অতিরিক্ত টাকায় মিলছে ঈদ টিকিট

0
169
Print Friendly, PDF & Email

বৃহস্পতিবার হিন্দু ধর্মালম্বীদের বৃহতম ধর্মীয় অনুষ্ঠান দুর্গাপূজা। মুসলমানদের ধর্মীয় উৎসব ঈদুল আযহাও কড়া নাড়ছে দুয়ারে। রাজধানীর অন্যান্য টার্মিনালের মতই তাই নাড়ির টানে বাড়ি ফিরতে উপচে পড়া ভিড় গাবতলী বাস টার্মিনালে।
আর এই সুযোগটাকেই মওকা বুঝে কাজে লাগাচ্ছে দূরপাল্লার যাত্রীবাহী পরিবহনের টিকিট কাউন্টারগুলো। টিকিট প্রতি অতিরিক্ত ভাড়া আদায় করছে তারা। অধিকাংশ কাউন্টার থেকেই জানানো হচ্ছে টিকিট শেষ, কিন্তু বেশি টাকা দিলেই মিলছে ঈদের টিকিট।
সাতক্ষীরার কলারোয়াগামী যাত্রী সবুর আলী কাজ করেন মিরপুর তুংহাই সোয়েটার ফ্যাক্টরিতে। সকাল থেকেই তল্পিতল্পা নিয়ে গাবতলী টার্মিনালের এমাথা ওমাথা ঘুরে বেড়াচ্ছেন একটু অল্প টাকায় ঘরে ফেরার জন্য।
সবুর বাংলানিউজকে বলেন,‘সোমবার আমার ভাই বাড়িতে গেছে ৫২০ টাকায়। একদিনের ব্যবধানে সাতক্ষীরাগামী কে লাইন পরিবহন ৬৫০ টাকা ভাড়া চায়। তবুও বলে জাপান সিটে(পিছনের জে নাম্বার আসন) যাওয়া লাগবে।’
বাস ট্রাক ওনার্স অ্যাসেসিয়েশন(বিআরটিএ) এবার ঈদকে সামনে রেখে প্রতি কিলোমিটারের ভাড়া নির্ধারণ করেছে ১ টাকা ৪৫ পয়সায়। কিন্তু এর কোনো তোয়াক্কা করছে না কাউন্টারগুলো। প্রায় প্রতিটি কাউন্টারেই রাখা হচ্ছে বেশি ভাড়া।
ঢাকা-ঝিনাইদহগামী বাস পূর্বাশা পরিবহন। ঢাকা থেকে ঝিনাইদহের দূরত্ব ২০৬ কিলোমিটার। যাত্রী প্রতি ১ টাকা ৪৫ পয়সা কি.মি হারে ভাড়া হয় ২৯৮ টাকা ৭ পয়সা। এর সঙ্গে টোল চার্জ বা ফেরির ভাড়া চার্জ প্রায় ৬৮ টাকা ধরলে মোট ভাড়া পড়ে যাত্রী প্রতি ৩৬৬ টাকা। ১০ তারিখ থেকে বিআরটিএ’র ঈদুল আযহা উপলক্ষ্যে নির্ধারিত ভাড়া এটি।
কিন্তু পূর্বাশা পরিবহন ভাড়া রাখছে ৫৫০ টাকা। এই হিসাবে নির্ধারিত ভাড়ার চেয়ে যাত্রীপ্রতি ১৮৪ টাকা অতিরিক্ত ভাড়া রাখছে পরিবহনটি।
একটি বেসরকারি টিভি চ্যানেলের অনুষ্ঠান করতে মাগুরা সদরের ইছাকাদি যাবেন শহিদুল ইসলাম। তিনি বাংলানিউজকে বলেন,‘ আমরা শুনেছি ১০ তারিখ থেকে ঈদের ভাড়া রাখা হবে। কিন্তু পূর্বাশা পরিবহন ঢাকা থেকে মাগুরা ৫৫০ টাকা ভাড়া চাইছে’।
অতিরিক্ত ভাড়া রাখা প্রসঙ্গে কোন সদুত্তর মেলেনি পূর্বাশার কাউন্টার মাস্টার সাইফুল ইসলামের কাছ থেকে। তিনি অবশ্য দোহাই দিলেন ঈদ ও দুর্গা পূজার।
ঈদকে সামনে রেখে গাবতলীতে সোহাগ পরিবহনও অতিরিক্ত ভাড়া রাখছে। এছাড়া টিকিট সরবরাহ করেও বাসের ব্যবস্থা করতে পারছে না পরিবহন কোম্পানিটি।
খুলনাগামী যাত্রী আইএফআইসি মতিঝিল শাখার ব্যাংক কর্মকর্তা সুরাইয়া খাতুন। সোহাগ পরিবহনে ৩০০ টাকা দিয়ে ৮ তারিখের নরমাল অগ্রিম টিকিট কিনেছিলেন তিনি। কিন্তু হঠাৎ করেই সোহাগ পরিবহন কর্তৃপক্ষ জানায় খুলনাগামী ৮ তারিখের বাসটি অনিবার্য কারণ বশত বন্ধ রাখা হয়েছে। এতে করে বিপাকে পড়ে যান তিনি সহ ওই বাসটির যাত্রীরা।
সুরাইয়া বাংলানিউজকে বলেন,‘ ৮ তারিখের অগ্রিম টিকিট কেটেছি কিন্তু মঙ্গলবার হঠাৎ করে বলে বাসটি যাবে না।’
এই প্রসঙ্গে গাবতলীস্থ সোহাগ পরিবহনের কাউন্টার মাস্টার সাদ্দাম হোসেন বাংলানিউজকে বলেন,‘ খুলনার উদ্দেশ্যে প্রতিদিন ঢাকা থেকে তিনটি বাস ছেড়ে যায়। কিন্তু একটি বাস নষ্ট হয়ে গেছে। তাই সব যাত্রীকে না করে দিয়েছি।’
অতিরিক্ত ভাড়া রাখা প্রসঙ্গে তিনি বলেন,‘ আমাদের অগ্রিম টিকিটই নাই, তাহলে অতিরিক্ত ভাড়া রাখবো কি দিয়ে।’

শেয়ার করুন