নেতাগো গায়ে বোম পড়ে না ক্যান?’

0
164
Print Friendly, PDF & Email

হরতাল আর রাজনৈতিক অস্থিরতায় ক্ষতি শুধু গরিবের। মরলেও গরিবই মরে। নেতাগো তো কিছুই অয় না।’ বেশ ক্ষোভের সঙ্গে কথাগুলো বলেন রহিমা। হরতালের আগুনে দগ্ধ হয়ে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে ১৮ দিন মৃত্যুর সঙ্গে লড়াই করে মারা যাওয়া পোশাকশ্রমিক নাসিমার বড় বোন রহিমা।

গত ২৬ অক্টোবর হরতালের আগের দিন রাজধানীর মোহাম্মদপুরে ঢাকা উদ্যানের সামনে যাত্রীবাহী বাসে আগুন দেয় দুর্বৃত্তরা। সব যাত্রী বের হতে পারলেও বাসে আটকা পড়ে দগ্ধ হন নাসিমা। গতকাল বুধবার দিবাগত রাত পৌনে দুইটার দিকে তিনি মারা যান।

সকাল সাড়ে ১০টায় বার্ন ইউনিটের নিচতলায় প্রথম আলো ডটকমের সঙ্গে কথা হয় রহিমার। তিনি জানান, চার বোনের মধ্যে সবার ছোট নাসিমা তাঁর সঙ্গেই থাকতেন। জীবন সংগ্রামে পাওয়া না-পাওয়া দিয়েই তাঁদের জীবন চলছিল। রহিমা বলেন, ‘কাজ কইর্যাই আমাগো জীবন চলছিল। কষ্ট থাকলেও স্বপ্নও কম ছিল না। কিন্তু এই রাজনীতি আমাগো স্বপ্ন পূরণ তো দূরের কথা, জানডাই কাইড়া নিল! একটা প্রশ্ন রাখতে চাই সবার কাছে। বোম শুধু গরিবগো ওপরই পড়ে ক্যান? নেতাগো গায়ে বোম পড়ে না ক্যান। হ্যারা কবে আমাগো কথা ভাববেন?’

এদিকে আজ বৃহস্পতিবার সকালে মারা যাওয়া আবুল কাশেমের স্ত্রী হাজেরাও অনিশ্চিত জীবনের আশঙ্কায় দিন পার করছেন। তাঁর স্বামী মো. আবুল কাশেম ওরফে জালি কাশেম (৪২) মঙ্গলবার সন্ধ্যায় ফেনীতে ককটেল তৈরির সময় বিস্ফোরণে আহত হন। ওই দিনই তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে ভর্তি করা হয়। ককটেল তৈরি ও বিস্ফোরণের ঘটনায় মো. আবুল কাশেম ওরফে জালি কাশেমের বিরুদ্ধে ফুলগাজী থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মো. শাহ আলম বাদী হয়ে বুধবার একটি মামলা রজু করেছেন।

কিন্তু আবুল কাশেমের স্ত্রী হাজেরার দাবি, তাঁর স্বামী কৃষিকাজ করতেন। কোনো রাজনীতির সঙ্গেই জড়িত ছিলেন না। বোমা তৈরিও করতেন না। তিনি বলেন, ‘পাঁচ ছেলেমেয়ে নিয়ে কোথায় যাব, কী করব ভেবে পাচ্ছি না।’ ঘর ছাড়া আর কিছুই নেই বলে জানান তিনি।

শেয়ার করুন