মার্চ ফর ডেমোক্র্যাসিতে খালেদার যোগ দেওয়া নিয়ে শঙ্কা

0
645
Print Friendly, PDF & Email

২৯ ডিসেম্বর রাজধানীতে ‘মার্চ ফর ডেমোক্র্যাসি’ কর্মসূচিতে বিরোধীদলীয় নেতা ও বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া যোগ দিতে পারবেন কি-না তা নিয়ে শঙ্কা দেখা দিয়েছে।

কারণ শুক্রবার রাতে খালেদা জিয়া গণমাধ্যমে পাঠানো এক ভিডিও বার্তায় বলেছেন, আমি আপনাদের পাশে আছি, থাকবো সব সময়। যদি আমি আপনাদের পাশে থাকতে না পারি, তাহলে আপনারা কর্মসূচি চালিয়ে যাবেন । এ সরকারের বিদায় না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাবেন।।

২৪ ডিসেম্বর নির্বাচন প্রতিহতের ডাক দেওয়ার পর কার্যত খালেদা জিয়াকে অবরুদ্ধ করে রাখা হয়েছে। বিএনপির পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হয়েছে, তার সঙ্গে দলের কোনো নেতাকে দেখা করতে দেওয়া হচ্ছে না ।

চেয়ারপারসনের গুলশান কার্যালয়ে বুধবার খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের সঙ্গে বড়দিনের শুভেচ্ছা বিনিময়ে মার্চ ফর ডেমোক্র্যাসি কর্মসুচিতে অংশ নিতে বাধা দেবে বলে খালেদা জিয়া নিজেই আশঙ্কা প্রকাশ করেছিলেন। ওইদিন খালেদা জিয়া সরকারের উদ্দেশে কঠোর হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, আমাকে বাধা বা অবরুদ্ধ করলে সরকার ভুল করবে। এ জন্য সরকারকে চরম পরিণতির মুখে পড়তে হবে।

সুত্র জানায়, নির্বাচনের আগে বিরোধী দলের ডাকা সমাবেশ ঢাকাকে অচল বা অশান্ত করারই একটা কৌশল বলে মনে করছেন ক্ষমতাসীন দলের নেতারা। গত কয়েকদিন আগে ক্ষমতাসিন দলের একটি প্রতিনিধি দল নির্বাচন কমিশনের কাছে গিয়ে বিরোধী দলের এ সমাবেশের ব্যাপারে তাদের আপত্তির কথা জানিয়ে এসেছেন। এছাড়া এ সমাবেশ যাতে না হয় সে ব্যাপারে তারা নির্বাচন কমিশনের হস্তক্ষেপ দাবি করেন।

এদিকে, সরকারের পক্ষ থেকে নির্বাচনের আগে ঢাকায় বিরোধী দলের এ সমাবেশের যৌক্তিতা নিয়ে প্রশ্ন তোলা হয়েছে এবং যেকোনো মূল্যে কর্মসূচি ঠেকাতে ব্যাপক প্রস্তুতি নিয়েছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।

বিএনপির পক্ষ থেকে আশঙ্কা প্রকাশ করা হয়েছে, ২৯ তারিখের কর্মসুচিতে বিরোধীদলীয় নেতার যাওয়ার ক্ষেত্রে এখনই প্রতিবন্ধকতা তৈরি করছে সরকার। যাতে তিনি কর্মসুচিতে যেতে না পারেন।

বিএনপি নেতারা বলছেন, এর আগে অনুরোধ করলেও বেগম জিয়ার নিরাপত্তার জন্য এগিয়ে আসেনি সরকার। কী এমন অবস্থার সৃষ্টি হলো যে, এখন নিরাপত্তা দিতে তাকে অবরুদ্ধ করে রাখা হয়েছে। আসলে সরকারের উদ্দেশ্য ব্যক্তিগত নিরাপত্তাহীনতার অজুহাত দেখিয়ে মার্চ ফর ডেমোক্র্যাসির দিন খালেদা জিয়াকে বের হতে না দেওয়া। অতীতেও আমরা এমনটা দেখেছি, এবারও আমরা সরকারের একই আচারণ দেখছি।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে বিএনপির এক নেতা বলেন,দলের নেতাকর্মীদের বিশেষ করে গুরুত্ব পূর্ণ নেতাদেরও নিরাপত্তার অজুহাতে বেগম খালেদা জিয়ার সঙ্গে দেখা করতে দেওয়া হচ্ছে না। এসব দেখে মনে হচ্ছে, কর্মসুচিতে ভয় পেয়ে সরকার আগেভাগেই চেয়ারপারসনকে অবরুদ্ধ করে রাখছে। যাতে তিনি কর্মসুচিতে যোগ না দিতে পারেন। তবে এটা যদি করা হয় তাহলে এর পরিণতি ভালো হবে না বলে ওই নেতার দাবি।

২৯ ডিসেম্বর ঢাকা অভিমুখে যাত্রা কর্মসূচিতে বিরোধীদলীয় নেতাকর্মী যারা যোগ দেবেন তারা জমায়েত হবেন রাজধানীর নয়াপল্টন এলাকায়। আর কর্মসূচি ঠেকাতে সরকার মরিয়া বলে দাবি করছে বিএনপি ।

এ ব্যাপারে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান অভিযোগ করেন, নেতাকর্মীদের থেকে বিচ্ছিন্ন করতে বিরোধীদলীয় নেতার বাসা ও কার্যালয় অবরুদ্ধ করে রেখেছে সরকার।

সাংবাদিকদের তিনি বলেন, মার্চ ফর ডেমোক্র্যাসি কর্মসূচি ঘোষণার পর থেকে বিরোধীদলীয় নেতার গুলশানের বাসা ও তার রাজনৈতিক কার্যালয়ের সামনে অতিরিক্ত পুলিশ ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে।

বিরোধীদলীয় নেতার বাসায় দলীয় নেতারা এমনকি আত্মীয় স্বজনকে প্রবেশ করতে দেওয়া হচ্ছে না। নেতাকর্মীদের ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে না। এ সব কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে বিরোধীদলীয় নেতাকে দলীয় নেতাকর্মীদের কাছ থেকে বিচ্ছিন্ন করার অকৌশল নিয়েছে।

শেয়ার করুন