কথিত ‘গণজাগরণ’ মঞ্চের আহ্বায়ক ও সাবেক ছাত্রলীগ নেতা, মাস কয়েক আগে যার নির্দেশে কর্মসূচি পালনে দেশের মন্ত্রী-আমলারা বাধ্য হয়েছিলেন—সেই ইমরান এইচ সরকারের পৃথিবী দিন দিন ছোট হয়ে আসছে। তার সেই সুদিনের সাঙ্গপাঙ্গরা সঙ্গ ছেড়েছে বহু আগেই। চতুর বাম ছাত্রনেতা হোসাইন আহমদ তাফসীর, বাপ্পাদিত্য বসু, আসাদুজ্জামান মাসুম, অভিনেত্রী রোকেয়া প্রাচী, লাকি আক্তারসহ ইমরানের একসময়ের সঙ্গীরা ভবিষ্যত্ রাজনৈতিক পরিস্থিতি বুঝে বিভিন্ন অজুহাতে কেটে পড়েছে। কিন্তু এরপরও ছাত্রলীগের কেন্দ্রের সহযোগিতায় অল্প কিছু ছাত্রলীগ কর্মী নিয়ে মাঠে থাকার চেষ্টা করছেন ইমরান।
কিন্তু ভবিষ্যত্ ভেবে ধীরে ধীরে ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা আর তাকে সঙ্গ না দেয়ায় গত ঈদের আগে একাধিক কর্মসূচি ঘোষণা দিয়েও পালন করতে পারেননি তিনি। এরপর আর কর্মসূচি ঘোষণা বাদ দিয়ে দেন ইমরান। গত ২৫ অক্টোবর এবং এর পরে বিএনপি-জামায়াতের বিভিন্ন কর্মসূচি উপলক্ষে উধাও হয়ে গিয়েছিলেন তিনি। এ সময় শাহবাগ শিবির-ছাত্রদলের নিয়ন্ত্রণে থাকলেও খুঁজে পাওয়া যায়নি শাহবাগিদের। এরপর গণমাধ্যমে তাদের এমন রণে ভঙ্গ দেয়ার সংবাদ প্রকাশিত হওয়ার পর আবারও ‘প্রেস্টিজ বাঁচানো’ কর্মসূচি দিতে ইমরান তার বুদ্ধিদাতাদের চাপের মুখে পড়েন।
এরই প্রেক্ষিতে গত কয়েকদিন ধরে ফেসবুকে প্রচারণা চালিয়ে নতুন কর্মসূচি দেয়ার ঘোষণা দেন। কিন্তু ফেসবুকে তার ব্যক্তিগত পেজে গিয়ে দেখা গেছে সেখানে শত শত ব্যবহারকারী ইমরানকে গালিগালাজ ও হুমকি-ধমকি দিচ্ছে। এতে ‘রাজাকারের নাতি’ খ্যাত এই চেতনাজীবী তরুণ ফেসবুক ব্যবহারও কমিয়ে দিয়েছেন। থাকছেনও গোপনীয় স্থানে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে ইমরানের কাছের লোক বলে পরিচিত একাধিকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে—তিনি এখন আর ক্যাম্পাসে আড্ডা দিতে আসেন না। আগে কোথায় থাকতেন—তা জানা থাকলেও বর্তমানে ইমরান কোথায় থাকেন কেউ বলতে পারেনি।
গত ক’দিনের প্রচারণার পর ‘সারাদেশে জামায়াত-শিবির সন্ত্রাসীদের অব্যাহত তাণ্ডবের প্রতিবাদে’ গতকাল বিকালে শাহবাগে ক’জন সঙ্গী নিয়ে হাজির হন ইমরান এইচ সরকার। অনেকদিন পর শাহবাগিদের জমায়েত দেখে আশপাশে কিছু লোকও সেখানে দাঁড়ান। এই ফাঁকে তার কথিত কর্মসূচি শেষ করে চলে যান মাস কয়েক আগে দোর্দণ্ড প্রতাপশালী এই সাবেক ছাত্রলীগ নেতা।







