর ক্ষমতায় থাকার স্বপ্ন জনগণ পূরণ হতে দেবে না।
আগামীকাল রবিবারের নির্বাচনকে তামাশা আখ্যায়িত করে তিনি বলেন, ‘যে নির্বাচনে ১৫৩ আসনের ভোটারদের অধিকার কেড়ে নেয়া হয়েছে, তা শতাব্দির ইতিহাসে স্মরণীয় হয়ে থাকবে।’
বি. চৌধুরী বলেন, ‘আগামীকাল দশম সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হলে তা হবে লাশ দাফন।’
আর বাকি কুলখানির জন্য জনগণকে তৈরি হতে বললেন জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জেএসডি)র সভাপতি আ স ম আবদুর রব।
তিনি বলেন, আগামীকাল যদি লাশ দাফন হয়, তাহলে কুলখানির জন্য জনগণকে তৈরি থাকতে হবে।
নির্বাচন কমিশনকে সরকারের তল্পিবাহক উল্লেখ করেন আ স ম রব বলেন, ‘আগামীকাল যে তামাশার নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে তা হবে জাতির জন্য ন্যাক্কারজনক। প্রার্থীবিহীন এমন নির্বাচন প্রাদেশিক আমলেও হয়নি।’
এ সময় সরকারের তামাশার নির্বাচন বন্ধের জন্য রাষ্ট্রপতিকে আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, ‘আপনি রাষ্ট্রপতি, দেশের অভিবাবক। যে নির্বাচনের পক্ষে কেউ নাই, সেই নির্বাচন আপনি বন্ধ করুন।’
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে উদ্দেশ্য করে জেএসডি সভাপতি বলেন, ‘অতি আশা ভালো নয়। প্রধানমন্ত্রী, আপনি দেশটাকে জ্বালিয়ে দেবেন না।’
কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের সভাপতি বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী বলেন, আগামীকালের একতরফা নির্বাচনের জন্য হাসিনার নাম ইতিহাসে চেঙ্গিস, ইয়াহিয়া খানের সাথে থাকবে।
আগামী ২৪ জানুয়ারির পর দেশের কোন মানুষ শেখ হাসিনার কথা মানবে না বলেও দাবি করেন তিনি।
বঙ্গবীর বলেন, ‘আগামীকালের ভোটকেন্দ্রে শয়তান ছাড়া কেউ যাবে না। শয়তানের আয়োজন করা ভোটে শয়তানই যাবে।’
গোপালগঞ্জ নিয়ে খালেদা জিয়া যথার্থ বলেছেন দাবি করে তিনি বলেন, ‘প্রধামন্ত্রী আপনি যে দিন ওইভাবে বন্দি থাকবেন, সেদিন দেখা যাবে আপনার মাথা ঠিক থাকে কিনা।’
জাতীয় প্রেসক্লাব, সুপ্রিমকোর্ট ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের ওপর আওয়ামী সমর্থকদের হামলার নিন্দা জানিয়ে কাদের সিদ্দিকী বলেন, ‘বঙ্গবন্ধুর রক্তের লেশ মাত্র হাসিনার মধ্যে নেই।’
সংগঠনের আহ্বায়ক বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি রুহল আমীন গাজীর সভাপতিত্বে এতে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন- ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভিসি রাষ্ট্রবিজ্ঞানী ড. এমাজউদ্দীন আহমদ, বিকল্পধারার মহাসচিব মেজর (অব.) আবদুল মান্নান, ড্যাবের মহাসচিব ডা. এজেডএম জাহিদ, ঢাকা আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি অ্যাডভোকেট সানাউল্লাহ মিয়া, ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি কবি আবদুল হাই শিকদার, সেক্রেটারি জাহাঙ্গীর আলম প্রধানসহ পেশাজীবী পরিষদের নেতৃবৃন্দ।