সাঁথিয়ায় সংখ্যালঘুদের ওপর হামলার পর স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শামসুল হক টুকুর সঙ্গে এলাকা পরিদর্শনে হামলাকারীরাও গিয়েছিলেন বলে অভিযোগ করেছেন বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পাটি (সিপিবি) ও বাংলাদেশর সমাজতান্ত্রিক দলের (বাসদ) নেতারা।
রোববার দুপুরে সিপিবি-বাসদের উদ্যোগে প্রগতি সম্মেলন কক্ষে ‘পাবনার সাঁথিয়ায় সংখ্যালঘু হিন্দু সম্প্রদায়ের ওপর হামলার পর সিপিবি-বাসদ প্রতিনিধি দলের সরেজমিনে পরিদর্শন ও পর্যবেক্ষণ’ নিয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এ অভিযোগ করেন তারা। একই সঙ্গে স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ারও দাবি জানান তারা।
লিখিত বক্তব্যে বাসদের নেতা রাজেকুজ্জামান রতন বলেন, ‘স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীকে দেখে মানুষ আশ্বস্ত হবে কি, তার সাথে হামলাকারীদের অনেক চেনামুখ দেখে মানুষ আতঙ্কিত হয়ে মুখ বন্ধ করে ছিল।’
সংবাদ সম্মেলনে তিনি জানান, গত ৭ নভেম্বর সিপিবি-বাসদের একটি প্রতিনিধি দল সাঁথিয়ার বনগ্রাম সরেজমিনে পর্যবেক্ষণ করেন। পর্যবেক্ষণে করে তারা জানতে পারেন, সাহা পাড়ার বাবুল সাহার ছেলে রাজিব সাহা ফেসবুকে হযরত মুহাম্মদের (সা.) নামে কটূক্তি করে স্ট্যাটাস দিয়েছে বলে প্রচার করে এর প্রতিবাদ করার জন্য সবাইকে আহ্বান জানানো হয়। ফলে পরদিন হিন্দু সম্প্রদায়ের বাড়ি-ঘর, ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে সংগঠিতভাবে হামলা চালানো হয়।
রাজীব সাহার বাড়িসহ অন্তত ৩৫টি বাড়ি, তিনটি মন্দির ও ১৫টি ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে অগ্নিসংযোগ, ভাঙচুর ও লুটপাট চালানো হয়। ঘটনার দিন ছাত্রলীগ নেতা কাওসার হাবিব সুইট ও শিবির নেতা জাকির হোসেন বাবলু সাহাকে ধরে বাজারে নিয়ে এসে ছাত্রদল নেতা সোহেল হাসানের দোকানে আটকে রাখে। এরপর তারা কয়েকশ লোককে নিয়ে বাবলু সাহার বাড়িসহ মন্দির ও দোকানপাটে ভাঙচুর ও লুটপাট চালায়।
পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করে সিপিবি-বাসদের পক্ষ থেকে কয়েকটি সুপারিশ হয়েছে। এগুলো হলো-
ক্ষতিগ্রস্তদের পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করা; বিচার বিভাগীয় তদন্ত কমিটি করা; হামলাকারীদের গ্রেপ্তার, বিচার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা করা; হামলাকারীদের প্রশ্রয়দানকারী স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ; সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি রক্ষায় কার্যকর পদক্ষেপ নেয়া এবং রাজনীতিতে ধর্মের ব্যবহার ও সংখ্যালঘুদের ভোট ব্যাংক বানানোর প্রক্রিয়া বন্ধ করা।
সংবাদ সম্মেলনে আরো উপস্থিত ছিলেন- সিপিবির সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আবু জাফর আহমেদ, বাসদের সাধারণ সম্পাদক বজলুর রশিদ ফিরোজ, সিপিবি নেতা সাজ্জাদ জহির চন্দন, ইসমাইল হোসেন প্রমুখ।