সংলাপ না সংঘাত। শান্তি না অশান্তি। সকল দলের অংশগ্রহণে অবাধ, সুষ্ঠু ও একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে কিনা এই প্রশ্নে দেশের সুশীল সমাজ, বিদেশী কূটনৈতিক মহল এবং সাধারণ জনগণের পাশাপাশি শ্রমজীবী মানুষের মধ্যেও নানা উদ্বেগ আর উৎকণ্ঠা বিরাজ করছে। শ্রমজীবীদের সঙ্গে কথা বলে এই উদ্বেগের কথা জানা গেছে।
শ্রমজীবীরা জানান, সংসদ নির্বাচন আসলে প্রতিবারই দেশে একটি সঙ্কট তৈরি হয়। এবারের সঙ্কট অন্যবারের চেয়ে একটু ভিন্ন। নানা নাটকিয়তার মধ্যদিয়ে হওয়া দুই নেত্রীর ফোনালাপ এই উদ্বেগ ও উৎকণ্ঠাকে আরো বাড়িয়ে দিয়েছে। জনগণের মধ্যে নতুন করে শঙ্কা দেখা দিয়েছে। আগামীতে আদৌ সংলাপ বা নির্বাচন হবে কি না?
রাজধানীর সেগুনবাগিচা এলাকায় রিক্সাচালক রেজাউর রহমান বলেন, হরতাল-মারামারি না করে দুই নেত্রীর সংলাপের মাধ্যমে সমঝোতায় যাওয়া উচিত। আমরা গরীব মানুষ দিন আনি দিন খাই আমাদের কথা ভাবার কারো সময় নাই। তবে আমাদের নিয়ে কেউ ভাবুক আর না ভাবুক দেশে শান্তি থাকলে আমরা নিশ্চিন্তে ঘুমাতে পারি। তাই দেশে শান্তি ফিরে আসুক এটাই আমরা চাই। তত্ত্বাবধায়ক হোক আর যাই হোক একটা সুষ্ঠু ও সুন্দর নির্বাচন হোক সেটাই আমাদের জন্য মঙ্গল। মারামারি কাঁটাকাটি করে জনগণের জানমালের ক্ষতি হোক এটা কেউ কামনা করে না।
কারওয়ান বাজারে কুলির কাজ করেন মো. মমিনুর রহমান। তিনি বলেন, কে নির্বাচনে জয়ী হবে সেটা বড় কথা নয়। তবে নির্বাচন হতে হবে এটাই বড় কথা। আর সেই নির্বাচন কিভাবে হবে তা দেশের সকল রাজনৈতিক দলকেই ঠিক করতে হবে। আমরা দেশে নৈরাজ্য ও হত্যা দেখতে চাই না। আমরা সকল দলের অংশগ্রহণে একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন দেখতে চাই।
নির্মাণ শ্রমিক জাহাঙ্গীর আলম বলেন, আওয়ামী লীগ-বিএনপি এই দুই দলই নির্বাচনের জন্য বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে। কারণ এই দুটির যে কোন একটিদল যদি নির্বাচনে অংশগ্রহণ না করে তাহলে সেই নির্বাচন নিয়ে মানুষের মনে প্রশ্নে দেখা দেবে। তাই আমার মনে হয় দুই নেত্রীর সংলাপে বসা উচিত এবং নির্বাচন কোন পদ্ধতিতে হবে সেটা তাদেরই ঠিক করা উচিত।নির্বাচন নিয়ে খেটে খাওয়া মানুষের ভাবনা
দিন মুজুর পিন্টু বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও বিরোধীদলীয় নেত্রী খালেদা জিয়ার ফোনালাপ তাদের দুজনের একান্ত ব্যক্তিগত বিষয়। তারা একে অপরকে শুধু দোষ দিয়ে গেছেন। জনগণের বিষয়ে তারা কোন কথা বলেননি। ফলে নির্বাচন হবে কি না এটা নিয়ে মানুষের মনে আরো বেশী সন্দেহ সৃষ্টি হয়েছে।
সিএনজি চালক মো. সোহেল রানা বলেন, দেশে শান্তির জন্য নির্বাচন হতে হবে। আর সেটা তত্ত্বাবধায়ক সরকার বা দলীয় সরকারের অধীনেই হোক, সেটা বড় বিষয় নয়। তবে সেই নির্বাচন সকল রাজনৈতিক দলের অংশগ্রহণে অবাধ, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য হতে হবে। এই জন্য দেশের প্রধান দুই দলের নেত্রীসহ সকল রাজনৈতিক দল একসাথে বসে একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের পরিবেশ তৈরী করতে হবে।