নির্দলীয় সরকার প্রতিষ্ঠা ও নির্বাচন স্থগিতের দাবিতে সোমবার পুনরায় ৭২ ঘণ্টা অবরোধ কর্মসূচি ঘোষণার সংবাদ সম্মেলনে এই অভিযোগ করেন তিনি।
নজরুল বলেন, “পত্রিকায় পড়েছি, মন্ত্রিসভার কমিটির সভায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে সহযোগিতার জন্য আওয়ামী লীগ ও তার অঙ্গ সংগঠন সমূহ এবং স্থানীয় সরকার প্রতিনিধিদের নির্দেশ দেয়া হয়েছে। এতদিন এটা অঘোষিতভাবে ছিল। এবার তারা ঘোষণা দিয়েই দলীয় বাহিনীকে বিরোধী দলের আন্দোলন দমনে মাঠে নামাচ্ছে।
“আমরা মনে করি, এতে দেশে নিশ্চিতভাবেই সহিংসতা এবং জনগণের জানমালের ক্ষতি বাড়বে। দেশকে গৃহযুদ্ধের মতো পরিস্থিতির দিকে ঠেলে দেয়ার ওই সিদ্ধান্ত শুধু হঠকারীই নয়, বেআইনি ও আত্মঘাতী।”
বিরোধী দলের আন্দোলন এবং জামায়াত-শিবিরের নাশকতা ঠেকাতে আওয়ামী লীগ মাঠে থাকার ঘোষণা দিয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও বিরোধী দলকে হুঁশিয়ার করেছেন, আন্দোলনের নামে হত্যাকাণ্ড সহ্য করবেন না।
আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে সরকার বিরোধী দল নিধনে ব্যবহার করছে বলেও অভিযোগ করেন নজরুল।
“আজও সাতক্ষীরা, লক্ষ্মীপুর ও নীলফামারীতে সরকারের বিভিন্ন বাহিনী দিয়ে সন্ত্রাসী ধরার নামে নির্বিচারে বিরোধী দলীয় নেতা-কর্মীদের হত্যা করা হয়েছে। মহান বিজয় দিবসেও সরকারি বাহিনী কর্তৃক সারাদেশে হত্যা-নির্যাতন-গ্রেপ্তার ও নাকশতামূলক এহেন কর্মকাণ্ডের আমরা নিন্দা ও ধিক্কার জানাই।”
একই সঙ্গে লক্ষ্মীপুর, সাতক্ষীরাসহ বিভিন্ন স্থান থেকে বিরোধী দলের নেতা-কর্মীদের গুম করা হচ্ছে বলেও অভিযোগ করেন বিএনপি নেতা।
‘ভোটারবিহীন নির্বাচন দেখেছি, প্রার্থীবিহীন নির্বাচন দেখিনি’
বিরোধী দলের অনুপস্থিতিতে অর্ধেকের বেশি আসনের প্রার্থীদের ব্নিা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হওয়ায় এই নির্বাচনকে ‘নাটক’ আখ্যায়িত করেন নজরুল ইসলাম খান।
“এতদিন ভোটারবিহীন নির্বাচনের কথা আমরা শুনেছি। এবার দেশবাসীর সঙ্গে অবাক বিস্ময়ে গোটা বিশ্ব প্রত্যক্ষ করল প্রার্থীবিহীন এক নির্বাচন। এর মাধ্যমে দেশের অর্ধেকের বেশি ভোটারকে ভোটদানের অধিকার থেকে বঞ্চিত করা হয়েছে।”
নির্বাচন স্থগিতের দাবি জানিয়ে তিনি বলেন, “এখনো সময় আছে, একতরফা নির্বাচনে কানামাছি খেলা বন্ধ করুন। প্রহসন নাটকের অবসান ঘটান।জাতিকে চরম নৈরাজ্যের কবল থেকে মুক্তি দিন। নইলে এদেশের গণতন্ত্রকামী মানুষ আপনাদের নিরাপদ প্রস্থানের পথটুকুও বন্ধ করে দিতে বাধ্য হবে।”
সংলাপের বিষয়ে নজরুল ইসলাম খান বলেন, “নির্বাচনকালীন সরকারের ধরন-কাঠামো ও সব দলের অংশগ্রহণে একটি অবাধ, সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠানের দাবিতে আমাদের আন্দোলন চলছে। পাশাপাশি জাতিসংঘের মধ্যস্থতায় আলোচনাও শুরু হয়েছে। কিন্তু সরকার তার কথিত নির্বাচনী নাটক বন্ধ করেনি।”
গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে এই সংবাদ সম্মেলনে নজরুলের সঙ্গে ছিলেন দলের আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক আসাদুজ্জামান রিপন, সহ দপ্তর সম্পাদক আবদুল লতিফ জনি, শামীমুর রহমান শামীম, আসাদুল করীম শাহিন প্রমুখ।