সাতক্ষীরায় যৌথবাহিনীর অভিযান অব্যাহত রয়েছে। তারা বৃহস্পতিবার রাত থেকে গতকাল সকাল পর্যন্ত সাতক্ষীরা সদর, কালীগঞ্জ ও কলারোয়া উপজেলার বিভিন্ন স্থানে অন্তত ১০ জামায়াত নেতাকর্মীর বাড়িতে ভাংচুর, লুটপাট, অগ্নিসংযোগ ও বুলডোজার দিয়ে গুঁড়িয়ে দিয়েছে।
এছাড়া একই সময়ে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সন্ত্রাসীরাও কালীগঞ্জে বিরোধী নেতাকর্মীদের অন্তত ৫ বাড়িতে ব্যাপক ভাংচুর ও লুটপাট চালিয়েছে।
যৌথবাহিনী ও আওয়ামী সন্ত্রাসীদের ভাংচুর, লুটপাট সাতক্ষীরার ইতিহাসে এক কলঙ্কজনক অধ্যায়ের সূচনা করেছে বলে জেলা জামায়াতের পক্ষ থেকে এক বিবৃতি দেয়া হয়েছে।
প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা গেছে, গত বৃহস্পতিবার রাতে যৌথবাহিনী সাতক্ষীরা সদর উপজেলার ভোমরা ইউনিয়নের জামায়াতের আমির পদ্মশাখরা গ্রামের মাওলানা ওবাইদুল্লাহ, ওয়ার্ড সভাপতি শহর আলী, পদ্মশাখরা গ্রামের জামে মসজিদের মোয়াজ্জিন ওয়াসিউর রহমানের বাড়ি, লক্ষ্মীদাড়ী গ্রামের মাওলানা আবদুর রশিদ, আবদুল গফ্ফার, মহিউদ্দীন মেম্বারের বাড়ি এবং একই গ্রামের জয়নাল আবেদীনের মুদি দোকানটি বুলডোজার দিয়ে ভেঙে মাটির সঙ্গে মিশিয়ে দেয়। বাড়িতে থাকা জমাজমির কাগজপত্র, ভোটার আইডি কার্ড এবং প্রয়োজনীয় কাগজপত্র পুড়িয়ে দেয়।
এদিকে, একই দিন রাতে যৌথবাহিনী কালীগঞ্জ উপজেলার পাইকাড়া গ্রামের রবিউল ইসলাম এবং আবদুল হাকিমের বাড়িতে যায়। এ সময় তাদের বাড়িতে না পেয়ে যৌথবাহিনীর সদস্যরা তাদের ব্যবহৃত দুটি মোটরসাইকেল, দুটি বাইসাইকেল এবং তিনটি মোবাইল ফোন নিয়ে যায়।
এছাড়া, কালীগঞ্জ উপজেলার কালিকাপুর ইউনিয়নের নেছার আলী ঢালী, আবদুল জলিল ঢালী, রফিকুল ঢালী, রুহুল কুদ্দুস ও আবদুল কুদ্দুসের বাড়িতে আওয়ামী সন্ত্রাসীরা হামলা করে। এ সময় বাড়ি পুরুষশূন্য হয়ে পড়লে আওয়ামী সন্ত্রাসীরা ঘরের আসবাবপত্র লুটপাট করে নিয়ে যায়।
এদিকে, বৃহস্পতিবার রাতে যৌথবাহিনীর সদস্যরা সাতক্ষীরা সদর উপজেলার বৈচনা গ্রামের জামায়াত কর্মী ডা. ফিরোজের বাড়িতে অভিযান চালায়। এ সময় তাকে না পেয়ে যৌথবাহিনী বুলডোজার দিয়ে ঘরবাড়ি ভাংচুর, লুটপাট ও অগ্নিসংযোগ করে। পরে যৌথবাহিনী একই ইউনিয়নের ভোমরা গ্রামের জামায়াত কর্মী মাহমুদুর রহমান ও আশরাফ আলীর ঘরবাড়ি ভাংচুর ও লুটপাট করে।
অপরদিকে একই রাতে সাতক্ষীরার কলারোয়া উপজেলা জামায়াত নেতা মাওলানা আহম্মদ আলীর বাড়িতে যৌথবাহিনী অভিযান চালায়। তাকে বাড়িতে না পেয়ে ঘরবাড়ি ভাংচুর ও লুটপাট করে ।
এদিকে, যৌথবাহিনীর পক্ষ থেকে বাড়িঘর, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ভাংচুরের ঘটনায় তাদের সম্পৃক্ততা নেই—উত্তেজিত জনতা এসব ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকতে পারে বলে মন্তব্য করেন।
সাতক্ষীরা জেলা জামায়াতের পক্ষ থেকে আমির সাবেক এমপি অধ্যক্ষ মাওলানা আবদুল খালেক, জেলা সেক্রেটারি শেখ নূরুল হুদা এক যৌথ বিবৃতিতে বলেন, যৌথবাহিনী রাতের গভীরে একের পর এক জামায়াত নেতাকর্মীদের বসতবাড়ি, ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান ভাংচুর, লুটপাট ও অগ্নিসংযোগ করেছে, যা পৃথিবীর ইতিহাসে এক কলঙ্কজনক অধ্যায়। যৌথবাহিনী ও সশস্ত্র ক্যাডারদের হাত থেকে রক্ষা পাচ্ছে না নারী, শিশু, বৃদ্ধ এবং সংখ্যালঘুরা।