আর দুদিন পরই দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচন। রাত পোহালেই প্রচার-প্রচারণার ইতি ঘটবে। জয় পেতে ইউপিডিএফ সমর্থিত প্রার্থী প্রসীত বিকাশ খীসার ‘হাতি’ ঠেকাতে মরিয়া হয়ে উঠেছে আওয়ামী লীগ মনোনীত কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরার ‘নৌকা’ সমর্থকরা।
নির্বাচন কেন্দ্র করে সব প্রার্থী-সমর্থকদের মহড়া ও অভিযোগ-পাল্টা অভিযোগে বেশ গরম সংসদীয় পার্বত্য এ সংসদীয় আসন (২৯৮)। ইতোমধ্যেই খাগড়াছড়ির ১৮১ ভোট কেন্দ্রের মধ্যে ১৫৯টিকে ঝুকিপূর্ণ হিসেবে চিহ্নিত করেছে প্রশাসন। আর দুর্গম অঞ্চলের চার কেন্দ্রে ব্যবহার করা হবে হেলিকপ্টার- এমনটাই জানিয়েছে স্থানীয় নির্বাচন কমিশন কার্যালয়।
নির্বাচনী মাঠ ঘুরে দেখা যায়, খাগড়াছড়ি সংসদীয় আসনে আঞ্চলিক রাজনৈতিক সংগঠন ইউনাইটেড পিপলস ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট (ইউপিডিএফ) সমর্থিত প্রার্থী প্রসীত বিকাশ খীসাকে ঠেকাতে প্রকাশ্যে বিভিন্ন সভা-সমাবেশে আওয়ামী লীগের কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরা ‘কোনো সন্ত্রাসীকে ভোট না দিতে’ আহ্বান জানাচ্ছেন ভোটারদের। এছাড়া, তিনি ইউপিডিএফের বিরুদ্ধে নির্বাচনী এলাকায় সশস্ত্র মহড়া দেয়ারও অভিযোগ করেছেন একাধিক সভা-সমাবেশে।
তার দাবি, সন্ত্রাসী কথনো জনগনের বন্ধু হতে পারে না।
অন্যদিকে, খাগড়াছড়িতে চার প্রতিদ্বন্দ্বি প্রার্থীর মধ্যে প্রচার-প্রচারণায় স্থানীয়দের অংশগ্রহণ কম থাকলেও ভাল অবস্থানে রয়েছে জাতীয় পার্টির (জাপা) সোলায়মান আলম শেঠ। আর জেএসএস (এমএন লারমা) সমর্থিত প্রার্থী প্রকৌশলী মৃনাল কান্তি ত্রিপুরার পক্ষে প্রচার-প্রচারণা জোরালো না হলেও ভেতরে ভেতরে তিনি প্রচারণা চালাচ্ছেন পাহাড়ী পল্লীগুলোতে।
এদিকে, নির্বাচনের দিন যতই ঘনিয়ে আসছে ততোই বাড়ছে সহিংসতার শঙ্কা। নির্বাচনে অংশ নেয়া স্থানীয় একটি আঞ্চলিক রাজনৈতিক দলের বিরুদ্ধে ভোটারদের ভয়-ভীতি দেখানোর অভিযোগও উঠেছে।
স্থানীয় অনেকের অভিযোগ, এ আসনের বিভিন্ন দুর্গম এলাকায় ইউপিডিএফের সশস্ত্র নির্বাচনী মহড়ায় আতঙ্কিত হয়ে পড়েছেন সাধারণ ভোটাররা। আতঙ্কে রয়েছেন দুর্গম এলাকায় বসবাসকারী বাঙালি ভোটাররাও।
বিএনপির অনুপুস্থিতির সুযোগকে কাজে লাগিয়ে ভোটের মাঠে আতঙ্ক তৈরি করে নির্বাচনী ফলাফল নিজেদের পক্ষে নিতে তৎপর একটি বিশেষ দলের স্বতন্ত্র প্রার্থী। এমন সব গুরুতর অভিযোগ উঠেছে বিভিন্ন মহল থেকে। তবে কেউই নিজেদের নাম প্রকাশ করতে রাজি নয়।
পাহাড়ের উগ্রবাদী এ সংগঠনটির সমর্থকরা ভোটারদের ভয়ভীতি দেখিয়ে নিজেদের পক্ষে ভোট দিতে বাধ্য করতে পারে বলে আশঙ্কা করছে সচেতন মহল। নির্বাচনে তারা বিজয় ছিনিয়ে নেয়ারও ষড়যন্ত্র করছে বলেও অভিযোগ তাদের। ভোট কারচুপির আশঙ্কা তো এ অঞ্চলে মামুলি ব্যাপার।
প্রসঙ্গত, পার্বত্য খাগড়াছড়ি সংসদীয় আসনের ৮ উপজেলায় ১ লাখ ৯৭ হাজার ৮শ ৬৫ পুরুষ ও ১ লাখ ৮৪ হাজার ৫১ জন নারী ভোটারসহ মোট ভোটারের সংখ্যা ৩ লাখ ৮১ হাজার ৯শ ১৬ জন। ইতোমধ্যে খাগড়াছড়ির ১৮১ ভোট কেন্দ্রের মধ্যে ১৫৯ কেন্দ্রকে ঝুঁকিপূর্ণ বলে চিহ্নিত করেছে প্রশাসন। আর দুর্গম চার কেন্দ্রে ব্যবহার করা হবে হেলিকপ্টার।