আমার বক্তব্য কেটে জোড়াতালি দিয়ে বিকৃত করা হয়েছে: ফরহাদ মজহার

0
136
Print Friendly, PDF & Email

বিশিষ্ট কলামিষ্ট ও কবি ফরহাদ মজহার অভিযোগ করেছেন,একটি টিভি চ্যানেল যারা নিজেদেরকে সাংবাদিক হিসাবে দাবি করেন তারা আমার বক্তব্য কেটে জোড়াতালি দিয়ে বিকৃত করেছেন।

শনিবার দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাব মিলনায়তনে ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের (ডিইউজে) একাংশ আয়োজিত ‘আক্রান্ত গণমাধ্যম: সংকটের আবর্তে দেশ’ শীর্ষক গোলটেবিল আলোচনা সভায় তিনি এই অভিযোগ করেন।

ফরহাদ মজহার আরো বলেন, পটকা, ককটেল বা ইটও কেউ যেন গণমাধ্যমে না ছড়ে আমি তা চাই। তবে, বর্তমান পরিস্থিতির জন্য শুধু প্রধানমন্ত্রী দায়ী নয় আমরা সকলেই দায়ী। কারন আমরা এক হতে পারিনি।

তিনি শঙ্কা প্রকাশ করে বলেন, আগামী দিনে একটি রক্ততাক্ত পরিস্থিতি আসছে,তাই আমাদের সবাইকে একতাবদ্ধ হতে হবে।

অনুষ্ঠানে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলামগীর বলেন, আজকে শুধু গণমাধ্যম নয় সমগ্র বাংলাদেশে অস্তিত্বই আক্রান্ত।

ফখরুল বলেন, একদিকে সরকার মুখে গণতন্ত্রের কথা বলেন আর একদিকে গণতন্ত্র বিরোধী কাজ করেন। আওয়ামী লীগের চারিত্রিক বৈশিষ্টই এমন। গণতন্ত্রকে কিভাবে ধ্বংস করা যায় তার সব কাজ তারা চালিয়ে যান।

আওয়ামী লীগ গত ৫ বছর ধরে ৭৫ এর মত যারা ভিন্ন মতাবলম্বী তাদের ওপর নির্যাতন চালিয়েছে এমন অভিযোগ করে মির্জা ফখরুল বলেন, আজকে শুধু গণমাধ্যম নয় সমগ্র বাংলাদেশের অস্তিত্বই আক্রান্ত ও হুমকির সম্মুখীন।

তিনি বলেন,যে অভিযোগে মাহমুদুর রহমানকে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল একই অভিযোগে ইনু অভিযুক্ত। কারণ খালেদা জিয়ার অনুমতি না নিয়েই ইনু তার কথা প্রকাশ করেছেন। আর প্রধানমন্ত্রী এর সমর্থন দিয়েছেন। কাজেই তথ্যমন্ত্রীর সাথে সাথে প্রধানমন্ত্রীকে পদত্যাগ করতে হবে।

ফখরুল বলেন, আজ শতকরা ৯০ ভাগ মানুষ নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন চান কিন্তু আওয়ামী রীগ সরকার তা চায় না। কারণ গত ৫ বছর ধরে তারা জনগণের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছেন,অর্থনীতিতে রসাতলে পাঠিয়ে জনবিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছেন। এখন তারা ২০২১ সাল পর্যন্ত ক্ষমতা ধরেন রাখার স্বপ্ন দেখেন।

তিনি বলেন, অন্যায়ের বিরুদ্ধে কবথা বলেন বলেই আজকে ফরহাদ মজহারকে দোষারুপ করা হচ্ছে। যারা ফরহাদ মজহারের বিচার চান তারা একবারও সাগর-রুনির হত্যাকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বলেন না।

ফরহাদ মজহারের বক্তব্য সম্পূর্ণ প্রকাশ করা হয়নি জানিয়ে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য রফিকুল ইসলাম মিয়া বলেন,একটি বিশেষ মহল সুপরিকল্পিতভাবে ফরহাদ মজহারকে হয়রানি করতে চাচ্ছে। আর সেই কারনে তার সম্পূর্ণ বক্তব্য প্রকাশ না করে তাকে বিব্রত করার চেষ্টা করছে।

ড. আসিফ নজরুল বলেন,গণমাধ্যমের ওপর হামলার উস্কানিদাতা হিসাবে যারা কাজ করছে তাদের প্রতি আমি তীব্র নিন্দা জানাই। একই সাথে যে সকল পত্রিকার সম্পাদক একটি বিশেষ রাজনৈতিক দলের হয়ে কাজ করছে তাদের প্রতিও তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করি।

ফরহাদ মজহারকে উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন,গণমাধ্যম ও সাংবাদিকদের ওপর হামলা হওয়া উচিত আপনার এমন বক্তব্য বিভিন্ন মিডিয়া প্রকাশ করেছে। যদি আপনি এই বক্তব্য দিয়ে থাকেন তাহলে আমি এর তীব্র প্রতিবাদ জানাই। কারণ একটি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে গণমাধ্যমের ওপর হামলা কোনভাবেই কাম্য নয়।

ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের (ডিইউজে) একাংশ সভাপতি কবি আব্দুল হাই শিকদারের সভাপতিত্বে গোলটেবিল আলোচনা সভায় আরো বক্তব্য রাখেন বিএনপির চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা অ্যাড. খন্দকার মাহবুব হোসেন,প্রফেসর ড. পিয়াস করিম,ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য ড. এমাজ উদ্দিন আহমেদ, প্রফেসর ড. ইউসুফ হায়দার,বাংলাদেশ ফোডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের সাবেক মহাসচিব এম এ আজিজ,সভাপতি রুহুল আমীন গাজী,সৈয়দা আসিফা আশরাফি পাপিয়া এমপি,ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সাধারণ সম্পাদক ইলিয়ান খান প্রমুখ।

শেয়ার করুন