গত শনিবার বিকেলে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় সংলগ্ন কাজলা এলাকায় হরতালের সমর্থনে আয়োজিত ১৮ দলীয় জোটের পথসভায় গুলিতে রাশেদুল ইসলাম রান্টু (২৩) নামে ইসলামী ছাত্রশিবিরের এক নেতা নিহত হয়।
এছাড়া র্যাব-পুলিশের গুলিতে ১৮ দলীয় জোটের অন্তত অর্ধশতাধিক নেতা-কর্মী আহত হন।
এ সময় র্যাবের পাশে থেকে সাদা পোশাকে একে-৪৭ নিয়ে গুলি চালায় এক ব্যক্তি। কে এই ব্যক্তি? আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগ না কোন প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত কিলার? এনিয়ে নানা প্রশ্ন দেখা দিয়েছে মহানগরবাসীর মাঝে।
রোববার এটাই ছিল রাজশাহী মহানগরীতে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু। র্যাব তাদের সদস্য দাবি করলেও প্রত্যক্ষদর্শীরা এ নিয়ে সন্দেহ পোষণ করছেন। অনেকে ওই ব্যক্তিকে সরকারী দলের প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত কিলার মনে করছেন। আবার অনেকে ভিনদেশী কিলার বলেও সন্দেহ পোষণ করছেন।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, গত শনিবার বিকেলে মহানগরীর বিশ্ববিদ্যালয় সংলগ্ন কাজলা এলাকায় মতিহার থানা ১৮ দলের নেতাকর্মীরা হরতালের সমর্থনে বিক্ষোভ মিছিল শেষে পথসভার জন্য প্রস্তুতি নেয়। এ সময় হাঠাৎ করেই র্যাব ও পুলিশ বিক্ষোভকারীদের ওপর রাবার বুলেট, শর্টগানের গুলি ও টিয়ার শেল ছুড়ে বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করার চেষ্টা করে। এতে বিক্ষোভকারীরা পুলিশকে লক্ষ্য করে ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করলে শুরু হয় উভয় পক্ষের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া ও সংঘর্ষ।
কিছুক্ষণ পর পুলিশের সাথে অংশ নেয় র্যাব-৫ এর সদস্যরা । এর একপর্যায়ে দেখা যায় সিভিল পোশাকে মাথায় বড় চুল, বড় গোঁফ, জিন্সের প্যান্ট, বুকের বোতাম খোলা, ফুল হাতা শার্ট এবং বেল্ট জুতা পরিহিত এক ব্যক্তি র্যাবের গাড়ির পাশ থেকে একে-৪৭ বন্দুক নিয়ে র্যাবের পেছন দিক থেকে ছুটে এসে বিক্ষোভকারীদের উপর গুলি ছুড়তে থাকে। একে ৪৭ বন্দুক ব্যবহারকারী এই অজ্ঞাত ব্যক্তিকে নিয়ে সর্বমহলে নানা গুঞ্জন চলছে।
র্যাব-৫ এর সিও লে. কর্ণেল আনোয়ার লতিফ খান সাংবাদিকদের কাছে দাবি করে বলেন, ওই ব্যক্তি র্যাবের একজন সদস্য। তবে তিনি ওই সদস্যের নাম প্রকাশ করতে পারেননি।
রেলওয়ে কলোনী ক্যাম্পের মেজর শফিক দাবি করেন, তাদের গাড়ি থেকে নেমে ওই সদস্য তাদের সঙ্গে অভিযানে অংশ নেন।
তবে ওই ব্যক্তির চেহারা ও পোশাকের ধরণ দেখে অনেকেই তাকে ভিনদেশী নাগরিক হিসেবেও সন্দেহ করছেন। সিভিল পোশাকে ভারী অস্ত্র ব্যবহার সন্দেহ আরো বাড়িয়ে দিয়েছে। সাধারণত আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সিভিল ড্রেসের সদস্যদের ছোট অস্ত্র বহনের নিয়ম রয়েছে।
স্থানীয় ১৮ দলীয় জোটের নেতারা বলছেন, র্যাব-পুলিশ অস্ত্রধারী ক্যাডারদের সঙ্গে নিয়ে তাদের নেতাকর্মীদের হতাহত করছে। এটা গণতন্ত্রের জন্য খুবই অশনি সংকেত বলে তারা বলেন।