ধর্মীয় মৌলবাদীদের কাছে মাথা নোয়ানোর জন্য রাজনৈতিক নেতাদের দুষলেন বাংলাদেশের বির্তকিত ও নির্বাসিত লেখিকা তসলিমা নাসরিন। ভারতের ‘আনন্দবাজার’ পত্রিকা শুক্রবারের সংস্করনে তসলিমা নাসরিনের এ ক্ষোভের কথা জানায়।
সম্প্রতি ভারতের আম আদমি পার্টির নেতা অরবিন্দ কেজরিওয়াল বিতর্কিত মুসলিম নেতা তাকির রাজা খানের সমর্থন চেয়েছেন। তার পরেই ক্ষোভে ফেটে পড়েছেন তসলিমা। অল ইন্ডিয়া মুসলিম ল বোর্ড-এর তৎকালীন এই প্রেসিডেন্ট ২০০৭ সালের মার্চে ফতোয়া দেন তসলিমার মুণ্ডচ্ছেদ করতে পারলে ৫ লাখ রূপি পুরস্কার মিলবে।
লেখিকার বক্তব্য, “সে আমার মাথার দাম প্রকাশ্যে ঘোষণা করেছিল, এ কথা জেনেও একজন রাজনৈতিক নেতা মৌলবাদীর কাছে যাচ্ছেন! ভারতীয় সংবিধান, গণতন্ত্র ও মানবাধিকারের চরম-বিরোধী এই কাজ করার পরেও তার কোনও বিচার হয়নি দেখে আমি বিস্মিত। তার পরেও এক রাজনীতিবিদ এক জন খুনির কাছে গিয়ে হাত পাতবেন?” তসলিমার অভিযোগ, শুধু কেজরিওয়াল নন, কংগ্রেসও সময়ে অসময়ে এই সব মৌলবাদীদের সঙ্গে হাত মেলায়।
তসলিমা আরও বলেন, “সংখ্যালঘু ভোটের জন্য রাজনৈতিক নেতার চিন্তা থাকাটা স্বাভাবিক। কিন্তু সে জন্য এই সমস্ত অপরাধীদের দ্বারস্থ কেন হতে হবে, যারা কুশিক্ষা এবং ধর্মীয় উগ্রতা ছড়ায়? এই সমস্ত লোককে উস্কানি দিলে প্রকারান্তরে গোটা সম্প্রদায়কেই অন্ধকারে ঠেলে দেওয়া হয়।”
কেজরিওয়ালের প্রতি ক্ষেপেছেন বিজেপি নেতৃত্বও। দলের নেতা শাহনওয়াজ হুসেনের বক্তব্য, “আম আদমি পার্টি ক্রমশ বেপরোয়া হয়ে উঠছে। সমস্ত ধরনের লোকের কাছে দৌড়চ্ছে তারা।”
কেজরিওয়াল অবশ্য অভিযোগের জবাবে এক বিবৃতিতে দাবি করেন, তিনি সম্প্রীতি রক্ষার কাজটিই করছেন। বিজেপি এবং কংগ্রেস উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ভাবে তাকে নিয়ে বিতর্ক তৈরি করছে। কেজরিওয়ালের দাবি তসলিমার বিরুদ্ধে যে তাকির রাজা ফতোয়া জারি করেছিলেন, তা তিনি জানতেন না।
এদিকে তসলিমার দাবি, ছয় বছর আগে এই ফতোয়া জারির সময়ে সমস্ত জাতীয় সংবাদপত্রে ফলাও করে এই খবর প্রকাশিত হয়। সুতরাং না জানার কারন নেই।