বিক্ষোভকারীদের উপর প্রাণঘাতি হামলা ও অতিরিক্ত বল প্রয়োগ বন্ধ করতে নিরাপত্তা বাহিনীকে প্রকাশ্যে আদেশ দেয়ার জন্য বাংলাদেশ সরকারের প্রতি আহবান জানিয়েছে হিউম্যান রাইটস ওয়াচ।
নিউইয়র্ক ভিত্তিক মানবাধিকার সংস্থা হিউম্যান রাইটস ওয়াচ মঙ্গলবার তাদের ওয়েব সাইটে প্রকাশিত এক বিবৃতিতে এ আহবান জানায়।
বিবৃতিতে দাবী করা হয়, গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদনে জানা যায়, সাম্প্রতিক সময়ের সংঘর্ষে নিরাপত্তা বাহিনী ২০ জন বিরোধী দলের নেতাকে হত্যা করেছে। গ্রেফতার করেছে আরো অনেক নেতা-কর্মীকে।
এ সব হত্যাকাণ্ড ও সহিংসতায় কারা জড়িত তা খুঁজে বের করতে বাংলাদেশ সরকারকে একটি স্বাধীন কমিশন গঠন করে দ্রুত ও নিরপেক্ষ তদন্ত করার আহবান জানিয়েছে সংস্থাটি।
পাশাপাশি বিএনপি জামায়াতসহ সকল রাজনৈতিক দলের সমর্থকদের সহিংসতা থেকে বিরত থাকার আহবান জানানো হয়।
বিবৃতিতে বলা হয়, আসন্ন নির্বাচন ও যুদ্ধাপরাধের বিচারকে কেন্দ্র করে গত দুই মাসে রাজনৈতিক সংকট তীব্র হয়েছে। শতাধিক মানুষকে হত্যা করা হয়েছে। আহত হয়েছে শত শত মানুষ।
বিরোধীদলের উপর সাড়াশি অভিযান আরো বাড়িয়েছে নিরাপত্তা বাহিনী। ফলে জামায়াত কর্মীরাও পুলিশ ক্যাম্প ও সরকারী দলের অফিসে হামলা করেছে।
হিউম্যান রাইট ওয়াচের এশিয়া অঞ্চলের পরিচালক ব্রাড এডাম বলেছেন, নিরাপত্তা বাহিনী ও বিরোধী দলের কর্মীদের পাল্টা পাল্টি হামলার ঘটনায় হত্যা, ধ্বংস ও আতংক ছড়িয়ে পড়েছে।
জামায়াতে উপর র্যা বের নৃশংসতা
বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়, গত ১৪ ডিসেম্বর র্যা ব সদস্যরা লক্ষ্মীপুর জামায়াতের নায়েবে আমীর ৬৬ বছর বয়স্ক ডা: ফায়েজ আহমেদের বাসায় প্রবেশ করে। তার স্ত্রী মারজিয়া বেগম জানিয়েছেন, র্যা ব সদস্যরা তাকে বাসার ছাদে নিয়ে যায়। তারপর তাকে গুলি করে ছাদ থেকে ফেলে হত্যা করে।
তবে র্যা বের মুখপাত্র গুলির ঘটনা অস্বীকার করেছে। অতীতেও অনেককে হত্যা করে ক্রসফায়ার বলে অস্বীকার করার অভিযোগ আছে র্যা বের বিরুদ্ধে।
বিবৃতিতে জানানো হয়, জামায়াত নেতা কাদের মোল্লার ফাসিঁ কার্যকর করার পর বাংলাদেশের রাজনৈতিক সংকট আরো তীব্র হয়েছে।
বিরোধীদলের উপর পুলিশের গুলি
জামায়াত কর্মীরা অভিযোগ করেছে, তাদের অনেক সদস্যকে অন্যায়ভাবে গ্রেফতার করে পুলিশ হেফাজতে নির্যাতন করা হয়েছে।
নোয়াখালীর এক জামায়াত কর্মী বলেছেন, গত ২৬ নভেম্বর পুলিশ তাকে আটক করে এবং গ্রেফতারের আগেই তার পায়ে গুলি করে পুলিশ।
স্বাধীন তদন্ত কমিশন করুন
সংস্থাটি বলেছে, বাংলাদেশ সরকারের উচিত সহিংসতা ও নিরাপত্তা বাহিনীর অত্যাচারের অভিযোগগুলো স্বাধীন কমিশনের মাধ্যমে তদন্ত করা। তার পর দোষীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া উচিত।
তবে হিউম্যান রাইট ওয়াচ অভিযোগ করেছে, এর আগে নিরাপত্তা বাহিনী কর্তৃক হত্যাকাণ্ডের তথ্য প্রমান হস্তান্তর করা হলেও সরকার কোন ব্যবস্থাই নেয়নি।
তারা বলেছে, অস্ত্র ব্যবহারে জাতিসংঘের ঘোষিত নীতি মালা অনুসরন করার জন্য সরকারের উচিত নিরাপত্তা বাহিনীকে প্রকাশ্যে আদেশ দেয়া।