মালয়েশিয়ায় সম্প্রতি ইউনিভার্সিটি মালয়েশিয়া পার্লিস ইউনিম্যাপের উদ্যোগে অনুষ্ঠিত ‘ইন্টারন্যাশনাল কনফারেন্স অব বিজনেস ইনোভেশন, এন্টারপ্রেনারশিপ অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং-২০১৩’-এ অতিথিরা; (ইনসেটে) সম্মেলন প্রস্তুতি কমিটির চেয়ারম্যান ড. হাজরি দেসা
বিভিন্ন দেশের আন্তর্জাতিকমানের বিশ্ববিদ্যালয়ের সাথে যৌথ উদ্যোগে সম্মেলন, গবেষণা ও অ্যাকাডেমিক কার্যক্রম গ্রহণের মাধ্যমে বাংলাদেশের বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় এ দেশের শিক্ষার্থীদের জন্য নতুন দিগন্ত উন্মোচনের সম্ভাবনা তৈরি করেছে। এর অংশ হিসেবে সম্প্রতি ইউনিভার্সিটি মালয়েশিয়া পার্লিস ইউনি ম্যাপের উদ্যোগে অনুষ্ঠিত ‘ইন্টারন্যাশনাল কনফারেন্স অব বিজনেস ইনোভেশন, এন্টারপ্রেনারশিপ অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং-২০১৩’ এ আন্তর্জাতিক অংশীদার ছিল বাংলাদেশের ইন্টারন্যাশনাল ইসলামিক ইউনিভার্সিটি, চট্টগ্রাম (আইআইইউসি)। মালয়েশিয়ার পেনাংয়ে তিন দিনব্যাপী এ সম্মেলনের আরেক ইন্টারন্যাশনাল পার্টনার ছিল থাইল্যান্ডের ওয়াইলালাক ইউনিভার্সিটি। মোট ২০টি দেশের প্রতিনিধি এই আন্তর্জাতিক সম্মেলনে যোগ দেন। ব্যবসায় উন্নয়ন, উদ্যোক্তা বিকাশ, ব্যবস্থাপনা হিসাব ও নিরীক্ষার উৎকর্ষ সাধন, লাগসই প্রযুক্তি ও প্রকৌশল উদ্ভাবনসংক্রান্ত বিভিন্ন বিষয়ে দেড় শতাধিক প্রবন্ধ উপস্থাপিত হয় এ সম্মেলনে। সম্মেলনে মূলপ্রবন্ধ উপস্থাপকদের মধ্যে ছিলেন আইআইইউসির ভাইস চ্যান্সেলর অধ্যাপক ড. এ কে এম আজহারুল ইসলাম, মালয়েশিয়ার ইন্ডাস্ট্রি ডেভেলপমেন্ট বোর্ডের প্রেসিডেন্ট দাতুক ইর হামজা হাসান ও মাইডিন হোল্ডিংসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক দাতুক উইরা ড. হাজী আমির আলি। ইউনিম্যাপের ড. হাজরি ডেসা, ড. সুবেরি আবদুল হালিম, ড. আমিনুল ইসলামসহ শিক্ষক গবেষকরা বিভিন্ন বিষয়ের ওপর তাদের গবেষণা নিবন্ধ উপস্থাপন করেন। আইআইইউসির প্রোভাইস চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. আবু বকর রফিক আহমদসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্যান্য শিক্ষক, সাউদার্ন ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশের ভিসি প্রফেসর মোহাম্মদ আলী, ইস্টার্ন ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশের সাবেক ভিসি প্রফেসর ড. নূরুল ইসলাম, প্রফেসর ড. কাজী আহমদ নবী, প্রফেসর ড. হারুনুর রশীদ, প্রফেসর ড. মোহাম্মদ সোলায়মান গুরুত্বপূর্ণ প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন। আইআইইউসির ভিসির নেতৃত্বে বাংলাদেশের ১৩টি শীর্ষস্থানীয় সরকারি-বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্ধশতাধিক