নির্বাচনকালীন নির্দলীয় সরকারের দাবিতে আগামী সোমবার ভোর ৬টা থেকে শুক্রবার ভোর ৬টা পর্যন্ত দেশব্যাপী বিরতিহীন ৯৬ ঘণ্টার হরতাল কর্মসূচি পালন করতে পারে বিএনপির নেতৃত্বাধীন ১৮-দলীয় জোট। এর আগে আগামী রোববার নির্বাচন কমিশন (ইসি) সচিবালয় ঘেরাও কর্মসূচি পালন করারও পরিকল্পনা রয়েছে বিরোধী জোটের। একই দিনে সারা দেশের জেলা ও উপজেলায় নির্বাচন কর্মকর্তার ঘোষিত নির্বাচনি তফসিল স্থগিতের দাবিতে ঢাকায় ইসি সচিবালয় ঘেরাও করার পাশাপাশি সারা দেশে জেলা ও উপজেলায় অবস্থিত নির্বাচন কর্মকর্তার কার্যালয়ও ঘেরাও হতে পারে। বিএনপির দায়িত্বশীল একাধিক সূত্র এ আভাস দিয়েছে। সূত্রমতে, সরকারবিরোধী আন্দোলন কর্মসূচির দিন নির্ধারণে আগে শুক্র-শনিবার ও সরকারি বন্ধের দিনগুলোয় উল্লেখযোগ্য কোনও কর্মসূচি রাখত না ১৮-দলীয় জোট। কিন্তু এখন থেকে লাগাতার আন্দোলনের পরিকল্পনায় সপ্তাহের প্রতিদিনই কর্মসূচি পালনের নীতিগত সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। পূর্বঘোষিত ও বর্ধিত কর্মসূচি অনুযায়ী আজ সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত দেশব্যাপী পালিত হবে সড়ক-নৌ-রেলপথ অবরোধ কর্মসূচি। পরদিন শুক্রবার সারা দেশে গায়েবানা জানাজা কর্মসূচিও ইতোমধ্যে ঘোষণা করা হয়েছে। এই কর্মসূচি শেষেই শনিবার দেশব্যাপী বিক্ষোভের কর্মসূচি ঘোষণা করা হতে পরে। বিক্ষোভ কর্মসূচির সমাবেশ থেকে ঘোষণা হতে পারে নির্বাচন কমিশন ঘেরাওয়ের কর্মসূচি। এসব কর্মসূচি শেষ হলে শনিবার রাতেই ঘোষণা আসতে পারে ৯৬ ঘণ্টার হরতালের।
১৮-দলীয় জোটের একাধিক সূত্র জানায়, সরকারবিরোধী আন্দোলন কর্মসূচি সফলে নতুন-নতুন কৌশলও প্রণয়ণ করা হচ্ছে। কাটছাঁট করা হচ্ছে আন্দোলনের পূর্বপরিকল্পনায়ও। সূত্রমতে, ধীরে-ধীরে ঢাকার রাজপথে আন্দোলন তীব্র করবে ১৮-দলীয় জোট। এর আগে দেশের প্রতিটি বিভাগীয় শহর ও জেলায়-জেলায় আন্দোলন কঠোর করা হবে। বিভাগীয় শহর ও জেলার আন্দোলনকালে ঢাকাকে বিচ্ছিন্ন করা হবে সারা দেশ থেকে। তারপরই ঢাকায় শুরু হবে সর্বাত্মক আন্দোলন।
সূত্র আরও জানায়, ঢাকায় আন্দোলনকালে রাজপথে নামবেন বিএনপি চেয়ারপারসন ও ১৮-দলীয় জোট নেত্রী বেগম খালেদা জিয়া। নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে এজন্য আন্দোলনমঞ্চ তৈরির পরিকল্পনাও রয়েছে ১৮-দলীয় জোটের।
১৮ দলীয় জোটের ডাকা ৪৮ ঘণ্টার অবরোধের সময়সীমা আরও ২৩ ঘণ্টা বাড়ানো হয়েছে। গতকাল নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে দলের যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী অবরোধের সময় বাড়ানোর কথা জানান। তিনি আরও বলেন, সরকারি কর্মকাণ্ডের প্রতিবাদে ১৮ দলের কর্মসূচি আরও তীব্র থেকে তীব্রতর হবে।