মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচারে গঠিত আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান বিচারপতি এটিএম ফজলে কবীরকে পুনঃনিয়োগ দিতে যাচ্ছে সরকার।
বিচারপতি এটিএম ফজলে কবীরকে পুনঃনিয়োগ দেয়ার জন্য সার সংক্ষেপ তৈরি করে তা রাষ্ট্রপতির কাছে পাঠানো হচ্ছে বলে আইন মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে।
সূত্র জানায়, ওনার সম্মতি নিয়ে পুনঃনিয়োগ দিতে যাচ্ছে সরকার।
চলতি সপ্তাহের মধ্যেই তার নিয়োগের বিষয়টি চূড়ান্ত করা হবে। কেননা আগামী ৩১ ডিসেম্বর বিচারপতি ফজলে কবীরের অবসরে যাওয়ার কথা রয়েছে।
সংবিধানের ৯৬ (২) ধারা মতে হাইকোর্টের কোন বিচারপতি বয়স ৬৭ বছর পূর্ণ হলে তাকে অবসরে যেতে হয়।
পুনঃনিয়োগ দেয়া হলে তিনি ট্রাইব্যুনাল-১ এর চেয়ারম্যানই হিসেবে কাজ করবেন।
বিচারপতি এটিএম ফজলে কবীরের পুনঃনিয়োগে বিষয়ে জানতে চাইলে প্রসিকিউটর রানা দাস গুপ্ত নতুন বার্তা ডটকমকে বলেন, মেয়াদ শেষ হওয়ার পর তাকে পুনঃনিয়োগ দিতে আইনে কোনো বাধা নেই।
তিনি বলেন, আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল আইনের ৭ ধারা অনুযায়ী হাইকোর্টের কোন বিচারপতি অথবা হাইকোর্টের যোগ্য কোননোবিচারক অথবা হাইকোর্টে বিচারপতি ছিলেন এমন বিচারকগণকে ট্রাইব্যুনালের বিচারক নিয়োগ দেয়া যাবে।
এ আইন অনুযায়ী বিচারপতি এটিএম ফজলে কবীরকে পুনঃনিয়োগে কোনো বাধা নাই।
অন্যদিকে আসামিপক্ষের আইনজীবী মিজানুল ইসলাম বলেন, আইসিটির আইন অনুযায়ী বাধা না থাকলেও হাইকোর্টের কোনো বিচারপতির মেয়াদ এভাবে বাড়িয়ে বিচারিক কাজে যুক্ত রাখার ঘটনা বিরল। তিনি বলেন, কোনো বিচারপতিকেই তার মেয়াদ বৃদ্ধি করে বিচারিক কাজে নিয়োগ দেয়া হয়নি।
উল্লেখ্য হাইকোর্টের বিচারপতিদের তালিকায় থাকা বিচারপতি এটিএম ফজলে কবীরের প্রোফাইলে দেখা যায় তিনি ১৯৪৭ সালের ১ জানুয়ারি চাপাইনবাবগঞ্জ জেলায় জন্ম গ্রহণ করেন। পিতার নাম মো. মাজহারুল হক, মায়ের নাম তাইবাতুন্নেছা।
তিনি ১৯৭৩ সালে জেলা আদালতে আইন পেশা শুরু করেন। এরপর ১৯৭৫ সালের ২৬ ডিসেম্বর জুডিশিয়াল সার্ভিসে মুনসেফ হিসেবে নিয়োগ পান। পরে ১৯৯২ সালের ২২ অক্টোবর জেলা ম্যাজিস্ট্রেট হিসেবে বিচারিক কাজ শুরু করেন। ২৭ আগস্ট ২০০৩ সালে তিনি হাইকোর্টে অতিরিক্ত বিচারপতি নিয়োগ পান। এরপর ২০০৫ সালের ২৭ আগস্ট তিনি চুড়ান্ত নিয়োগ পান।
মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচারের জন্য ২০১০ সালে আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে মহাজোট সরকার গঠন করে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। এ ট্রাইব্যুনালের সদস্য বিচারপতি হিসেবে ২০১১ সালের ২৫ মার্চ নিয়োগ পান তিনি। পরে ২০১২ সালের ১৩ ডিসেম্বর তিনি ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যানের দায়িত্ব গ্রহণ করেন।
বর্তমানে ট্রাইব্যুনাল-১ এ চারটি মামলা বিচারাধীন রয়েছে এবং জামায়াতের আমির মতিউর রহমান নিজামীর মামলাটি রায়ের জন্য অপেক্ষমান রাখা হয়েছে। যেকোনো দিন এ মামলার রায় ঘোষণা করা হবে।
এর আগে উক্ত ট্রাইব্যুনাল থেকে তিনটি মামলার রায় ঘোষণা করা হয়েছে।