আ.লীগের টার্গেট দুই বছর

0
146
Print Friendly, PDF & Email

দশম জাতীয় সংসদের মেয়াদ কমপক্ষে দুই বছর বহাল রাখার পরিকল্পনা করেছে সরকারি দল। নির্বাচন একতরফা হলেও মহাজোট সরকারের কয়েকটি অসম্পূর্ণ এজেন্ডা বাস্তবায়ন করতেই নেয়া হবে এ দীর্ঘ সময়। এসব এজেন্ডার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের রায় কার্যকর ও জামায়াতের রাজনীতি নিষিদ্ধ, পদ্মা সেতুর নির্মাণকাজ পুরোদমে শুরু এবং কিছু গুরুত্বপূর্ণ প্রশাসনিক সংস্কার ও সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন।

পাশাপাশি অব্যাহত রাখা হবে রাজনৈতিক সঙ্কট নিরসনে আওয়ামী লীগ ও বিএনপির সংলাপ। এটি সফল করতে প্রয়োজনে বড় ধরনের ছাড় দেবে ক্ষমতাসীনরা। সংলাপের মাধ্যমে নির্বাচানকালীন সরকার ব্যবস্থা ও নির্বাচন কমিশনকে (ইসি) আরও শক্তিশালী করতে দুই দল সমঝোতায় পৌঁছালেই ভেঙে দেয়া হবে নতুন সংসদ। আয়োজন করা হবে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের।

আওয়ামী লীগের নীতিনির্ধারণী সূত্রে জানা গেছে উল্লিখিত সব তথ্য। আরও জানা গেছে, ৫ জানুয়ারি নির্বাচনের আগে ও পরে কঠোরহস্তে মোকাবিলা করা হবে বিরোধী দলের সহিংস আন্দোলন। সারাদেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে র্যাব, পুলিশ ও বিজিবিকে সর্বক্ষণিক সহযোগিতা করবে দলীয় নেতাকর্মী। বিশেষ করে যে কোনো মূল্যে নিশ্চিত করা হবে নিত্যপ্রয়োজনীয় ও রফতানি-আমদানি পণ্যের সরবরাহ ব্যবস্থা। নির্বাচনের পর যদি বিরোধী দলের নাশকতা ও সহিংসতা অনিয়ন্ত্রিত হয়ে পড়ে, সেক্ষেত্রে প্রয়োজনে জারি করা হতে পারে সংবিধান মোতাবেক ১২০ দিনের জরুরি অবস্থা।

এ ছাড়া আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে যতদূর সম্ভব গ্রহণযোগ্য করে তুলতে নেয়া হয়েছে নানা পদক্ষেপ ও কৌশল। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে কমপক্ষে ৫০ শতাংশ ভোটার যাতে নির্বিঘ্নে ভোট দিতে পারেন তা নিশ্চিত করা। আর জাতিসংঘসহ উন্নয়ন সহযোগী দেশগুলোর সমর্থন আদায়ে অব্যাহত রাখা হবে নানা পর্যায়ে কূটনৈতিক তত্পরতা। আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল আলম হানিফ গত মঙ্গলবার বর্তমানকে বলেন, সদ্য বিদায়ী আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন মহাজোট সরকারের বেশকিছু গুরুত্বপূর্ণ অসমাপ্ত কাজ সম্পন্ন করবে নতুন সরকার। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে যুদ্ধাপরাধীদের বিচার। দীর্ঘ সময় নিয়ে সব আইনি প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে শুরু হয়েছে এ বিচারকাজ। ইতিমধ্যে কার্যকর হয়েছে একজনের রায়।

৫ জানুয়ারি নির্বাচনের পর আওয়ামী লীগ নতুন সরকার গঠন করবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করে তিনি বলেন, যুদ্ধাপরাধী বিচারের বাকি রায়গুলো কার্যকরের ব্যবস্থা নেবে এই সরকার। পর্যায়ক্রমে সব যুদ্ধাপরাধীর বিচারের ব্যবস্থা করা হবে। এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, জনগণ যদি দাবি তোলে যুদ্ধাপরাধীদের দল জামায়াতকে নিষিদ্ধ করতে হবে, সেক্ষেত্রে জনগণের এ দাবি গুরুত্বসহকারে বিবেচনা করবে নতুন সরকার। এ ছাড়া পদ্মা সেতুর মূল কাজও পুরোদমে শুরু করা হবে বলেও জানান তিনি।

আরেক প্রশ্নের উত্তরে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বলেন, অসমাপ্ত কাজ সম্পন্ন করতে কিছু সময় তো লাগবেই। যখন বিরোধী দলের সঙ্গে সমঝোতা হবে, তখন প্রয়োজনে দশম সংসদ ভেঙে দিয়ে একাদশ সংসদ নির্বাচনের বিষয়টি নিশ্চয়ই গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করবে তার দল।

আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল মানবতাবিরোধী অপরাধে এ পর্যন্ত নয়টি মামলার রায় দিয়েছে। এর মধ্যে সাতটি মামলায় সুপ্রিমকোর্টে আপিল করা হয়েছে। এদের মধ্যে জামায়াত নেতা কাদের মোল্লার আপিল আবেদনটি নিষ্পত্তি হওয়ার পর তার ফাঁসিও কার্যকর করা হয়েছে। আপিল আবেদন করা হয়নি দুটি মামলায়। আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে রায়ের অপেক্ষায় রয়েছে মাওলানা মতিউর রহমান নিজামীর বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলা। এ ছাড়া দুটি ট্রাইব্যুনালে সাতটি মামলা বিচারাধীন রয়েছে। অন্যদিকে জামায়াতে ইসলামীর রাজনীতি নিষিদ্ধ করতে দীর্ঘদিন ধরে জোরালো দাবি জানিয়ে আসছে যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের দাবিতে প্রতিষ্ঠিত শাহবাগের গণজাগরণ মঞ্চসহ মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের বিভিন্ন সংগঠন।

আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন মহাজোট সরকারের ভাবমূর্তি যথেষ্ট ক্ষুণ্ন করেছে আলোচিত পদ্ম সেতু প্রকল্প। এ প্রকল্প বাস্তবায়নে ২০১১ সালের ২৯ এপ্রিল বিশ্বব্যাংকের সঙ্গে বাংলাদেশ সরকারের ঋণচুক্তি হয়। কিন্তু প্রকল্পে পরামর্শক নিয়োগে দুর্নীতির অভিযোগ তুলে প্রকল্প থেকে সরে দাঁড়ায় বিশ্বব্যাংক। এমনকি মন্ত্রিসভার একজন সদস্যকে করতে হয় পদত্যাগ। পরে প্রায় ২০ হাজার কোটি টাকার এই প্রকল্পের মূল সেতু ও নদী শাসনের দরপত্র আহ্বান করা হয়। দরপত্রের যাবতীয় প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে মূল কাজ শুরু করতে আগামী বছরের মাঝামাঝি হয়ে যাবে। এ ছাড়া সার্ভিস এরিয়া ও সংযোগ সড়ক নির্মাণের কাজ চলছে। সরকারের ভাবমূর্তি পুনরুদ্ধারে নিজস্ব অর্থায়নে বাস্তবায়নাধীন এ প্রকল্পের মূল কাজ নতুন সরকার অবশ্যই শুরু করবে বলে নিশ্চিত করেছেন ক্ষমতাসীন দলের এক নীতিনির্ধারক।

এই নীতিনির্ধারক আরও জানান, নতুন সরকার দায়িত্ব নেয়ার পর প্রশাসন সংস্কারসংক্রান্ত বেশকিছু অসমাপ্ত কাজ সম্পন্ন করবে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে প্রস্তাবিত পাবলিক সার্ভিস অ্যাক্ট প্রণয়ন। যেটির খসড়া চূড়ান্ত করে রেখেছে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়। এ ছাড়া কার্যকর করা হবে সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জন্য স্থায়ী পে-কমিশন। মহাজোট সরকার পে-কমিশন গঠনে প্রয়োজনীয় সুপারিশ করতে একটি কমিটি গঠন করেছে। আর সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের চাকরিতে প্রবেশ ও অবসরে যাওয়ার বয়স বাড়ানোর বিষয়টিও গুরুত্বসহকারে বিবেচনা করবে নতুন সরকার। এ মুহূর্তে সরকারি চাকরিতে প্রবেশের সর্বোচ্চ বয়স ৩০ বছর ও অবসরে যাওয়ার বয়স ৫৯ বছর।

এ ছাড়া মুক্তিযুদ্ধ পক্ষের উল্লেখযোগ্যসংখ্যক কর্মকর্তাকে প্রশাসনের বিভিন্ন স্তরে পদোন্নতি দেবে নতুন সরকার। পাশাপাশি জামায়াতপন্থী কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বিভিন্ন অজুহাতে চাকরিচ্যুত অথবা বাধ্যতামূলক অবসরে পাঠানোরও পরিকল্পনা রয়েছে। জামায়াতমুক্ত প্রশাসন গড়তেই এ উদ্যোগ নেয়া হবে বলে মন্তব্য সংশ্লিষ্ট সূত্রের।

প্রসঙ্গত, আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন মহাজোট সরকার জনপ্রশাসনের সাত ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাকে বাধ্যতামূলক অবসরে দিয়েছে। অন্যদিকে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের ৫৩ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাকে বাধ্যতামূলক অবসর দিয়েছিল বিগত বিএনপি নেতৃত্বাধীন চারদলীয় জোট সরকার।

