পুলিশি সন্ত্রাসে আজ নাগরিকতা বিপন্ন: ফরহাদ মজহার

0
136
Print Friendly, PDF & Email

নাগরিক অধিকারের আহ্বায়ক, কলামিস্ট, কবি ফরহাদ মজহার বলেছেন, “নাগরিক ও মানবাধিকারের তুলনায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ‘অতিরিক্ত বলপ্রয়োগ’ কিভাবে প্রকট মানবাধিকারের সংকট তৈরি করে সে বিষয়ে আমরা সচেতন নই। নাগরিকদের মিছিলে কিংবা তাদের ন্যায়সঙ্গত ক্ষোভ সরকারকে জানাবার কোনো সমাবেশে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ‘অতিরিক্ত বলপ্রয়োগ’ অত্যন্ত বিপজ্জনক মানবাধিকারের লঙ্ঘন। সাধারণত একেই আমরা আমাদের দৈনন্দিন ভাষায় পুলিশি সন্ত্রাস বলে থাকি। সেই সন্ত্রাসের কারণে নাগরিকতা আজ বিপন্ন।”

শনিবার বেলা সাড়ে ১১টায় জাতীয় প্রেস ক্লাবে নাগরিক অধিকার রক্ষা কমিটি আয়োজিত ‘পুলিশি সন্ত্রাসে বিপন্ন নাগরিকতা’ শীর্ষক সংলাপের সূচনা বক্তব্যে ফরহাদ মজহার এসব কথা বলেন।

সংলাপে উপস্থিত আছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য প্রফেসর ড. এমাজউদ্দীন আহমেদ, অধ্যাপক মনিরুজ্জামান মিঞা, সাবেক বিচারপতি আবদুর রউফ, ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক অধ্যাপক পিয়াস করিম, অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক আবু আহমেদ, কল্যাণ পার্টির চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল অব. সৈয়দ ইবরহীম বীরপ্রতীক, গণস্বাস্থের প্রতিষ্ঠাতা জাফরুল্লাহ চৌধুরী, সাংবাদিক সাদেক খান প্রমূখ।

ফরহাদ মজহার বলেন, “দুটি কারণে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর বাড়াবাড়ি ঘটে। এক. উপযুক্ত প্রশিক্ষণের ঘাটতির কারণে। দুই. আইন না মেনে এবং মানবাধিকারের তোয়াক্কা না করে সম্পূর্ণ দলীয় স্বার্থে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে রাজনৈতিক দলগুলোর ব্যবহার করার কারণে।”

সাম্প্রতিক সময়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ‘অতিরিক্ত বলপ্রয়োগ’ সম্পর্কে একটি তদন্ত কমিশন গঠন করার সুপারিশ করেন ফরহাদ মজহার।

ফরহাদ মজহার বলেন, “যারা বর্তমান সরকারের নানান অন্যায়ের কারণে বিক্ষুব্ধ তাদের অবশ্যই প্রতিবাদ জানানোর অধিকার আছে। কিন্তু সে অধিকারও পুলিশ কেড়ে নিয়েছে। সমাবেশতো দূরের কথা, ঘরে বসে সভা করার সময়ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী চড়াও হচ্ছে। গ্রেফতার করছে। রাস্তায় বের হলে গুলি করা হচ্ছে।”

ফরহাদ মজহার অনুষ্ঠানে সবার দৃষ্টি আকর্ষণ করে বলেন, “প্রসাশনকে অবশ্যই নাগরিক ও মানবিক অধিকারকে সন্মান করতে হবে। ক্ষমতাসীনদের দলীয় ক্যাডার হিসেবে ভূমিকা পালন করলে তাদের অবশ্যই বিচারের কাঠগড়ায় দাঁড়াতে হবে। যারা এই কুকাণ্ডে অভিযুক্ত এবং জড়িত বলে প্রমাণিত হবেন তারা জাতিসংঘের শান্তিবাহিনীতে যোগদান দূরের কথা, বরং আন্তর্জাতিক আদালতে বিচারের মুখোমুখিও হতেও পারেন।”

তিনি বলেন, “আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সংবিধান ও আইনের ঊর্ধ্বে নয়। সরকারবিরোধীদের নির্বিচারে দমনপীড়ন সাধারণভাবে রাষ্ট্রীয় সহিংসতা হিসেবে পরিচিত। এই সন্ত্রাস ও সহিংসতা রাষ্ট্রের নামে করা হলেও মূলত করে ক্ষমতাসীন সরকার। নির্বিচারে গুলি করে নাগরিকদের হত্যার ষোল আনা দায় সরকারের। এই দায় থেকে মুক্তির একমাত্র পথ প্রতিটি হত্যার নিরপেক্ষ তদন্ত।”

শেয়ার করুন