আনান্দবাজার পত্রিকা
সংবাদ সংস্থা
রবিবার ঢাকায় বিএনপি-সহ বিরোধী দলগুলির রাজনৈতিক অভিযান ব্যর্থ হওয়ার পরে সন্ধ্যায় বিনপি-র সহ-সভাপতি হাফিজুদ্দিন আহমেদকে গ্রেফতার করল পুলিশ। এ দিন সন্ধ্যা সওয়া সাতটা নাগাদ সাংবাদিক বৈঠকের পর তাঁকে গ্রেফতার করে পুলিশ। যদিও এই গ্রেফতারির কোনও কারণ জানাননি তারা। পুলিশের বাধার বাংলাদেশের বিএনপি-নেতৃত্বাধীন ১৮ দলের জোটের এই কর্মসূচি পণ্ড হলেও সোমবার ফের একই কর্মসূচি নেওয়া হয়েছে। প্রায় এক ঘণ্টা অপেক্ষা করে নিজের বাড়ি থেকে বের হতে পারেননি তিনি। খালেদা বলেন, “গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের কর্মসূচি অব্যাহত থাকবে। আজ না হয় কাল, কাল না হয় পরশু কর্মসূচি চলবে।” বর্তমান সরকারকে ‘অবৈধ ও অগণতান্ত্রিক’ সরকার বলেন তিনি।
রবিবার বিএনপি-র ‘গণতন্ত্র রক্ষার্থে’ নয়া পল্টনের জনসমাবেশকে রোখার জন্য কড়া নিরাপত্তার চাদরে মুড়ে ফেলা হয় ঢাকা শহরকে। কোনও রকম অপ্রীতিকর ঘটনা যাতে বিরোধী দলের সমর্থকরা ঘটাতে না পারে সে জন্য শহরের রাস্তায় এ দিন সকাল থেকেই টহল দেয় যৌথবাহিনীর জওয়ানরা। রাজধানীতে প্রবেশের সমস্ত পথে যান চলাচল আটকে দেয় পুলিশ। পরিস্থিতি সামলাতে বিএনপি-র প্রধান কার্যালয়ের সামনে জলকামান ও পুলিশের সাঁজোয়া গাড়ি রাখা হয়। পাশাপাশি, সভাস্থলের চারপাশে প্রচুর পুলিশ মোতায়েন করা হয়।
ঢাকা পুলিশ সূত্রে খবর, নাশকতার সন্দেহে এ দিন রাজধানীতে প্রায় ৫০ জনকে আটক করা হয়েছে। সকাল ১১টা নাগাদ পল্টনে সমাবেশে যাওয়ার সময় বিএনপি-র ৫ নেতাকে গ্রেফতার করে পুলিশ। নারায়ণগঞ্জ থেকে গ্রেফতার করা হয় ১৫ জনকে। বেলা বাড়ার সঙ্গে বিভিন্ন জায়গা থেকে বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষের খবর আসতে শুরু করে। পুলিশ সূত্রে খবর, এ দিন বেলা ১২টা নাগাদ ঢাকার প্রেস ক্লাবে জামাত-আওয়ামি লিগ সমর্থকদের সংঘর্ষে আহত হন ১ জন।
মালিবাগে পুলিশ-জামাতের সংঘর্ষে মৃত্যু হয় এক জনের। নয়া পল্টনে সভায় যোগ দিতে যাওয়ার সময় আটক করা হয় খালেদা জিয়ার উপদেষ্টা এনাম আহমেদ চৌধুরীকে। জামাত এবং বিএনপি-র হিংসাত্মক ঘটনা রুখতে এ দিন সকালে পথে নামেন আওয়ামি লিগের সমর্থকরা। অন্য দিকে, বার কাউন্সিল চেয়ারম্যান খান্ডকর মাহবুব হোসেনের নেতৃত্বে বিরোধী দলের সমর্থকরা বাংলাদেশের শীর্ষ আদালত চত্বরে বিক্ষোভ দেখালে পুলিশের সঙ্গে ধস্তাধস্তি হয়। বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করতে জল কামান ব্যবহার করে পুলিশ।
আগামী ৫ জানুয়ারির নির্বাচন প্রতিহত করতে গত শুক্রবারই হুঁশিয়ারি দিয়ে রবিবার ‘ঢাকামুখী অভিযান’-এর আহ্বান জানিয়েছিলেন বিএনপি প্রধান খালেদা জিয়া। বিরোধী নেত্রীর হুঁশিয়ারির পরই তাঁর বাড়ির চারপাশে প্রচুর পুলিশ মোতায়েন করা হয়। তাঁদের নেত্রীকে ‘গৃহবন্দি’ করে রাখার অভিযোগও তুলেছে বিএনপি। কিন্তু এই অভিযোগকে নস্যাত্ করে পুলিশ প্রশাসনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, বিএনপি প্রধানের নিরাপত্তার স্বার্থেই এই আয়োজন।