নির্বাচন কমিশন আজ রোববার দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবে। কাল সোমবার না হলে পরশু তফসিল ঘোষণা হতে পারে।
কমিশন সচিবালয় সূত্র জানায়, তফসিল ঘোষণার জন্য যাবতীয় প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। তবে তফসিল ঘোষণা করা হলে বিএনপি দেশ অচল করে দেওয়ার যে হুমকি দিয়েছে, তা নিয়ে কমিশন চিন্তিত। এ জন্য বিরোধী দলের আন্দোলন ঠেকাতে কমিশন নির্ধারিত সময়ের আগেই সেনাবাহিনী মোতায়েন করতে সরকারকে অনুরোধ জানাবে।
নির্বাচনের প্রস্তুতিমূলক কাজ হিসেবে গতকাল শনিবার দেশের সব জেলায় প্রার্থীর মনোনয়ন ফরম পাঠানো হয়েছে। জেলা নির্বাচন কর্মকর্তারা সশরীরে উপস্থিত হয়ে মনোনয়ন ফরম নিয়ে গেছেন। ভোটার তালিকা ছাপা হয়েছে। মনোনয়ন ফরম পূরণের নির্দেশিকা ছাপাখানায় আছে।
সংশোধিত আচরণবিধি আজ আইন মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হবে। এরপর তা গেজেট আকারে প্রকাশ করা হবে।
জানতে চাইলে কমিশন সচিবালয়ের সচিব মোহাম্মদ সাদিক বলেন, নির্বাচনের প্রস্তুতি প্রায় শেষ। সচিবালয় এখন কমিশনের নির্দেশনার অপেক্ষায় আছে। নির্দেশ পেলেই নির্বাচনের দিনক্ষণ ঠিক করে কমিশন সভায় উপস্থাপন করা হবে।
কমিশন সূত্র জানায়, জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহের শেষে অথবা দ্বিতীয় সপ্তাহের শুরুর যেকোনো দিন ভোট গ্রহণ হতে পারে। নির্বাচন কমিশনার মো. শাহনেওয়াজ গত শুক্রবার চাঁদপুরে নিজ এলাকায় একটি বেসরকারি টিভি চ্যানেলকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে বলেছেন, সোমবারের মধ্যে তফসিল ঘোষণা করা হবে।
তবে শাহনেওয়াজের এই ঘোষণায় প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী রকিব উদ্দীন আহমেদসহ অন্য কমিশনাররা অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন বলে কমিশন সূত্র জানায়। এ জন্য সোমবারের বদলে মঙ্গলবার তফসিল ঘোষণা করা যায় কি না, তা নিয়ে কমিশনে আলোচনা হয়েছে।
নির্বাচনী আচরণবিধি অনুযায়ী, তফসিল ঘোষণার পর কোনো রাজনৈতিক দল বা প্রার্থী ভোট গ্রহণের দিনের পূর্ববর্তী তিন সপ্তাহের আগে কোনো ধরনের প্রচারণা চালাতে পারবেন না। আচরণবিধির ৬ ধারাতে বলা আছে, কোনো রাজনৈতিক দল বা প্রার্থী অথবা প্রার্থীর পক্ষে কোনো ব্যক্তি প্রচারণার ক্ষেত্রে প্রতিপক্ষের সভা-সমাবেশে বাধা দিতে পারবে না। কেউ সভা করতে চাইলে সভার কমপক্ষে ২৪ ঘণ্টা আগে যথাযথ কর্তৃপক্ষের অনুমতি নিতে হবে। কোনো নির্বাচনী সভা বা অনুষ্ঠানে বাধাদানকারী বা অন্য কোনোভাবে গোলযোগ সৃষ্টিকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে পুলিশের শরণাপন্ন হতে হবে। আচরণবিধি লঙ্ঘনের জন্য ছয় মাসের কারাদণ্ড অথবা সর্বোচ্চ ৫০ হাজার টাকা জরিমানার বিধান রয়েছে। গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ (আরপিও) অনুযায়ী, নির্বাচনী কাজে বাধা দেওয়া এবং কাউকে ভোটদানে বিরত রাখার চেষ্টা চালানো দণ্ডনীয় অপরাধ।
তবে কমিশন সচিবালয়ের কর্মকর্তাদের মতে, বিরোধী দল সহিংস কর্মকাণ্ড চালালে তা নিয়মিত আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর (পুলিশ, আনসার, বিজিবি ও অন্যান্য) পক্ষে নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে। এ জন্য ভোট গ্রহণের দুই সপ্তাহ আগে অর্থাৎ প্রার্থী তালিকা চূড়ান্ত হওয়ার পরপরই মাঠপর্যায়ে সেনাবাহিনী মোতায়েনের কথা ভাবা হচ্ছে। কমিশন বিষয়টি রাষ্ট্রপতিকে জানিয়েছে।







