বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে (বাকৃবি) ২০১৩-২০১৪ সেশনে প্রথম বর্ষ অনার্স (লেভেল-১ সেমিস্টার-১) ভর্তি পরীক্ষা শনিবার সকাল ১১টায় অনুষ্ঠিত হয়েছে।
ভর্তি পরীক্ষা চলাকালীন ছাত্রলীগ বাকৃবি শাখা ক্যাম্পাসে নবীনদের স্বাগতম জানিয়ে আনন্দ মিছিল করে। ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা বিভিন্ন দেশীয় অস্ত্র হাতে নিয়ে মিছিল থেকে বেশ কয়েকটি ককটেলের বিস্ফোরণ ঘটায়।
এদিকে, বাকৃবি শাখা ছাত্রদল বিশ্ববিদ্যালয়ে মিছিল নিয়ে প্রথম ফটক দিয়ে ক্যাম্পাসে আসার চেষ্টা করলে পুলিশ বাধা দেয়। এ সময় ছাত্রদল নেতাকর্মীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষ হয়। পুলিশ এ সময় ছাত্রদল কর্মীদের লক্ষ্য করে কয়েক রাউন্ড ফাঁকা গুলি ও টিয়ারশেল নিক্ষেপ করে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, সকাল ১১টায় বিভিন্ন অনুষদ ভবন ও ক্যাম্পাসে অবস্থিত বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে একযোগে ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। এ সময় কেন্দ্রগুলোর বাইরে অভিভাবকদের উৎকণ্ঠা লক্ষ্য করা গেছে।
পরীক্ষা চলাকালীন বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি অধ্যাপক ড. রফিকুল হক, ছাত্রবিষয়ক উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. সুলতান উদ্দিন ভূঁঞা, ভর্তি পরীক্ষা কমিটির কো-অর্ডিনেটর অধ্যাপক ড. মনোরঞ্জন দাস, রেজিস্ট্রার আবদুল খালেক, প্রক্টর অধ্যাপক ড. শহীদুর রহমান খান ভর্তি পরীক্ষার বিভিন্ন কেন্দ্র পরিদর্শন করেন।
পরীক্ষার্থীদের উপস্থিত ছিল প্রায় ৭৫ ভাগ। দেশের সার্বিক পরিস্থিতির জন্য পরীক্ষার্থীদের উপস্থিতি এবার কিছুটা কম হয়েছে বলে জানান কর্তৃপক্ষ।
এদিকে, পরীক্ষা শুরু হওয়ার কিছুক্ষণ পর ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা বিভিন্ন হল থেকে দলীয় কার্যালয়ে একত্রিত হতে শুরু করেন। পরীক্ষা শেষ হওয়ার কিছুক্ষণ পর ছাত্রলীগ বাকৃবি শাখা নবীন শিক্ষার্থীদের স্বাগতম জানিয়ে দলীয় কার্যালয় থেকে মিছিল বের করে।
মিছিলটি বিশ্ববিদ্যালয়ের কামাল-রঞ্জিত মার্কেটের সামনে গেলে বেশ কয়েকজন সশস্ত্র ছাত্রলীগকর্মী মিছিলে অংশ নেন। এ সময় পুলিশের সামনে দিয়ে সশস্ত্র মিছিলটি গেলেও তারা নীরব দর্শকের ভূমিকা পালন করে।
এ সময় মিছিল থেকে ৮টি ককটেল বিস্ফোরণ ও কয়েক রাউন্ড ফাঁকা গুলির শব্দের কথা জানিয়েছেন শিক্ষার্থীরা। পরে মিছিলটি নিরাপত্তা জোন-১ এর সামনে এক সংক্ষিপ্ত সমাবেশ শেষে পুনরায় দলীয় কার্যালয়ে যায়।
অপরদিকে, ওই একই সময়ে বাকৃবি শাখা ছাত্রদল নেতাকর্মীরা নবীন শিক্ষার্থীদের স্বাগত জানিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম ফটক থেকে মিছিল বের করেন। মিছিলটি বিশ্ববিদ্যালয়ের ইয়াসিন মার্কেটের দিকে আসলে পুলিশ বাধা দেয়। এ সময় পুলিশ ও ছাত্রদলকর্মীদের মধ্যে সংঘর্ষ বাধলে ছাত্রদল কর্মীরা ৫টি ককটেল বিস্ফোরণ ঘটায়।
এ সময় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশ কয়েক রাউন্ড ফাঁকা গুলি ও দুটি টিয়ারশেল নিক্ষেপ করে তাদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়।
এ বিষয়ে ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক জসিম উদ্দিন জনি বলেন, গণতান্ত্রিক দেশে পুলিশের এ আচরণ আমাদের ক্ষুব্ধ করেছে। আমরা পুলিশের এ আচরণের তীব্র নিন্দা জানাই।
পুলিশের এ আচরণের পেছনে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের মদদ রয়েছে বলেও তিনি অভিযোগ করেন।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. শহীদুর রহমান খান বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের শান্তি শৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণের দায়িত্ব ময়মনসিংহ জেলা প্রশাসনের হাতে। আমরা বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশ বজায় রাখতে যা করণীয় করতে প্রস্তুত।