নির্দলীয় নিরপেক্ষ তত্ত্বাধায়ক সরকার প্রতিষ্ঠার দাবিতে আন্দোলনের ক্ষেত্রে এখনো পর্যন্ত কোনো সমঝোতায় পৌছাতে না পারায় আন্দোলন ব্যতীত সময় নষ্ট করতে রাজী নয় বিএনপি চেয়ারপারসন ও ১৮ দলীয় জোটে নেত্রী খালেদা জিয়া।
১৮ দলের হরতাল- অবরোধ কর্মসূচি চলাকালে ২৫ নভেম্বর থেকে এ পর্যন্ত যে সকল দলীয় নেতা কর্মী নিহত হয়েছে তাদের আত্মার মাগফেরাত কামনা করে শুক্রবার সারা দেশে জুম্মাবাদ গায়েবানা জানাযা অনুষ্ঠিত হবে।
সূত্রে জানা যায়, উক্ত গায়েবানা জানাযা থেকে আগামীকাল শনিবার সারাদেশে বিক্ষোভ কর্মসূচির পাশাপাশি রোববার থেকে টানা সপ্তাহব্যাপী আবারো অবরোধ কর্মসূচি ঘোষণা করা হতে পারে।
এমনকি বেশ কয়েকদিন পূর্বে নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে আগামী জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠানের বিষয়ে কোন রকম আপোষ করার সুযোগ নেই বলে নিজের দৃঢ় অবস্থানের কথা আবারও পুর্নব্যক্ত করেছেন বিরোধী দলীয় নেতা ও বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। তিনি বলেছেন, এখানে আপোষ করা মানে অন্যায়কে প্রশয় দেয়া, অন্যায়কে মেনে নেয়া।
বিএনপি’র একটি দায়িত্বশীল সূত্র জানায়, আগামী সপ্তাহে জাতিসংঘের সহকারী মহাসচিব অস্কার ফার্নান্দেজ তারানকোর সফরে অবরোধ বিষয়ে চিন্তা ভাবনা কিছুটা পরিবর্তন হলেও ১৮ দলের আজকের গায়েবানা জানাজায় বড় ধরনের সংঘাত হলে শনিবার থেকেই অবরোধ শুরু হবে।
বিএনপি স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস বলেন, দেশের পরিস্থিতি বিবেচনা করে করে আমি মনে করি কর্মসূচি যাই দেয়া হউক না কেন ? দেশের মানুষ অংশ গ্রহণ করবে এবং বর্তমান সরকারকে বাধ্য করবে নির্দলীয় সরকার ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে আগামীতে একটি অবাধ সুষ্ট নির্বাচনের পরিবেশ সৃষ্টি করতে।
বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব এ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী আহমেদ বৃহস্পতিবার বিএনপি নেতৃত্বাধীন ১৮ দলীয় জোটের ডাকা টানা ৭১ ঘন্টার অবরোধ চলাকালীন তৃতীয় দিন সকালে বলেন ‘প্রধানমন্ত্রী পদত্যাগ করে সব দলকে নির্বাচনে অংশ নেয়ার সুযোগ করে দিলে আন্দোলন কর্মসূচি প্রত্যাহার করা হবে। অন্যথায় আন্দোলন কর্মসূচি অব্যাহত থাকবে।’
দলীয় নেতাকর্মীরা এখন চূড়ান্ত আন্দোলনের জন্য প্রস্তত উল্লেখ্য করে বিএনপি নীতি নির্ধারণী ফোরামের এক নেতা দাবি করেন, যে তারা তাদের পরিকল্পনা অনুসারে কিছুটা হলেও সারাদেশ থেকে ঢাকা বিচ্ছিন্ন করতে সক্ষম হয়েছেন। তাই ছুটির দিনেও কর্মসূচি রাখতে চাচ্ছে বিএনপি।
বিএনপি সূত্র জানায়, সমঝোতা ছাড়া নির্বাচন কমিশন ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী নির্বাচন অনুষ্ঠিত হলে তা ঠেকাবে বিএনপি নেতৃত্বাধীন ১৮ দলীয় জোট। জোটের নেতারা বলছেন, পরিকল্পনা এখন একটাই, তা হচ্ছে আগামী বছরের ৫ জানুয়ারি অনুষ্ঠেয় দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচন প্রতিরোধ করা। সে অনুযায়ী পর্যায়ক্রমে আন্দোলন কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে।
সূত্র জানায়, যেহেতু নির্বাচন অনুষ্ঠান হতে এখনও বেশ কিছুদিন সময় আছে তাই আগামী আন্দোলন কর্মসূচিও ঢাকার বাইরের মহানগর জেলাসহ তৃণমূল পর্যায়কে গুরুত্ব দেয়া হবে। আর রাজধানী ঢাকায় যেহেতু বিএনপি এখনও আশানুরূপ ফল পায়নি, তাই ধীরে ধীরে ঢাকার নেতাকর্মীদের চাঙ্গা করার কাজ করছেন দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতারা। ঢাকায় জ্যেষ্ঠ নেতারা তখনই মাঠে নামবেন, যখন দু-একদিনের মধ্যেই সরকারের পতন হবে বলে মনে করবেন তারা।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক দলের দায়িত্বশীল নেতা বলেন, মাঠ পর্যায় নেতা-কর্মীদের মনোবল চাঙা রাখতে এখনেই লাগাতার কঠোর কর্মসূচিতে যাওয়া দরকার। তা না হলে কর্মীরা মনোবল হারাতে পারেন। আর এ সুযোগে সরকার বিএনপিকে গুরুত্ব না দিয়ে একদলীয় নির্বাচন করার পথে যেতে চাইবে।