রোববারের ঢাকামুখি গণতন্ত্র অভিযাত্রায় অংশ নিতে চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনসমুহের নেতা-কর্মীরা অনেকটা গোপনে যেভাবে সম্ভব রাজধানীর উদ্দেশে চট্টগ্রাম ছাড়ছেন। চট্টগ্রাম থেকে দলের উদ্যোগে কী পরিমাণ লোক নেয়া হচ্ছে সে সম্পর্কে পরিষ্কার এবং বিস্তারিত কিছু জানা সম্ভব হচ্ছে না। শীর্ষ কয়েকজন নেতা জেলে আটক থাকায় এবং আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, ডা. শাহাদাতসহ শীর্ষ ও দ্বিতীয় সারির প্রায় অনেক নেতা মামলা-গ্রেফতারের ভয়ে অনেকটা আত্মগোপনে থাকায় নেতা-কর্মীদের সংগঠিত করে রাজধানী নিয়ে যাওয়ার কোনো উদ্যোগই দৃশ্যমান নয়।
এমন পরিস্থিতিতে মাঠে সক্রিয় নেতা-কর্মীরা তাদের ক্ষোভ প্রকাশ করছেন আত্মগোপনে থাকা শীর্ষ নেতাদের বিরুদ্ধে। তাদের অনেকের বক্তব্য, মাঠে সমর্থন আর সাংগঠনিক শক্তি থাকা সত্ত্বেও চট্টগ্রাম বিএনপি এখন অনেকটা অভিভাবকহীন। ইতিপূর্বে ঢাকায় অনুষ্ঠিত মহাসমাবেশগুলোতে চট্টগ্রাম বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনগুলোর হাজার হাজার নেতা-কর্মী নানা বাধা ডিঙিয়ে রাজধানীতে পৌঁছাতে সক্ষম হলেও পরিকল্পিত উদ্যোগের অভাবে এবার অংশগ্রহণকারী সংখ্যা অনেক কম।
মাঠে সক্রিয় মাঝারি পর্যায়ের নেতারা বলছেন, এ পর্যন্ত প্রায় ১০ হাজার নেতা-কর্মী রাজধানী পৌঁছেছেন। শুক্রবার ও শনিবার আরো কয়েক হাজার যাবার চিন্তাভাবনা করছেন।
চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির সিনিয়র সহ-সভাপতি আবু সুফিয়ান নতুন বার্তা ডটকমকে জানান, পুলিশের গ্রেফতার-হয়রানির মুখে, পথে পথে ঝামেলার কারণে নেতা-কর্মীরা যে যেভাবে পারছেন দলের চেয়ারপারসনের ডাকে রাজধানীতে জড়ো হতে শুরু করেছেন।
তিনি জানান, গত দুই দিনে প্রায় হাজার দশেক নেতা-কর্মী কর্মসূচিতে যোগ দিতে বন্দরনগরী চট্টগ্রাম ছেড়েছেন। আরো কয়েক হাজার শুক্রবার এবং শনিবারের মধ্যে ঢাকায় পৌঁছাবেন।
কর্মসূচিতে যোগ দেয়ার ব্যাপারে প্রকাশ্যে কোনো তৎপরতা না থাকার বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে তিনি জানান, শীর্ষ পর্যায়ের বেশ কয়েকজন নেতা কারাগারে। বাকিরা মামলায় গ্রেফতার এড়াতে প্রকাশ্যে আসতে পারছেন না বিধায় কৌশলে নেতা-কর্মীদের ঢাকা নিয়ে যাবার আয়োজন করা হচ্ছে।
বিগত মাস খানেক ধরে চট্টগ্রাম বিএনপির প্রভাবশালী দুই নেতা-সাবেক প্রতিমন্ত্রী মীর মোহাম্মদ নাছির উদ্দিন ও সাবেক রাষ্ট্রদূত গোলাম আকবর খন্দকার, যুবদলের আবুল হাশেম বক্করসহ অনেক নেতা-কর্মী জেলে আটক অবস্থায় আছেন। মামলায় গ্রেফতারী পরোয়ানা জারি হওয়ায় গত একমাস ধরে নগর বিএনপির সভাপতি ও দলের চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী ও মহানগর সাধারন সম্পাদক ডা. শাহাদাত হোসেন, সহ-সভাপতি শামসুল আলম, বিভাগীয় শ্রমিক দলের এ এম নাজিম উদ্দিন, আনোয়ার হোসেনসহ দ্বিতীয় সারির প্রায় সব নেতাই আত্মগোপনে চলে যান। আমীর খসরু, ডা. শাহাদাত, মীর নাছির, গোলাম আকবর খন্দকারের অনুপস্থিতিতে গত একমাস ধরে চট্টগ্রাম বিএনপির অপর প্রভাবশালী নেতা ও কেন্দ্রীয় ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল্লাহ আল নোমান চট্টগ্রাম অবস্থান করে সীমিত পরিসরে সভা-সমাবেশ চালিয়ে গেলেও তিন আগে তিনিও ঢাকা চলে যাবার কারনে চট্টগ্রাম বিএনপি এখন অনেকটা নেতৃত্বশূন্য।
নতুন বার্তা ডটকমের সঙ্গে আলাপকালে নগর বিএনপির নাম প্রকাশ অনিচ্ছুক এক নেতা অনেকটা ক্ষোভের সাথে বললেন, “কিছু নন-কমিটেড, ব্যক্তিকেন্দ্রিক নেতার কারণে চট্টগ্রাম বিএনপি আজ অভিভাবকহীন নেতৃত্বশূন্য সংগঠনে পরিণত হতে চলছে।”