পৃথিবীর প্রায় আড়াই শ’ দেশের মধ্যে ফিফার তালিকাভুক্ত দেশের সংখ্যাই ২০৭টি। অর্থাৎ এই ২০৭টি দেশে নিয়মিত ফুটবল হয়। যার মধ্যে ৩২টি দেশ অংশ নেয় বিশ্বকাপ ফুটবলে, যা অনুষ্ঠিত হয় প্রতি চার বছর অন্তর অন্তর। এযাবৎকালে অনুষ্ঠিত ১৯টি বিশ্বকাপের সর্বাধিক পাঁচবার চ্যাম্পিয়ন হয়েছে পেলের দেশ ব্রাজিল। চারটি শিরোপা ঘরে তুলেছে ইটালি ও তিনটি জার্মানি। উরুগুয়ে ও আর্জেন্টিনার সুভাগ্য হয়েছে দুইবার করে বিশ্বকাপ ট্রফিটি ছুঁয়ে দেখার। এছাড়া ইংল্যান্ড, ফ্রান্স ও স্পেন একবার করে বিশ্বকাপ ফুটবলের শিরোপা জিতেছে। পৃথিবীর এই আটদেশ ব্যতীত বিশ্বকাপ ট্রফি সরাসরি দেখার সুভাগ্য কম দেশের ফুটবল প্রেমীদের কপালেই জুটেছে। এবার অধরা বিশ্বকাপ ট্রফিটি ফুটবলে অনুন্নত দেশগুলের দর্শকদের দেখার সুযোগ করে দিচ্ছে কোকাকোলা। তারই ধারাবাহিকতায় রেপলিকা নয়, আসল ট্রফিটি ঢাকায় আসছে ১৭ ডিসেম্বর। সংযুক্ত আরব আমিরাত থেকে ঢাকায় আসবে বিশ্বকাপ ট্রফিটি। তিনদিন বাংলাদেশে থাকার পর ট্রফির গন্তব্য হবে ভুটান। গতকাল হোটেল রূপসি বাংলায় বিশ্বকাপ ট্রফি ট্যুরের আনুষ্ঠানিক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য দেন কোকাকোলোর ক্যান্ট্রি ম্যানেজার দেবাশীষ দেব। ট্রফিটি ঢাকায় তিনদিন থাকলেও ট্রফি নিয়ে কি কি থাকছে তা কিছুই জানাতে পারেননি কোকাকোলার এই কর্মকর্তা। অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি বাফুফে সভাপতি কাজী মো. সালাউদ্দিন বিশ্বকাপ ট্রফির আগমনকে দেখছেন ভিশন ২০২২ বাস্তবায়নে সহায়ক শক্তি হিসেবে। তার আশা, এই ট্রফি আগমনের মধ্য দিয়ে দেশে আবার ফুটবল উন্মাদনা তৈরি হবে।
এর আগে ২০০৬ সালে ঢাকায় এসেছিল বিশ্বকাপ ট্রফি। ট্রফিটি ঢাকা ঘুরে যাওয়ার পর জানা যায় এটি ছিল রেপলিকা। এবার তেমনটি হবে না বলে জানিয়েছেন কোকাকোলা ফার ইস্ট লিমিটেডের ক্যান্ট্রি ম্যানেজার দেবাশীষ দেব। তিনি জানান, এবারই ফিফার সহযোগিতায় ব্রাজিল বিশ্বকাপের আগে সারা পৃথিবীতে ফুটবলের উন্মাদনা সৃষ্টির লক্ষ্যে ট্রফিটি ৮৮ দেশ ভ্রমণ করবে। যার পার্টনার হিসেবে থাকবে কোকাকোলা। গত ১২ই সেপ্টেম্বর ফিফা ওয়ার্ল্ডকাপ ট্রফি ট্যুর-এর অফিসিয়াল উদ্বোধন হয় ব্রাজিলের শহর রিওডি জেনিরো-এর বিশ্বখ্যাত স্ট্যাচু ক্রাইস্ট দ্য রিডিমারের সামনে। এর উদ্বোধন করেন ফিফা ওয়ার্ল্ড কাপের মহাব্যবস্থাপক মিশেল ডেভিডোভিচ ও ৫টি বিশ্বকাপ জয়ী ব্রাজিল দলের ৫ জন সেরা তারকা জাগালো (১৯৫৮), আমারিন্তো (১৯৬২), রিভোলিনো (১৯৭০), বেবেতো (১৯৯৪) এবং মার্কোস (২০০২)। ট্রফি আগমন উপলক্ষে রুপসি বাংলায় অনুষ্ঠিত অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি বাফুফে সভাপতি বলেন, ফুটবলের সেরা প্রতীকটি বাংলাদেশে প্রথমবারের মতো আনতে পারবো এটা ভেবে আমরা সবাই অত্যন্ত আনন্দিত। বাংলাদেশের লাখো ফুটবলপ্রেমীদের তাদের নিজ দেশের মাটিতে ফিফা ট্রফিটি দেখার এক অনন্য সুযোগ করে দিচ্ছে, যা কিনা আমাদের ফুটবল খেলার প্রতি আরও বেশি উৎসাহিত করে তুলবে।’ বিশ্বকাপ ট্রফিটি সরাসরি দেখেননি উল্লেখ্য করে সালাউদ্দিন বলেন এটি আমাদের দেশের তরুণ ফুটবলারদের মধ্যে নতুন এক উন্মাদনা সৃষ্টি করবে। কোকাকোলা সুযোগ করে দিলে বিশ্বকাপ ট্রফির আগমনকে কাজে লাগিয়ে বাচ্চাদের নিয়ে ফুটবল ফ্যাস্টিবল করার ইচ্ছার কথাও জানান বাফুফে বস। একই সঙ্গে দেশের ইয়ুথ ফুটবল উন্নয়নে কোকাকোলার পৃষ্ঠপোষকতা চান সালাউদ্দিন। কোকাকোলার ক্যান্ট্রি ম্যানেজার দেবাশীষ দেব সালাউদ্দিনের প্রস্তাব সানন্দে গ্রহণ করে ইয়ুথ ফুটবলের পাশে থাকার ইচচ্ছা পোষণ করেন।