আওয়ামী লীগের নেয়া উল্লিখিত সব পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করতে কমপক্ষে দুই বছর লেগে যাবে বলে জানিয়ে দলের এক শীর্ষ নীতিনির্ধারক বলেন, এসব কাজ বাস্তবায়নের পাশাপাশি দেশের ভিতর-বাইরে আওয়ামী লীগের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করতে নেয়া হয়েছে বিভিন্ন পদক্ষেপ। আসন্ন নির্বাচনের ব্যাপারে যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সমর্থন আদায়ে এখন থেকেই শুরু হয়েছে কূটনৈতিক তত্পরতা। এটি অব্যাহত থাকবে নির্বাচনের পরও। এজন্য পররাষ্ট্রমন্ত্রী এএইচ মাহমুদ আলী ও প্রধানমন্ত্রীর আন্তর্জাতিকবিষয়ক উপদেষ্টা গওহর রিজভীকে দেয়া হয়েছে বিশেষ দায়িত্ব। পার্শ্ববর্তী একটি দেশের সহযোগিতায় এ কূটনৈতিক তত্পরতার অগ্রগতি আশানুরূপ বলে দাবি করেছেন ওই নীতিনির্ধারক।

উল্লেখ্য, দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচন একতরফা হওয়ায় বিশ্বের বিভিন্ন দেশ ও গোষ্ঠী কোনো পর্যবেক্ষক পাঠাবে না বলে ইতিমধ্যে তারা নির্বাচন কমিশনকে জানিয়ে দিয়েছে।

গত ১৯ ডিসেম্বর আওয়ামী লীগের নির্বাচন পরিচালনা কমিটির সভায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, আগামী নির্বাচনে বিএনপির অংশ নেয়ার সুযোগ নেই। বিএনপি যদি মানুষ হত্যা বন্ধ করে ও জামায়াতের সঙ্গ ছেড়ে সমঝোতায় আসে তবে দশম সংসদ ভেঙে দিয়ে নির্বাচন দেয়া হবে। বিএনপির সঙ্গে চলমান সংলাপের প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, আলোচনা হচ্ছে, আলোচনা চলতে থাকবে, নির্বাচনের পরও আলোচনা হবে।

প্রধানমন্ত্রীর এ বক্তব্যে বহির্বিশ্বে আওয়ামী লীগের ভাবমূর্তি কিছুটা হলেও উজ্জ্বল হয়েছে। কারণ এর পরপরই বিভিন্ন উন্নয়ন সহযোগী দেশের প্রতিনিধি ক্ষমতাসীন দলের শীর্ষস্থানীয় কয়েক নেতার সঙ্গে যোগাযোগ করে প্রধানমন্ত্রীর মনোভাব জানার চেষ্টা করেছেন। নেতারা তাদের বোঝাতে সক্ষম হয়েছেন যে, এটি স্রেফ নিয়ম রক্ষার জন্য একটি নির্বাচন। পরবর্তী সময়ে সমঝোতা ও সংলাপের মাধ্যমে একাদশ সংসদ নির্বাচনের আয়োজন করা হবে। এ ছাড়া গত মঙ্গলবার এক বৈঠকে যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যসহ প্রভাবশালী দেশগুলোর ঢাকায় কর্মরত কূটনীতিকদের সরকারের পক্ষ থেকে সুস্পষ্টভাবে বলা হয়েছে, আসন্ন নির্বাচনটি একতরফা হলেও সংবিধান সমুন্নত রাখতেই এটি আয়োজন করা হচ্ছে। এর কোনো বিকল্প নেই। উল্লেখ্য, যে কোনো দেশের সংবিধানের মর্যাদা রক্ষার বিষয়টি অত্যন্ত গুরুত্বসহকারে বিবেচনা করে উন্নয়ন সহযোগী দেশগুলো।

সিটি করপোরেশন নির্বাচনগুলোয় আওয়ামী লীগের ভরাডুবিতে ক্ষমতাসীনরা টের পেয়েছিল আগের তুলনায় তাদের জনপ্রিয়তা অনেকাংশে হ্রাস পেয়েছে। কিন্তু এটি এ মুহূর্তে বিভিন্ন কারণে যথেষ্ট উন্নত হয়েছে বলে মনে করছেন সরকারি দলের শীর্ষনেতারা। বিশেষ করে দুই নেত্রীর টেলি কথোপকথনের রেকর্ড মিডিয়াতে প্রচার হওয়ায় সবার কাছে এমন ধারণা জন্মেছে যে, খালেদা জিয়া প্রধানমন্ত্রীর আমন্ত্রণ গ্রহণ করেননি। পাশাপাশি খালেদা জিয়ার ক্ষোভ এবং অনমনীয় মনোভাবের বিষয়টি জানতে পেরেছেন দল-মত-নির্বিশেষে আপামর জনগোষ্ঠী।

