বিএনপির নেতাদের সামনে নতুন ‘ফাঁদ’ পেতেছে আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন মহাজোটের সরকার। সেটা হচ্ছে, দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর নতুন সরকারের মন্ত্রিসভায় যোগ দেয়া।
আওয়ামী লীগ চাচ্ছে, নতুন মন্ত্রিসভায় ‘অনির্বাচিত কোটায়’ বিএনপির প্রথম সারির কয়েক নেতাকে রাখতে। পাশাপাশি নতুন সরকারে মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রীর পর্যায়ের পদে প্রধান বিরোধী দল বিএনপির কয়েক নেতাকে চাচ্ছেও দলটি।
আওয়ামী লীগ মনে করছে, ‘নতুন সরকারের মন্ত্রিসভায় বিএনপির কয়েক নেতাকে মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী হিসেবে পেলে চার দিক থেকে লাভ হবে। এক, দলটিতে ভাঙন ধরানো যাবে, দুই, এতে নতুন সরকারকে জাতীয় সরকার, বা সর্বদলীয় সরকারে রুপ দেয়া যাবে, তিন, বিদেশে সরকারের গ্রহণযোগ্যতা বাড়বে, চার, সরকার বিরোধী আন্দোলন তেমন জোরালো হবে না।’
আওয়ামী লীগের শীর্ষ পর্যায়ের তিন নেতা প্রিয় দেশ ডটনেটকে জানান, ‘বিএনপির কয়েক নেতাকে আগামী সরকারের মন্ত্রিসভায় রাখার জোর চেষ্টা চলছে। এর মধ্যে দলটির কয়েক নেতাকে প্রস্তাবও দেয়া হয়েছে সরকারের পক্ষ থেকে। তারা সাড়াও দিয়েছেন।’
শীর্ষ ওই তিন নেতা জানান, ‘৫ জানুয়ারির ভোটের আগেই নতুন সরকার গঠন নিয়ে পরিকল্পনা, চিন্তা শুরু করেছেন ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ, মহাজোটের শরীক দলের নেতারা। আগামী ২৭, ২৮ জানুয়ারি নতুন সরকারের মন্ত্রিসভার শপথ অনুষ্ঠানের আয়োজন হতে পারে, এমনটিও ভাবছেন তারা।’
সরকারি দল আওয়ামী লীগের আরেকটি সূত্র জানায়, ‘দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপির নেতৃত্বাধীন ১৮ দলের জোট অংশ না নেয়ায় দেশ, বিদেশে নির্বাচনটির গ্রহণযোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। নতুন সরকারের মন্ত্রিসভায় নির্বাচনে অংশ না নেয়া কয়েকটি রাজনৈতিক দলের নেতাদেরকে তাই রাখার চিন্তা চলছে। তাদেরকে মন্ত্রিসভায় পেলে বিদেশে নতুন সরকারের গ্রহণযোগ্যতা বাড়বে।’
আওয়ামী লীগের শীর্ষ এক নেতা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ‘সরকার ভাবলেও বিএনপির প্রথম সারির কাঙ্খিত কোনো নেতাকে শেষ পর্যন্ত মন্ত্রিসভায় পাওয়া যাবে কী না, এ নিয়ে সন্দেহ আছে। নির্বাচনের আগে বিএনপির কয়েক নেতাকে সদ্য গঠিত বিএনএফে যোগ দিয়ে নির্বাচনে অংশ নেয়ার কথা বলা হয়। তাদেরকে নির্বাচনের পর মন্ত্রিসভায় রাখার আশ্বাসও দেয়া হয়। তারা প্রথমে রাজি হলেও পরে বিএনএফে যোগ দেননি, নির্বাচনেও অংশ নেননি।’
আওয়ামী লীগের নেতাদের দাবি, ‘দশম সংসদ নির্বাচনের ৫ জানুয়ারি ভোট নেয়ার আগেই আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে গঠিত রাজনৈতিক জোট ১৫৪টি আসনে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছে। শক্ত প্রতিদ্বন্দি না থাকায় বাকি আসনগুলোতেও জয় নিশ্চিত। তাই এখন সরকার গঠন, মন্ত্রিসভার সদস্যদের শপথ ইত্যাদি বিষয় নিয়ে চিন্তা-ভাবনা চলছে।’