সারাদেশে অবস্থান, ঢাকায় মার্চ ফর ডেমোক্রেসি

0
385
Print Friendly, PDF & Email

বিএনপি’র ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি পালনে বাধা, খালেদা জিয়াকে অবরুদ্ধ করে রাখা, গুলি করে রাজনৈতিক কর্মী হত্যা এবং আওয়ামী সন্ত্রাসীদের সাংবাদিক ও আইনজীবীদের ওপর হামলার প্রতিবাদে আগামীকাল ‘মার্চ ফর ডেমোক্রেসি’ অব্যাহত থাকবে। ঢাকায় এই কর্মসূচি পালিত হবে। রবিবার সন্ধ্যায় এক বিবৃতিতে তিনি এসব কথা বলেন।

তিনি বলেন, আগামীকাল ঢাকায় মার্চ ফর ডেমোক্রেসি আর দেশের সব বিভাগীয়, জেলা ও উপজেলা সদরে ১৮ দলের পক্ষ থেকে অবস্থান কর্মসূচি পালিত হবে। এই আন্দোলন শান্তিপূর্ণ ও গণতান্ত্রিক। এই আন্দোলনে বাধা দেয়া হলে উদ্ভূত যে কোনো পরিস্থিতির দায়-দায়িত্ব সরকারকেই নিতে হবে।

মির্জা আলমগীর বলেন, বেগম খালেদা জিয়াকে গত কয়েকদিন ধরে অবরুদ্ধ করে রাখা হয়েছে। গতকাল (শনিবার) রাত থেকে অসংখ্য পুলিশ মোতায়েনের মাধ্যমে তাঁকে কার্যতঃ অবরুদ্ধ করে রাখে। গণতন্ত্রের সব নীতি নৈতিকতাকে বিসর্জন দিয়ে খালেদা জিয়াকে আজ সমাবেশে যোগ দিতে বাধা দেয় সরকার। একটি শান্তিপূর্ণ কর্মসূচিকে বানচাল করতে সরকার নজীরবিহীন স্বৈরাচারী পথ অবলম্বন করেছে।

মির্জা আলমগীর বলেন, প্রেসক্লাবে সাংবাদিকবৃন্দের শান্তিপূর্ণ কর্মসূচির ওপর আওয়ামী লীগের লাঠিয়াল বাহিনী ন্যাক্কারজনক আক্রমণ চালায়। সাংবাদিকবৃন্দ আহত হন। ঢাকা হাইকোর্টেও বিজ্ঞ আইনজীবীদের শান্তিপূর্ণ সমাবেশে আওয়ামী লীগের সশস্ত্র সন্ত্রাসীরা একই ফ্যাসিবাদী কায়দায় আক্রমন চালিয়ে আইনজীবীদের আহত করেছে। পুলিশ মালিবাগে নির্বিচারে গুলী চালিয়ে একজন ছাত্রনেতাকে হত্যা করেছে। আহত হয়েছেন অনেকে।

তিনি বলেন, বিএনপি’র ভাইস চেয়ারম্যান মেজর (অব:) হাফিজ উদ্দিন আহমেদ বীর বিক্রম ও বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা এনাম আহমেদ চৌধুরীসহ অনেক নেতাকে গ্রেফতার করা হয়েছে। গণগ্রেফতারের মাধ্যমে শত শত নিরীহ জনগণকে গ্রেফতার করে চরম হয়রানী করা হচ্ছে।

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব অভিযোগ করেন, ক্ষমতাকে চিরস্থায়ী করার লক্ষ্যে বাকশালী কায়দায় একদলীয় শাসনব্যবস্থা ভিন্ন আঙ্গিকে পুনরায় কায়েম করার উদ্দেশ্যে ৫ জানুয়ারী প্রহসনের নির্বাচন অনুষ্ঠান করতে চাইছে সরকার। জনগণের ভোটের অধিকার হরণ করে, গণতন্ত্র হত্যা করে এই দুর্নীতিপরায়ণ সরকার দুঃশাসনের মাধ্যমে ক্ষমতাকে নিরঙ্কুশ করতে নির্লজ্জ মিথ্যাচার, নজিরবিহীন অত্যাচার ও নির্যাতনের পথ বেছে নিয়েছে। বাংলাদেশের সংগ্রামী জনগণ তাদের এই হীন উদ্দেশ্য সফল হতে দেবে না।

তিনি সাংবাদিক, আইনজীবী এবং সংগ্রামী জনগণকে ধন্যবাদ ও অভিনন্দন জানিয়ে বলেন, যিনি আজ শহীদ হয়েছেন তার রুহের মাগফিরাত কামনা করছি। যারা আহত হয়েছেন তাদের আশু সুস্থতা কামনা করছি। গ্রেফতারকৃতদের অবিলম্বে নিঃশর্ত মুক্তির জোর দাবি জানাচ্ছি। আজকের কর্মসূচিতে অংশগ্রহণকারী ১৮ দলীয় জোটের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মীসহ গণতন্ত্রকামী দেশবাসীকে তিনি ধন্যবাদ ও অভিনন্দন জানান।

মির্জা আলমগীর বলেন, বাংলাদেশের জনগণের গণতান্ত্রিক ও ভোটের অধিকার রক্ষার জন্য নিরপেক্ষ নির্দলীয় সরকারের অধীনে আগামী দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠান এবং প্রহসনের নির্বাচনী তফসীল বাতিলের দাবিতে নয়াপল্টন বিএনপি কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি ‘মার্চ ফর ডেমোক্রেসি’তে বেগম খালেদা জিয়ার নেতৃত দেয়ার কথা ছিল।

সরকার গত দুই দিন যাবত দেশের সকল রাজপথ, রেলপথ ও নৌপথ অবরুদ্ধ করে রাখে। জেলায় জেলায় গণগ্রেফতার ও আওয়ামী সন্ত্রাসীদের লাঠি মিছিলের মাধ্যমে এই শান্তিপূর্ণ গণতান্ত্রিক আন্দোলনকে দমন করার অপচেষ্ট করছে। জনগণই সকল ক্ষমতার উৎস। ইনশাআল্লাহ জনগণের বিজয় সুনিশ্চিত।

শেয়ার করুন