হেফাজতকে ২৪ ডিসেম্বরের মহাসমাবেশ করতে দেবে না সরকার

0
154
Print Friendly, PDF & Email

ধর্মপন্থী সংগঠন হেফাজতকে আগামী সংসদ নির্বাচনের আগে মাঠে নেমে ‘সহিংসতা’ দেখানোর আর কোনো সুযোগ দেবে না সরকার। সংগঠনটির ঘোষিত আগামী ২৪ ডিসেম্বরের ঢাকার মহাসমাবেশের আয়োজন ‘যেকোনো মূল্যে’ সরকার ঠেকাবে। সেজন্য হেফাজতের আমির শাহ আহমদ শফির সঙ্গে সরকারি পর্যায়ে যোগাযোগের চেষ্টা চলছে। প্রভাবশালী দুই মন্ত্রীকে এ দায়িত্ব দেয়া হয় আজ বুধবার বিকেলে।

‘ধর্মপ্রাণদের ভোট’ আওয়ামী লীগের দিকে রাখতে নির্বাচনের আগে হেফাজতের সঙ্গে ‘নরম আচরণের’ সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। আবার সরকার গঠন করে হেফাজতের ঘোষিত ১৩ দফা দাবি বাস্তবায়ন করবে, প্রয়োজনে এমন আশ্বাসও সরকার থেকে কৌশলগত কারণে দেয়ার সিদ্ধান্ত নেয়া হতে পারে। হেফাজতকে ‘চটিয়ে নৈরাজ্যের সুযোগ সৃষ্টি করে দিতে’ চাচ্ছেন না ক্ষমতাসীনরা। সরকারি তিনটি সূত্র এসব তথ্য জানায় প্রিয় দেশ ডটনেটকে।

হেফাজতের মহাসমাবেশ ঠেকাতে সরকার সমর্থক কয়েকটি সংগঠনের একইদিন পাল্টা সমাবেশ ডাকিয়ে ১৪৪ ধারা জারি করার কথা ভাবছেন সরকারের দুজন নীতিনির্ধারক। এর মধ্যে ২৪ ডিসেম্বর রাজধানীর মতিঝিলের শাপলা চত্বরে হেফাজতের মহাসমাবেশের পাল্টা কর্মসূচি দিয়েছে নৌপরিবহনমন্ত্রী শাজাহান খানের নেতৃত্বাধীন গার্মেন্ট শ্রমিক সমন্বয় পরিষদ। গতকাল মঙ্গলবার শ্রমিক সমন্বয় পরিষদ ওই কর্মসূচির আহবান করে। পরে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে এ কর্মসূচি গণমাধ্যমকে জানানো হয়।

সরকারের একাধিক সূত্র প্রিয় দেশ ডটনেটকে জানায়, নির্বাচন কমিশনের ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচন আগামী বছরের ৫ জানুয়ারি। এর মাত্র আট দিন আগে হেফাজত মহাসমাবেশের ঘোষণা দিয়েছে ঢাকায়। এর আগে চলতি বছরের ৫ মে ঢাকার মতিঝিলের শাপলা চত্বরে হেফাজতের সমাবেশ নিয়ে সরকার ‘বেকায়দায়’ পড়ে। ওই সমাবেশ থেকে হেফাজতের কর্মীদের সরাতে সরকার গভীর রাতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে দিয়ে অভিযান চালায়। হেফাজত, জামায়াত, বিএনপির দাবি, ওই অভিযানে ‘হাজারো লোক নিহত হন’।

মতিঝিলে অবস্থান নেয়া হেফাজতের ‘সহস্রাধিক’ নেতাকর্মী নিহতের পাশাপাশি তাদের লাশ গুম করা হয় বলেও ৬ মে দাবি করে প্রধান বিরোধী দল বিএনপি।
সেদিন রাজধানীর নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান সাদেক হোসেন খোকা এ দাবি করেন। এর আগে ১৮ দলের মহাসচিব পর্যায়ের বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।

এ নিয়ে দেশ, বিদেশে সমালোচনার মুখে পড়ে সরকার। নির্বাচনের আগে সপ্তাহে নতুন করে এরকম পরিস্থিতির কবলে পড়তে চাচ্ছে না সরকার।

সরকারের সূত্র আশংকা করছে, ‘নৈরাজ্যকর পরিস্থিতির’ জন্য নির্বাচনের আগের সপ্তাহে মহাসমাবেশের ডাক দিয়েছে হেফাজত। গত ৫ মে ‘ঢাকা অবরোধ’ করতে এসে রাজধানীতে হেফাজত যেভাবে ধ্বংসযজ্ঞ চালায়, এবার এর মাত্রা আরো বেশি হতে পারে। এছাড়া বিএনপি, জামায়াত আগামী নির্বাচন ঠেকানোর কথা বলছে। এক্ষেত্রে দল দুটি হেফাজতের সমাবেশকে ব্যবহার করতে পারে।

তবে হেফাজতের মহাসচিব জুনায়েদ বাবুনগরী প্রিয় দেশ ডটনেট’র কাছে দাবি করেন, ‘১৩ দফা দাবি বাস্তবায়নে গত ৫ মে মতিঝিলে সমাবেশের পর ১৫ নভেম্বর সেখানে আবার সমাবেশের ডাক দিয়েছিল হেফাজত। পরে ইজতেমা, আশুরাকে কারণ দেখিয়ে সমাবেশ স্থগিতের সিদ্ধান্ত জানানো হয়। ১৫ নভেম্বর সমাবেশ করতে না পারায় আগামী ২৪ ডিসেম্বর করা হচ্ছে। এ মহাসমাবেশকে ব্যবহার করে নৈরাজ্য করতে কোনো রাজনৈতিক দলকে সুযোগ দেয়া হবে না।’

শেয়ার করুন