ক্ষমতাসীন দলের নীতিনির্ধারকদের ধারণা, যুদ্ধাপরাধী কাদের মোল্লার মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের বিষয়ে পাকিস্তানের জাতীয় পরিষদে নিন্দা প্রস্তাব গ্রহণের ঘটনা সরকারের জন্য ইতিবাচক পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। পাকিস্তানের এই নিন্দনীয় ভূমিকায় ক্ষুব্ধ হয়েছে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের শক্তি। পাশাপাশি পাকিস্তান হাইকমিশনারকে ডেকে শক্তভাবে প্রতিবাদ করেছে বর্তমান সরকারও। কিন্তু পাকিস্তানের এমন অবস্থানের বিষয়ে বিএনপি নীরব দর্শকের ভূমিকায় অবতীর্ণ হওয়ায় বিভিন্ন মহলের তীব্র সমালোচনার মুখে পড়তে হয়েছে বিরোধী দলকে। এ অবস্থায় গত মঙ্গলবার দায়সারাগোছের দুঃখ প্রকাশ করেছেন খালেদা জিয়া।

আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী কঠোর অবস্থান নেয়ায় ইতিমধ্যে বিরোধী দলের অবরোধ কর্মসূচি কার্যত ব্যর্থ হয়েছে। তেমন সাড়া দেয়নি সাধারণ মানুষ। বরং অবরোধের নামে সহিংসতা ও নাশকতায় মানুষ হত্যা ও যানবাহনে আগুন দেয়ার ঘটনায় বিএনপির জনপ্রিয়তা অনেকাংশে হ্রাস পেয়েছে বলে মনে করছেন সরকারি দলের নীতিনির্ধারকরা। নতুন সরকার ক্ষমতায় এসে বিরোধী দলের হরতাল-অবরোধে অর্থনৈতিক ক্ষতি ও আহত-নিহতের পরিসংখ্যান জনসম্মুখে তুলে ধরবে বলেও জানান তারা।

ভোটাররা যাতে নির্বিঘ্নে তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারেন তা নিশ্চিত করতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সংশ্লিষ্টদের দেয়া হয়েছে কঠোর নির্দেশ। প্রয়োজনে বাড়ি বাড়ি ঘুরে ভোটারদের ‘ম্যানেজ’ করে কেন্দ্রে উপস্থিত করাতে নেতাকর্মী ও প্রার্থীদের দেয়া হয়েছে বিশেষ নির্দেশ। ফলে ৫০ শতাংশ ভোট নিশ্চিত হবে বলে আশাবাদী সরকারি দলের নেতারা। ১৯৯৬ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারির বিএনপির একতরফা নির্বাচনের চেয়ে যাতে এবারের নির্বাচন অপেক্ষাকৃত ভালো হয়, সেই বিষয়টি মাথায় রেখে নেয়া হয়েছে যাবতীয় পদক্ষেপ। ১৫ ফেব্রুয়ারির নির্বাচনে ভোট পড়েছিল ২৬ শতাংশ।

নির্বাচনের পর সরকারবিরোধী আন্দোলন তেমন জোরালো হবে না বলে ক্ষমতাসীনদের ধারণা। যদি কোনো কারণে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায়, সেক্ষেত্রে জরুরি অবস্থা জারির চিন্তাভাবনা রয়েছে। তবে সেটির প্রয়োজন হবে না বলে আপাতত মনে করছেন সরকারি দলের নীতিনির্ধারকরা।

আওয়ামী লীগ সূত্রে আরও জানা গেছে, নতুন সরকার গঠনের পর চলমান রাজনৈতিক সঙ্কট নিরসনে সংলাপ অব্যাহত রাখা হবে। এ সংলাপের মাধ্যমেই নির্বাচনকালীন সরকার ব্যবস্থা ও নির্বাচন কমিশনকে কীভাবে শক্তিশালী করা য়ায় তা নিয়ে আলোচনা হবে। প্রয়োজনে আওয়ামী লীগ নিজেদের অবস্থান থেকে সরে এসে বড় ধরনের ছাড় দেবে। এতে দুই দলই ঐকমত্যে পৌঁছাবে বলে আওয়ামী লীগের নীতিনির্ধারকরা প্রায় নিশ্চিত। দুই দলের সমঝোতার পর দশম সংসদ ভেঙে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আয়োজন করলে ‘উইন উইন’ পরিস্থিতিতে থাকবে আওয়ামী লীগ ও বিএনপি। নিশ্চিত হবে দেশের গণতন্ত্র।

শেয়ার করুন