ফেসবুকসহ অন্যান্য সামাজিক মাধ্যমগুলো ব্যবহার করে পুলিশ সদস্যসহ তাদের পরিবারবর্গের ওপর হামলার উসকানি ছড়াচ্ছে চরমপন্থী গ্রুপগুলো। এই পেইজগুলো থেকে একই সাথে জামায়াতে ইসলাম ও ইসলামী ছাত্র শিবিরের পক্ষে নানান প্রচার-প্রচারণাও চালান হচ্ছে।
অনুসন্ধানে দেখা যায়, এই পেইজগুলো থেকে বোমা বানানোর কৌশল থেকে শুরু করে বোমা নিক্ষেপ, পুলিশের সাঁজোয়া যানে আগুন লাগানর প্রশিক্ষণ কাজে ব্যবহারযোগ্য বিভিন্ন ভিডিও প্রচার করা হচ্ছে। ভিডিওগুলো মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশে পুলিশের ওপর হামলা চালানর সময় তৈরী করা।
মূলত পুলিশ ও বিজিবির সদস্যদের নাম, ঠিকানা, পরিচয় উল্লেখ করে তাদের ওপর হামলা এবং তাদেরকে হেনস্তা করার আহব্বান জানান হচ্ছে এই সব পেইজে। এমনকি ঢাকায় কর্মরত একটি জেলার পুলিশ সদস্যদের বিশেষভাবে আক্রমণ করতে পেইজগুলোর অনুসারীদের উস্কে দেওয়া হচ্ছে। সাথে সাথে পুলিশের ওপর প্রতিটি সফল হামলার ছবি প্রচার করে একই ধরনের হামলা চালাতে বলা হচ্ছে অনুসারীদের।
পুলিশের ওপর সহিংসতায় নামার আগে যে রণধ্বনী ব্যবহার করতে তাগাদা দেওয়া হচ্ছে তা হলো- ‘নারায়ে তাকবির বলে আগে বাড়ো’। উল্লেখ্য, এই সাইটগুলোতে সাধারণভাবে পুলিশকে ‘পুলিশ লীগ’ হিসেবে উল্লেখ করা হয়। সম্প্রতি কুমিল্লায় সহিংসতায় নিহত বিজিবি সদস্যের লাশের ছবি প্রচার করে বলা হয়েছে, ‘আজ কেন বিডিআর ভাইয়ের এই পরণতি? কেন শহীদ না হয়ে হলো নিহত? জনতার ন্যায্য দাবীর বিপরীতে অবৈধ সরকারের পক্ষে দাঁড়ালে এমনই হবে পরিণতি। ভুলে যাবেন না। অবৈধ সরকারের সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করবেন না। জনতার পক্ষে দাঁড়ান।‘
পুলিশের সাঁজোয়া যানে হামলার ভিডিওগুলো প্রচারে সময় বলা হচ্ছে ‘পুলিশকে কিভাবে কোণঠাশা করবেন শিখে নিন, প্রশিক্ষণ মূলক ভিডিও!’
সাম্প্রতিক সময়ে চট্টগ্রামের ফটিকছড়িতে পুলিশের ওপর হামলার কথাও বারবার করে প্রচার করছে ওই চরমপন্থী গ্রুপগুলো। বলা হচ্ছে, ‘আজকের পর আন্দোলনের সময় পুলিশ যদি আপনাদের ওপর গুলি ছুঁড়ে তবে প্রত্যেকটি থানাকে ফটিকছড়ি বানিয়ে ছেড়ে দিন। কারণ অবৈধ সরকারের যে কোন র্নিদেশ অবৈধ। পুলিশলীগের বুলেট আর বুকে নেবেন না। পুলিশলীগকে প্রতিহত, প্রতিরোধ করুন। সবাই ঝাঁড়ু নিয়ে, লাঠি নিয়ে রাজপথে নেমে আসুন’।
নারায়ে তাকবির শ্লোগান ছাড়াও পুলিশকে আক্রমণ করতে ছড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে ধর্মীয় বিদ্বেষ। কোন পুলিশ, কোন ধর্মের অনুসারী তাও চিহ্নিত করে বিদ্বেষ ছড়ানর চেষ্টা করছে গ্রুপগুলো। পুলিশকে উদ্দেশ্য করে প্রচার করা হচ্ছে, ‘এই যুদ্ধ শুধু ১৮ দলের নয়! এই যুদ্ধ সাধারণ জনগণের যুদ্ধ! এই যুদ্ধ বাংলাদেশ বাঁচানোর যুদ্ধ! এই যুদ্ধ শুধু আওয়ামী হায়না ভারতীয় হিন্দুস্থানের বিরুদ্ধে!’