ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের রাষ্ট্রদূতরা ১৬ ডিসেম্বর জাতীয় স্মৃতিসৌধে না গিয়ে পুরো বাংলাদেশকে অপমান করেছেন। তাদের নৈতিকভাবে বাংলাদেশে কাজ করার অধিকার আছে বলে মনে করি না। তাদের উচিত নিজ দায়িত্বে এ অপকর্মের দায় নিয়ে এদেশের কর্মস্থল ত্যাগ করা।
রাষ্ট্রদূতরা কিভাবে কাজ করেন, তাদের শিষ্ঠাচার কোন নীতিমালা অনুযায়ী মেনে চলা হয়- জানি না। সেটা একজন নাগরিকের জানার প্রয়োজনও নেই। কিন্তু রাষ্ট্রদূতের অবশ্যই জানা প্রয়োজন। আমাদের দেশে নিযুক্ত ইইউ রাষ্ট্রদূতরা সেটা নিশ্চয়ই জানেন। তাহলে তারা কি বাংলাদেশের ইতিহাস ও ঐতিহ্যের প্রতি উদাসীন!
বাংলাদেশের বিজয় বাঙালির সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ দিন। ১৯৮০ সালে ২৬ মার্চকে স্বাধীনতা দিবস ঘোষণা করা হলেও তার আগে থেকেই স্বাধীনতা ঘোষণার দিনটিও আমরা সর্বোচ্চ শ্রদ্ধার সঙ্গে পালন করি। আর ১৬ ডিসেম্বর আমাদের বিজয়ের দিন। দল-মত-বর্ণ নির্বিশেষে এই দুই দিন বাংলাদেশের। কিন্তু বিজয় দিবসে ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের রাষ্ট্রদূতরা বাংলাদেশকে এবং বাংলাদেশের স্বাধীনতাকে অপমান করেছেন। তারা সবচেয়ে শ্রদ্ধার স্থানটিতে আঘাত করেছেন। তারা যে রাষ্ট্রে কাজ করছেন সেই রাষ্ট্রে স্বাধীনতা দিবসের কর্মসূচিতে যোগদান না করে রুটিন বৈঠককে বেশি গুরুত্ব দিতে পারেন না।
বাংলাদেশ সার্বভৌমত্ব হারায়নি বা অন্য কোন রাষ্ট্র এদেশ দখল করেনি যে তারা বাংলাদেশের জাতীয় শহীদদের শ্রদ্ধা জানানো প্রয়োজন মনে করছেন না। নাকি তারা সেটা মনে করছেন? তারা পাকিস্তানি রাষ্ট্রদূত ইরফান রাজার পরিণতির কথা জানেন না? বাংলাদেশের স্বাধীনতা নিয়ে বেফাঁস মন্তব্য করায় ইরফান রাজাকে বাংলাদেশ থেকে বের করা দেয়া হয়েছিল।
আমরা যতই পাগলামি করি, স্বাধীনতা নিয়ে কোন আপোস করি না। রাষ্ট্রের নাগরিক হিসেবে অপমানিতবোধ করছি। আমরা ক্ষুব্ধ। তাদের অবশ্যই ক্ষমা চাইতে হবে। এদের বহিষ্কার করা উচিৎ বলেও মনে করি।
বাংলাদেশ সরকারের উচিৎ এসব কূটনীতিককে ক্ষমা চাইতে বাধ্য করা। প্রতিটি রাজনৈতিক দলের উচিত বিবৃতি দিয়ে এর প্রতিবাদ করা। তাদেরকে জানিয়ে দিতে হবে- রাষ্ট্রের, স্বাধীনতার ব্যাপারে আমরা কঠোর। আমরা আপোসহীন। তাই এমন আচরণের প্রতিবাদ করে জানিয়ে দিন, সমর্থন বা সাহায্য না দিন, আমরা স্বাধীনতার সম্মান সমুন্নত রাখতে বিদেশিদের ভয়ে ভীত থাকব না।