একতরফা প্রহসনের নির্বাচন বর্জনের ঘোষণা দিয়ে জনগণকে ভোটকেন্দ্রে না যাওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ-এর আমির মুফতি সৈয়দ মো. রেজাউল করীম পীর সাহেব চরমোনাই। তিনি বলেছেন, বিনা ভোটে ১৫৪ জনকে এমপি ঘোষণা এবং মহাজোটভুক্ত দল ছাড়া অন্য কোনো দল অংশ না নেয়ায় ১০ জাতীয় সংসদ নির্বাচন দেশ-বিদেশে হাস্যরসের সৃষ্টি করেছে। সরকারের স্বৈরাচারী একনায়কতন্ত্রী মনোভাব জনগণকে ক্রমশ ক্ষিপ্ত করে তুলছে। জনসম্পৃক্ততাহীন প্রহসনের নির্বাচন আয়োজন করতে নির্বাচন কমিশন ৩০০ কোটি টাকা খরচ করেছে, এ টাকার মালিক দেশের জনগণকে এর হিসাব বুঝিয়ে দিতে হবে। দেশব্যাপী বিক্ষোভ সমাবেশের অংশ হিসেবে পল্টনে আহূত সমাবেশ পুলিশ করতে না দেয়া ও কেন্দ্রীয় অফিস অবরুদ্ধ করে নেতাকর্মীদের প্রবেশ করতে না দেয়ার তীব্র নিন্দাও জানান পীর সাহেব চরমোনাই।
গতকাল পল্টনস্থ কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত প্রেস ব্রিফিংয়ে আন্দোলনের আমির হযরত পীর সাহেব চরমোনাই উপরোক্ত কথা বলেন। তিনি বলেন, রাজনৈতিক অধিকার হিসেবে আমরা আজ শান্তিপূর্ণ সমাবেশ করতে চাইলেও পুলিশি বাধায় তা করা যায়নি। এমনকি কেন্দ্রীয় অফিস সকাল থেকেই অবরুদ্ধ করে রাখা হয়, কেন্দ্রীয় নেতাদেরও অফিসে ঢুকতে দেয়া হয়নি। সমাবেশে যোগদানের সময় মুক্তাঙ্গনের কাছ থেকে রানা, মাহফুজসহ ৭জন কর্মীকে গ্রেফতার করে নিয়ে যায় পুলিশ, তিনি অবিলম্বে তাদের মুক্তি দাবি করেন। তিনি সরকারের এহেন কর্মকা-কে স্বৈরাচারী হিসেবে উল্লেখ করে বলেন, পুলিশ দিয়ে জনতার মুখ বন্ধ করা যাবে না। জনরোষ থেকে বাঁচতে চাইলে অবিলম্বে নির্বাচনী তফসিল বাতিল করে সকল দলের অংশগ্রহণে সুষ্ঠু নির্বাচন দেয়ারও দাবি জানান তিনি।
পীর সাহেব চরমোনাই বলেন, সরকারের পঞ্চদশ সংশোধনীর পর থেকেই দেশে সহিংস রাজনীতি শুরু হয়েছে, তিনি অবিলম্বে আল্লাহর বিরুদ্ধে অবস্থান নেয়া থেকে দূরে থাকতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানান। সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রী তার বক্তৃতায় নৌকা মার্কাকে নূহ (আ.)-এর নৌকার সাথে তুলনা করে চরম বেয়াদবি করেছেন। নূহ (আ.)-এর নৌকায় আস্তিকদের জায়গা হয়েছিল, নাস্তিকদের নয়। তিনি জনগণকে হুঁশিয়ার করে দিয়ে বলেন, নাস্তিক্যবাদী আওয়ামী নৌকায় উঠবেন না, তাহলে ধ্বংস অনিবার্য।
এসময় আরো উপস্থিত ছিলেন, প্রেসিডিয়াম সদস্য মাওলানা সৈয়দ মোসাদ্দেক বিল্লাহ আল-মাদানী, মহাসচিব অধ্যক্ষ মাওলানা ইউনুছ আহমাদ, যুগ্ম মহাসচিব অধ্যাপক মাহবুবুর রহমান, কেন্দ্রীয় নেতা অধ্যাপক মাওলানা এটিএম হেমায়েত উদ্দিন, সাংগঠনিক সম্পাদক মাওলানা ইমতিয়াজ আলম, মাওলানা আতাউর রহমান আরেফী, মো. আবু সাঈদ সিদ্দিকী, মাওলানা এইচএম সাইফুল ইসলাম, আলহাজ শফিকুল আমিন খান, আলহাজ আব্দুল আউয়াল প্রমুখ।
প্রহসনের নির্বাচন বাতিলের দাবিতে কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে আজ বিভিন্ন জেলায় বিক্ষোভ কর্মসূচি পালিত হয়েছে। শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত পুলিশি বাধার মধ্যেও যেসব জেলায় মিছিল সমাবেশ হয়েছে সেগুলো হলো- নারায়ণগঞ্জ, নরসিংদী, মুন্সীগঞ্জ, টাঙ্গাইল, ময়মনসিংহ, কিশোরগঞ্জ, খুলনা, চট্টগ্রাম মহানগর ও উত্তর, সিলেট মহানগর, যশোর, মাগুরা, কক্সবাজার, ফেনী, নোয়াখালী, রাঙ্গামাটি, কুড়িগ্রাম, লালমনিরহাট, রংপুর, বগুড়া, দিনাজপুর, ঠাকুরগাঁও, রাজশাহী, পাবনা, সিরাজগঞ্জ, ভোলা, পটুয়াখালী, ঝালকাঠি, বরগুনা।