আমাদের আন্তরিক চেষ্টা সত্ত্বেও বিএনপি নির্বাচনে আসেনি

0
110
Print Friendly, PDF & Email

আওয়ামী লীগের সভানেত্রী ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘একটি নির্বাচিত সরকার হিসেবে আমরা গণতন্ত্রকে সমুন্নত রাখার শপথ নিয়েছিলাম। তাই সাংবিধানিকভাবেই আগামী ৫ জানুয়ারি নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।’ গতকাল বৃহস্পতিবার রেডিও ও টেলিভিশনে দেশবাসীর উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে তিনি এসব কথা বলেন। ৫ জানুয়ারির নির্বাচন সামনে রেখে নির্বাচনে অংশ নেওয়া শীর্ষ রাজনৈতিক দলের প্রধান হিসেবে তিনি এ বক্তব্য দেন।
শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমরা সর্বাত্মক চেষ্টা করেছি বিএনপিকে নির্বাচনে আনার জন্য। ২০১০ সাল থেকে বারবার আমি বিএনপি নেত্রীকে আহ্বান জানিয়েছি আলোচনার মাধ্যমে একটি শান্তিপূর্ণ সমঝোতার পথে এগিয়ে আসতে। নির্বাচনকালীন সর্বদলীয় সরকারে স্বরাষ্ট্রসহ যেকোনো মন্ত্রণালয় দিতে আমি প্রস্তুত ছিলাম। আমি নিজে টেলিফোন করে বিরোধীদলীয় নেতাকে সংলাপের আহ্বান জানিয়েছি। তিনি সংলাপের আমন্ত্রণ প্রত্যাখ্যান করে সংঘাতের পথ বেছে নিয়েছেন। বারবার আমাকে আলটিমেটাম দিয়েছেন।’
দীর্ঘ ভাষণে শেখ হাসিনা গত পাঁচ বছরে তাঁর সরকারের বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ডের বিবরণ দেন। ক্ষেত্রবিশেষে গত নির্বাচনের আগে দেওয়া প্রতিশ্রুতির চেয়ে বেশি কাজ হয়েছে বলে তিনি দাবি করেন। একই সঙ্গে নির্বাচিত হলে নানা অগ্রাধিকারমূলক পদক্ষেপের সবিস্তার বর্ণনা দেন এবং সেসব বাস্তবায়নের প্রতিশ্রুতি দেন।
শেখ হাসিনা বলেন, ‘বিরোধীদলীয় নেতার দেওয়া প্রস্তাব অনুসারে আমাদের দলের সাধারণ সম্পাদক বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিবের সঙ্গে কয়েক দফা বৈঠক করেছেন। আমরা আশা করেছিলাম, জনগণের ওপর আস্থা রেখে প্রধান বিরোধী দল নির্বাচনে অংশ নেবে। কিন্তু আমাদের আন্তরিক চেষ্টা সত্ত্বেও বিএনপি নির্বাচনে অংশ নেয়নি।’ তিনি বলেন, ‘আমরা এবার অগ্রাধিকার দিতে চাই সুশাসন প্রতিষ্ঠা, গণতন্ত্রায়ণ ও ক্ষমতার বিকেন্দ্রীকরণে। আমরা চাই জঙ্গিবাদ, সন্ত্রাস ও সাম্প্রদায়িকতা দূর করে রাষ্ট্র ও সমাজজীবনে শান্তি, শৃঙ্খলা ও স্থিতিশীলতা প্রতিষ্ঠা করতে। নাগরিকদের জীবনের নিরাপত্তা বিধান ও তাদের মৌলিক অধিকার নিশ্চিত করতে।’
শেখ হাসিনা বলেন, নির্দিষ্ট সময়ে পদ্মা সেতুর নির্মাণকাজ শেষ হবে। দ্বিতীয় পদ্মা, যমুনা, মেঘনা ও গোমতী সেতু নির্মাণ করা হবে। সোনাদিয়া গভীর সমুদ্রবন্দর নির্মাণ করা হবে। সংবাদপত্রকে শিল্প হিসেবে ঘোষণা এবং প্রয়োজনীয় প্রণোদনা দেওয়া হবে। তিনি বলেন, আগামী পাঁচ বছরের মধ্যে ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ পৌঁছে দেওয়া হবে। দেশের উত্তর ও পশ্চিমাঞ্চলের জেলাগুলোয় গ্যাস সরবরাহ করা হবে। কৃষি গবেষণাকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেওয়া হবে।
শেখ হাসিনা বলেন, দেশে কোরআন-সুন্নাহ পরিপন্থী কোনো আইন করা হবে না। প্রতি জেলা ও উপজেলায় একটি করে উন্নত মসজিদ নির্মাণ করা হবে। তিনি বলেন, সমাজ থেকে হিংসা, হানাহানি ও সংঘাতের চির অবসান হবে। দুর্নীতি, দুর্বৃত্তায়নের ধারা থেকে বাংলাদেশ বেরিয়ে আসবে। তিনি তরুণ ভোটারদের জন্য তাঁর শুভ কামনা জানান।
শেখ হাসিনা দেশবাসীর প্রতি সমর্থন চেয়ে বলেন, ‘জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু এবং হক-ভাসানী-সোহরাওয়ার্দী’র প্রতীক, স্বাধীনতা ও মুক্তির প্রতীক নৌকায় ভোট চাই। আসুন, আমরা বিভেদ ভুলে সম্মিলিতভাবে শান্তি, উন্নয়ন, গণতন্ত্র ও সমৃদ্ধির পথে এগিয়ে যাই। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়ে তুলি।’

শেয়ার করুন