নওগাঁর সাপাহারে জাতীয় পরিচয়পত্র ও ভোটার আইডি কার্ড তৈরির জন্য তোলা ছবিতে মাথার চুল বেরিয়ে থাকায় এক গৃহবধুর মাথা ন্যাড়া করে দিয়েছে স্বামী। তার উপর অমানুষিক নির্যাতন চালানো হয়েছে। ঘটনাটি ঘটেছে উপজেলা সদরের গোডাউন পাড়ায়।
এ ঘটনায় নির্যাতনের শিকার গৃহবধু রেশমা খাতুন (২২) বাদী হয়ে সাপাহার থানায় একটি মামলা দায়ের করেছেন। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা সাপাহার থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) শাহীন রেজা জানান, সাপাহার উপজেলা সদরের গোডাউনপাড়া গ্রামের আনারুল ইসলামের (২৫) সঙ্গে প্রায় ৬ বছর আগে একই উপজেলার ইসলামপুর গ্রামের রেশমা খাতুন (২২) এর বিয়ে হয়। বর্তমানে তাদের ঘরে দুটি সন্তান রয়েছে। কিছুদিন পূর্বে নতুন ভোটার হওয়ার জন্য সরকারীভাবে জাতীয় পরিচয়পত্র তৈরীর ঘোষণা হয়। রেশমা খাতুন ভোটার হওয়ার জন্য ইউপি কার্যালয়ে এসে নাম নিবন্ধন করে ছবি তোলেন। ওই ছবিতে অসাবধানতা বশতঃ মাথায় পরা স্কার্পের এক পাশ দিয়ে মাথার সামনের দিকের কিছু চুল বেরিয়ে আসে। ছবি তোলার সময় মাথার চুল বেরিয়ে আসার অপরাধে অমানষিক নির্যাতন শুরু হয় রেশমার উপর। নির্যাতনের এক পর্যায়ে স্বামী আনারুল ইসলাম ১০ দিন আগে তার মাথা ন্যাড়া করে দেয়। বিষয়টি জানাজানির ভয়ে গৃহবধু রেশমাকে ঘরে আটকে রাখা হয়। তিন দিন আগে সুযোগ বুঝে অসহায় রেশমা কৌশলে সেখান থেকে পালিয়ে বাপের বাড়িতে আশ্রয় নেন। স্থানীয় ভাবে বিষয়টি আপোষ মিমাংশার চেষ্টার জন্য সদর ইউনিয়ন পরিষদে কয়েক দফা সালিশ হয়। এতে সমাধান না হওয়ায় বুধবার রাতে গৃহবধু রেশমা বাদী হয়ে স্বামী আনারুল ইসলাম, শ্বশুর আসাদুল ইসলামসহ ৪ জনকে আসামী করে সাপাহার থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে একটি মামলা দায়ের করেন। তদন্তকারী কর্মকর্তা শাহীন রেজা আরো জানান, আসামীদের গ্রেপ্তারের জোর তৎপরতা চলছে। মামলা দায়েরের পর থেকে রেশমার শ্বশুর বাড়ির লোকেরা পালিয়ে থাকায় তাদের সঙ্গে সরাসরি কথা বলা সম্ভব হয়নি। তবে মোবাইলে রেশমার শ্বশুরের সাথে সাংবাদিকরা কথা বলতে চাইলে তিনি কোন মন্তব্য করতে রাজি হননি।