বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য রফিকুল ইসলাম মিয়া বলেছেন, সরকার একতরফা নির্বাচন করার চেষ্টা করলে ‘সংগ্রাম কমিটির মাধ্যমে’ তা প্রতিহত করা হবে।
মঙ্গলবার জাতীয় প্রেস ক্লাবে দুটি আলোচনা সভায় এ কথা বলেন বিএনপির এই দুই নেতা।
অল কমিউনিটি ফোরাম আয়োজিত আলোচনা সভায় ফারুক বলেন, “সরকারের মন্ত্রীরা বলেছেন, বিএনপির আন্দোলন করার শক্তি নেই। তাদের উদ্দেশ্যে বলতে চাই, ২৪ অক্টোবরের পর দেখবেন বিএনপি আন্দোলন করতে জানে কিনা। রাজপথের আন্দোলনেই তা দেখা যাবে।”
সংবিধান অনুযায়ী, ২৪ অক্টোবর থেকে ২৪ জানুয়ারির মধ্যে বর্তমান সরকারের অধীনেই দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচন হবে, যা নিয়ে বিরোধী দলের আপত্তি।
২৪ অক্টোবর সংসদের অধিবেশন শেষ হওয়ার আগেই নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনের বিধি সংবিধানে যুক্ত করার দাবি জানিয়ে আসছে তারা। বিএনপি নেতারা বলছেন, তাদের দাবি পূরণ না হলে ২৪ জানুয়ারির পর কঠোর আন্দোলন গড়ে তোলা হবে।
বিরোধী দলীয় প্রধান হুইপ সরকারের উদ্দেশ্যে বলেন, “সংসদ নেতা ও প্রধানমন্ত্রীকে বলব, এখনো সময় আছে, নির্দলীয় সরকারের বিল পাস করুন। নইলে আন্দোলন ছাড়া আমাদের আর কোনো বিকল্প থাকবে না।”
সরকারের ‘একগুয়েমীর’ কারণে নির্বাচনকালীন সরকার নিয়ে সঙ্কট সৃষ্টি হয়েছে অভিযোগ করে তিনি বলেন, “গত সাড়ে ৪ বছরের নানা অপকর্ম, অপশাসন, দুর্নীতির কারণে সরকারি দল বুঝে গেছে, সুষ্ঠু নির্বাচন হলে তারা জিততে পারবে না। তাই বিএনপিকে বাদ দিয়ে একতরফাভাবে তারা নির্বাচন করার পায়তারা করছে।”
অন্যদের মধ্যে সাংসদ সৈয়দা আসিফা আশরাফি পাপিয়া ও অল কমিউনিটি ফোরামের উপদেষ্টা আশরাফ উদ্দিন বকুল অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন।
এদিকে প্রেস ক্লাবের কনফারেন্স লাউঞ্জে প্রাক্তণ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল ফাউন্ডেশন আয়োজিত ‘চলমান রাজনীতির সংকটে পঞ্চম সংশোধনী’ শীর্ষক আলোচনা সভায় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য রফিকুল ইসলাম মিয়া বলেন, “সরকার বুঝে গেছে, সুষ্ঠু নির্বাচন হলে তারা জিততে পারবে না। সেই জন্য সংসদ বহাল রেখে ক্ষমতায় থেকে তারা নির্বাচন করতে চায়।”
পঞ্চদশ সংশোধনীর বিধান উল্লেখ করে নিজেদের দাবির যৌক্তিকতা ব্যাখ্যা করে তিনি বলেন, “সংবিধানের ১২৩ এর ৩ এর (খ) ধারা অনুযায়ী প্রধানমন্ত্রী ইচ্ছা করলে নির্বাচনের ফল বাতিল করতে পারেন। তাই সংসদ বহাল রাখার এই বিধানে সংশোধনী আনতে হবে।”
সরকার এককভাবে নির্বাচন করতে চাইলে ‘সংগ্রাম কমিটি’ করে তা প্রতিহত করা হবে বলেও হুঁশিয়ার করেন তিনি।
গত শনিবার সিলেটে এক জনসভায় বিরোধী দলীয় নেতা ‘একতরফা ভোট ঠেকাত ‘ কেন্দ্রভিত্তিক এই সংগ্রাম কমিটি করার আহ্বান জানান।
এ বিষয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর বক্তব্যের সমালোচনা করে রফিকুল ইসলাম মিয়া বলেন, “আজকের স্বারাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছেন, আন্দোলন দমন করা হবে। তাকে স্মরণ করিয়ে দিতে চাই নব্বইয়ে স্বৈরাচার এরশাদের পতন আন্দোলনের সময়ের কথা। তিনি তখন সরকারি আমলা ছিলেন। জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে নির্মিত জনতার মঞ্চে তার নেতৃত্বেই সচিবালয়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা সরকারের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছিলেন।”
সেই ‘জনতার মঞ্চ’ যদি অবৈধ না হয়, তাহলে এখন ‘একদলীয় নির্বাচনের বিরুদ্ধে অবস্থান নিলে’- তা অবৈধ কেন হবে- স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর কাছে তা জানতে চান রফিকুল।
প্রাক্তণ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল ফাউন্ডেশনের আহ্বায়ক আলী আকবর চুন্নুর সভাপতিত্বে অন্যদের মধ্যে সংগঠনের যুগ্ম আহ্বায়ক রফিকুল ইসলাম মাসুম, মশিউর রহমান বাবুল ও আব্দুর রউফ আলোচনা সভায় বক্তব্য দেন।