শিক্ষাবিদ ও গবেষক এই সম্মেলনে অংশগ্রহণ করেন। আইআইইউসির বিজনেস স্টাডিজ ফ্যাকাল্টির ডিন প্রফেসর ড. ফরিদ সোবহানি বাংলাদেশ থেকে প্রধান সমন্বয়কের ভূমিকা পালন করেন। আন্তর্জাতিক সমন্বয়কের দায়িত্বে ছিলেন ইউনিম্যাপের অ্যাসোসিয়েট প্রফেসর ড. আমিনুল ইসলাম। সম্মেলন পরিচালনা কমিটির চেয়ারম্যান ছিলেন বিজনেস ইনোভেশন ও টেকনোপ্রেনারশিপ স্কুলের ডিন প্রফেসর ড. হাজরি দেসা।
তিন দিনের এই সম্মেলনে বাংলাদেশ ‘বেস্ট ইনোভেটিভ পেপার অ্যাওয়ার্ড’ লাভ করে। যৌথভাবে এই পুরস্কারটি অর্জন করেন সাউদার্ন ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশের ভিসি প্রফেসর মোহাম্মদ আলী, ইস্টার্ন ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশের সাবেক ভিসি প্রফেসর ড. নূরুল ইসলাম এবং আইআইইউসি ঢাকা ক্যাম্পাসের এমবিএ কো-অর্ডিনেটর শফিকুর রহমান।
সম্মেলনে ব্যবসায়-বাণিজ্য, শিল্পব্যবস্থাপনা, হিসাব ও নিরীক্ষা ক্ষেত্রে নতুন নতুন উদ্ভাবনের বিভিন্ন দিক নিয়ে গবেষণা প্রবন্ধ উপস্থাপিত হয়। এ ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট দেশের ব্যবসায়-বাণিজ্য ও শিল্পকারখানার চাহিদাকে সামনে রেখে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর অ্যাকাডেমিক বিন্যাস ও গবেষণা পরিচালনা এবং গবেষণালব্ধ প্রাপ্তিকে বাস্তবে প্রয়োগের ওপর বিশেষ গুরুত্ব দেয়া হয়। অর্থনীতির টেকসই উন্নয়নের জন্য পরিবেশের সুরক্ষা এবং ভবিষ্যৎ বংশধরদের চাহিদাগত নিরাপত্তা নিশ্চিত করে সম্পদ আহরণ ও তা ব্যবহারের মাধ্যমে জনগণের উন্নত জীবনমান নিশ্চিত করা প্রয়োজন বলে মত প্রকাশ করা হয়। এ প্রসঙ্গে ইউনিভার্সিটি মালয়েশিয়া পারলিসের ভাইস চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. কামরুদ্দিন হোসেইন বলেন, একুশ শতকে ব্যবসায়-বাণিজ্যে সফল হতে হলে নতুন উদ্ভাবন ও সৃজনশীল ধারণার বাস্তবে প্রয়োগ এবং ব্যবসায় পরিচালনার নতুন নতুন উপায় খুঁজে বের করতে হবে।
আইআইইউসির সাথে ইউনিম্যাপ ছাড়াও যুক্তরাষ্ট্রের পোর্টল্যান্ড স্টেট ইউনিভার্সিটি, যুক্তরাজ্যের ইউনিভার্সিটি অব বেডফোর্ডশায়ার, কানাডার ইউনিভার্সিটি অব কেপ ব্রেটন, মালয়েশিয়ার ইন্টারন্যাশনাল ইসলামিক ইউনিভার্সিটি (আইআইইউএম) ও মাল্টিমিডিয়া ইউনিভার্সিটি (এমএমইউ), সৌদি আরবের আল ইমাম ইউনিভার্সিটি অব রিয়াদ, থাইল্যান্ডের এশিয়ান ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজি (এআইটি), ইন্দোনেশিয়ার ট্রাইশক্তি ইউনিভার্সিটি ও নেপালের ত্রিভুবন ইউনিভার্সিটির সাথে ক্রেডিট স্থানান্তর সুবিধা, শিক্ষক ও ছাত্র বিনিময়সহ বিভিন্ন অ্যাকাডেমিক সহযোগিতার চুক্তি ও সমঝোতা স্মারক রয়েছে।