যুক্তরাষ্ট্র শত শত কোটি ডলার ব্যয়ে তাদের পারমাণবিক অস্ত্রের আধুনিকায়নের পরিকল্পনা করছে। কোনো কোনো মার্কিন আইনপ্রণেতা ও বিশ্লেষক এই পরিকল্পনাকে বিশাল অপচয় বলে মনে করছেন। তাঁদের আশঙ্কা, যুক্তরাষ্ট্র এ পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করতে গেলে রাশিয়ার সঙ্গে অস্ত্র নিয়ন্ত্রণ আলোচনা ভণ্ডুল হয়ে যেতে পারে।
মার্কিন পারমাণবিক অস্ত্রের ভান্ডারে থাকা বোমাগুলো কয়েক দশকের পুরোনো। মূলত সোভিয়েত আমলে ইউরোপে রুশ আক্রমণ ঠেকাতে এসব পারমাণবিক বোমা তৈরি করা হয়।
যুক্তরাষ্ট্রের বি ৬১ পারমাণবিক বোমার ‘রক্ষণাবেক্ষণের কাজ’ নিয়ে মার্কিন শীর্ষ সামরিক কমান্ডার ও সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের মধ্যে ভিন্নমত রয়েছে। আধুনিকায়ন পরিকল্পনার পক্ষে যুক্তি দেখানো হয় যে, অন্য অস্ত্রগুলো ধ্বংস করার জন্য বি ৬১ রক্ষণাবেক্ষণের কাজ করা প্রয়োজন। তবে মার্কিন স্ট্র্যাটেজিক কমান্ডের প্রধান জেনারেল রবার্ট কেহলার গত সপ্তাহে কংগ্রেসে এক শুনানিতে বলেন, মার্কিন পারমাণবিক অস্ত্রের ভান্ডারে থাকা অস্ত্রগুলোর মধ্যে শুধু বি ৬১ বোমাই স্বল্পপাল্লার দূরত্ব ও কৌশলগত অভিযান—দুটি চাহিদাই পূরণ করতে সক্ষম।
বি ৬১ বোমা মার্কিন বিমান বাহিনীর অস্ত্র ভান্ডারে যুক্ত হয় সত্তরের দশকে। বর্তমানে এই বোমাটির পাঁচটি সংস্করণ রয়েছে।
সোভিয়েত-মার্কিন স্নায়ুযুদ্ধের অবসানের পর যুক্তরাষ্ট্র স্বল্পপাল্লায় কার্যকর হাজার হাজার পারমাণবিক অস্ত্র ইউরোপ থেকে সরিয়ে নেয়। তবে এখন পর্যন্ত অন্তত ১৮০ বি ৬১ বোমা ইউরোপে রয়েছে। এগুলো জার্মানি, বেলজিয়াম, ইতালি, নেদারল্যান্ডস ও তুরস্কে সামরিক জোট ন্যাটোর ঘাঁটিতে মোতায়েন রয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্রের নতুন পরিকল্পনায় বি ৬১-১২ মডেলের বেশ কয়েকটি সংস্করণের আধুনিকায়ন হবে। এসব বোমা আকারে আরও ছোট করা হবে। তবে আরও নিখুঁতভাবে লক্ষ্যস্থল ধ্বংস করতে সক্ষম হবে সেগুলো।
কোনো কোনো আইনপ্রণেতার মতে, আধুনিকায়ন পরিকল্পনায় ৪০০ কোটি থেকে ৮১০ কোটি ডলার পর্যন্ত ব্যয় হতে পারে। তবে পেন্টাগনের একটি কমিটি বলছে, অঙ্কটি হতে পারে এক হাজার থেকে এক হাজার ২০০ কোটি ডলার।
গবেষণা প্রতিষ্ঠান আর্মস কন্ট্রোল অ্যাসোসিয়েশনের পরিচালক টম কলিনা বলেন, ‘অস্ত্রের কার্যকারিতা বাড়াতে শত শত কোটি ডলার ব্যয় করা সুবিবেচনার কাজ বলে আমার মনে হয় না।’ যুক্তরাষ্ট্র অস্ত্রের আধুনিকায়ন করলে রাশিয়াও এর জবাব দেবে বলে মনে করেন তিনি। এএফপি।