প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, এক-এগারোর কুশীলবরা আবার সক্রিয় ও সোচ্চার হয়েছেন। এদের ব্যাপারে সবার সজাগ থাকতে হবে। আজ রোববার গণভবনে জেএসসি ও জেডিসি পরীক্ষার ফলাফল গ্রহণ করার সময় প্রধানমন্ত্রী এ কথা বলেন।
৫ জানুয়ারি নির্বাচন স্থগিতের বিষয়ে বিশিষ্টজনদের দেওয়া পরামর্শ সম্পর্কে শেখ হাসিনা বলেন, ‘তাঁরা কি অসাংবিধানিক পন্থা চাইছেন? নির্বাচন একটা পর্যায়ে চলে এসেছে। এখন নির্বাচন বন্ধ করতে হলে অসাংবিধানিক পন্থায় যেতে হবে। বিশিষ্টজনেরা কি সেই পন্থা চান? অবশ্য অসাংবিধানিক পন্থা থাকলেই বিশিষ্টজনদের কদর বাড়ে। তাঁদের অবশিষ্ট কাজটুকু হয়ে যায়।’
গতকাল শনিবার এক আলোচনা সভায় সংকট এড়িয়ে রাজনৈতিক সমঝোতার পথ প্রশস্ত করতে ৫ জানুয়ারির নির্বাচন স্থগিত করার পরামর্শ দেন বিশিষ্টজনেরা। ‘সংকটে বাংলাদেশ, নাগরিক ভাবনা’ শীর্ষক এই বৈঠকের আয়োজন করেছিল সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি), আইন ও সালিশ কেন্দ্র (আসক), ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি) ও সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন)।
এ প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘কিছু বিশিষ্টজন হঠাত্ করেই বেশ কিছু পরামর্শ দিয়েছেন। এঁদের মধ্যে অনেককে এক-এগারোর সময়ও দেখা গিয়েছিল।’ নাগরিক সমাজের এই প্রতিনিধিদের উদ্দেশে প্রধানমন্ত্রী প্রশ্ন করে বলেন, ‘তাঁদের এই চেতনা এত দেরিতে কেন এল? যখন হরতাল-অবরোধে পরীক্ষা বন্ধ হয়ে গেল, বাসে আগুন দিয়ে জীবন্ত মানুষ পুড়িয়ে মারা হলো, তখন উনাদের এই চেতনা কোথায় ছিল? হেফাজতে ইসলাম যখন তাণ্ডব চালাল, আমার আহ্বানের পরও বিরোধীদলীয় নেতা সংলাপে সাড়া দিলেন না, তখন কেন বিশিষ্টজনেদের চেতনা জাগ্রত হলো না?’ ‘অন্য কিছু হলে’ এই বিশিষ্টজনদের ডাক পড়তে পারে এই আশাতেই তাঁরা বসে থাকেন বলেও মন্তব্য করেন শেখ হাসিনা।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আন্দোলনের নামে যখন মানুষ খুন হচ্ছে, সন্ত্রাস হচ্ছে, গাছ কাটা হচ্ছে, তখন পরিবেশবিদদের কেউ তো একটি বিবৃতি দিলেন না। সুশীল সমাজও এ নিয়ে একটা কথাও বলল না।’
শেখ হাসিনা বলেন, পরীক্ষার সময় হরতাল-অবরোধ দেওয়ায় বাচ্চাদের মানসিক প্রস্তুতি নষ্ট হয়ে যায়, তারা অনিশ্চয়তার মধ্যে পড়ে। আর অনিশ্চয়তার মধ্যে পরীক্ষা দেওয়া কঠিন। শিক্ষক-কর্মকর্তাদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘অস্বাভাবিক পরিস্থিতির মধ্যে ফল দিয়ে আপনারা সবাই অসাধ্য সাধন করেছেন। আপনারা সবাই পুরস্কার পাওয়ার যোগ্য।’
এর আগে শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ আজ সকাল ১০টার দিকে গণভবনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হাতে জেএসসি ও জেডিসি পরীক্ষার ফলাফলের অনুলিপি তুলে দেন।