একের পর এক নাটকীয় ঘটনা। দৃশ্যপট বদল। হঠাৎ আলোর ঝলকানি। নিমিষে কালো মেঘের ঘনঘটা। রাজনৈতিক পরিস্থিতি টালমাটাল। বিরোধী দলের ভাষ্যমতে ২৪শে অক্টোবরই বর্তমান মন্ত্রিসভার শেষ দিন। যদিও এ নিয়ে বিতর্ক আছে। আগামী ২৪ ঘণ্টায় তাই ঘটতে যাচ্ছে অনেক নাটকীয় ঘটনা। রাজনীতিবোদ্ধারা বলছেন, যেহেতু বিরোধী দল ২৪শে অক্টোবর পর্যন্ত সরকারকে, মন্ত্রিসভা ও সংসদকে বৈধ মানছে তাই আজ-কালের মধ্যেই তারা সংসদ থেকে পদত্যাগ করতে পারে। একই দিকে হাঁটতে পারে সরকারের শরিক জাতীয় পার্র্টিও। ইতোমধ্যে মন্ত্রিসভায় জাতীয় পার্টির সদস্য জিএম কাদেরের পদত্যাগের প্রস্তুতি চলছে। এ নিয়ে দলের নেতারা আজ এক দফা বৈঠক করেছেন। যে কোন সময় দলটির পক্ষ থেকে নাটকীয় ঘোষণা আসতে পারে। শুধু জিএম কাদেরের পদত্যাগই নয়। মহাজোট ছাড়ার মতো বড় ঘোষণাও দিতে পারেন দলটির চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ। শেষ মুহুর্তে অস্বস্তিকর পরিস্থিতিতে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। নির্বাচনকালীন সরকার নিয়ে কোন সুরাহা হয়নি। প্রধানমন্ত্রীর পেশ করা সর্বদলীয় সরকারের প্রস্তাবে সাড়া দেয়নি বিরোধী দল। বিরোধী নেত্রী বিকল্প প্রস্তাব দিয়েছেন। এ প্রস্তাবকে স্বাগত জানিয়েছে বিভিন্ন মহল। সর্বশেষ বিরোধী নেত্রীর প্রস্তাব নিয়ে আলোচনার জন্য বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদককে চিঠি দিয়েছেন। ওই চিঠি পাওয়ার পর সৈয়দ আশরাফ ফোনে কথা বলেছেন মির্জা ফখরুলের সঙ্গে। গতকাল রাতে মির্জা ফখরুলকে টেলিফোন করে বিরোধী দলের বিকল্প প্রস্তাবকে স্বাগত জানিয়ে তাকে ফোন দেন জাতিসংঘের সহকারি সেক্রেটারি ফার্নান্দেজ তারানকো। তিনি সৈয়দ আশরাফের সঙ্গেও ফোনে কথা বলেছেন বলে খবর প্রকাশ হয়েছে। গতকাল ইউরোপীয় ইউনিয়ন অর্থবহ আলোচনার জন্য দুই দলের প্রতি আহবান জানিয়ে বিবৃতি দিয়েছে। সব মিলিয়ে প্রচন্ড চাপে সরকার। অস্বস্থিকর অবস্থায় ক্ষমাসীন দলের নেতারা। বিরোধী দলের একের পর ধির স্থির সিদ্ধান্তে করনীয় নির্ধারণে তারা চিন্তিত-বিচলিত। জানাগেছে সর্বশেষ পরিস্থিতিতে দলের নেতাদের ওপর নাখোশ আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা। গতকাল থেকে কয়েকজন নেতা চেষ্টা করেও তার সাক্ষাৎ পাননি। গতকাল দীর্ঘ সময় দলের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আশরাফুল ইসলামের সঙ্গে সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা করেছেন। এমন অবস্থায় দলের পক্ষ থেকে ডাকা সংবাদ সম্মেলন গতকালই স্থগিত করা হয়। আওয়ামী লীগের এ সিদ্ধান্তকেও বার্তাবহ মনে করছেন অনেকে। বিকালে জোটের শরিক ১৪ দলের নেতাদের সঙ্গে বৈঠকে বসছেন আওয়ামী লীগ সভানেত্রী। সেখান থেকেও আসতে পারে গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত। শেষ মুহুর্তে প্রতিবেশী দেশ ভারতের মনোভাবেরও পরিবর্তন দেখছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা। বোল-চালে পরিবর্তন শীর্ষ প্রশাসন থেকে সব স্তরে। চলমান ঘটনাপ্রবাহ বলে দিচ্ছে সামনের মুহুর্তগুলোতে অপেক্ষা করছে আরও অনেক নাটকীয়তা। পট পরিবর্তনে, দৃশ্যবদলে রাজনীতির ময়দানে যোগ হতে পারে নতুন মাত্রা।