‘গ্রেনেড উদ্ধার সম্পূর্ণ সাজানো নাটক’

0
168
Print Friendly, PDF & Email

হাটহাজারিতে কওমী মাদরাসা সংরক্ষন পরিষদের নেতারা বলেন, “গতকাল লালখান বাজার মাদ্রাসায় বিস্ফোরণের যে ঘটনা ঘটেছে, তা সম্পূর্ণ ষড়যন্ত্রমূলক ও সাজানো নাটক। নাস্তিক্যবাদের সহায়ক ক্ষমতাসীন মহল দীর্ঘ দিন ধরেই ইসলামের মৌলিক আক্বিদা-বিশ্বাসের ধারক-বাহক প্রচারে ব্রত দেশের ক্বওমী মাদ্রাসাসমূহ বন্ধ করার জন্য ষড়যন্ত্র চালিয়ে আসছে। তারা কখনো বোমাবাজির নাটক সাজানোর প্রয়াস চালাচ্ছে, কখনো কথিত জঙ্গীবাদের ধুয়া তুলছে নানা অপপ্রচার চালাচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী পুত্র সজিব ওয়াজে জয় গত কিছু দিন আগে প্রকাশ্যেই ক্বওমী মাদ্রাসা বন্ধের হুমকি দিয়েছে। লালখান বাজার মাদ্রাসায় বিস্ফোরণের ঘটনা ক্বওমী মাদ্রাসা বন্ধের ষড়যন্ত্রেরই অংশ।

বক্তারা বলেন, “যেখানে বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে, সেখানে আইপিএস এর ব্যাটারী ছাড়া আর কিছুই ছিল না।”

হেফাজতে ইসলামের দূর্গ বলে খ্যাত হাটহাজারীতে ‘ষড়যন্ত্রমূলক বিস্ফোরণ’ ঘটিয়ে মাদরাসা বন্ধের ষড়যন্ত্র ও ‘মিথ্যা অপপ্রচারের’ প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিল ও প্রতিবাদ সভার আয়োজন করেছে কওমী মাদরাসা সংরক্ষন পরিষদ হাটহাজারী শাখা। নেজাম ইসলাম পার্টির সভাপতি মুফতি ইজহারুল ইসলাম চৌধুরী পরিচালিত লালখান বাজার জামেয়াতুল উলুম মাদরাসায় এ ঘটনা ঘটে। মঙ্গলবার সেখান থেকে আইন শৃঙ্খলা বাহিনী গ্রেনেডের খোসা উদ্ধার করে।

মিছিলটি হাটহাজারী সদরের গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ করে ডাক বাংলো চত্ত্বরে এসে প্রতিবাদ সভার মাধ্যমে শেষ হয়। মিছিলে প্রায় দশ সহস্রাধিক উলামা-মাশায়েখ, মাদ্রাসা ছাত্র ও তৌহিদী জনতা অংশগ্রহণ করে।

সমাবেশে বক্তারা আরো বলেন, “রহস্যজনক বিস্ফোরণের পর পরই মাদরাসা বিরোধী শ্লোগান দিয়ে ব্যানারসহ মিছিল বের করা হয়। এটা যে সম্পূর্ণ সাজানো নাটক এ থেকেই বুঝা যায়। বিস্ফোরণের পরপরই তারা ব্যানার ফেল কোথায়?”

তারা বলেন, “সরকারের জুলুম-নির্যাতন বিরোধী বলিষ্ঠ কণ্ঠস্বর হেফাজত নেতা মুফতি ইজহারুল ইসলামের হাতকে দুর্বল করার জন্যই এ ষড়যন্ত্রের ফাঁদ পাতা হয়েছে। পাশাপাশি ক্বওমী মাদ্রাসা বিরোধী ষড়যন্ত্রেরও এটা এক বিরাট অংশ।”

হেফাজত নেতা মাওলানা মীর ইদরীস বলেন, “হেফাজতের ঈমানী আন্দোলনকে স্তব্ধ করার হীন উদ্দেশ্যে সরকার ক্বওমী মাদ্রাসা শিক্ষা কর্তৃপক্ষ আইন সংসদে পাস করতে চলেছে। এর পথে হেফাজতে ইসলাম বড় বাধা। হেফাজতের সংগ্রামী নেতা মুফতি ইজহারুল ইসলামকে নিষ্ক্রিয় করার জন্যই তার মাদরাসায় বিস্ফোরণ নাটক সাজানো হয়েছে। বহিরাগত ক্যাডার ও কিছু ভিন্ন ধর্মাবলম্বী পুলিশ কর্মকর্তঅর যোগসাজসে নিরীহ মাদ্রসাা ছাত্রদের উপর হামলা চালানো হয়েছে। ক্ষমতাসীন দলের ক্যাডাররা মাদ্রাসা ঘিরে রাখে এবং পুলিশ মাদ্রাসা থেকে সকল ছাত্র শিক্ষককে বের করে দিয়ে মাদ্রাসা তাদের কবজায় নিয়ে নেয়।”

‘ষড়যন্ত্রকারী’দের হুঁশিয়ার করে তিনি বলেন, “আল্লাহ-রাসূলের অবমাননা এবং ইসলাম, আলেম-উলামা ও মাদ্রাসা বিরোধী সকল ষড়যন্ত্র অবিলম্বে বন্ধ করুন। ষড়যন্ত্র করে গণবিস্ফোরণ ঠেকানো যাবে না। ক্ষমতার শেষ সময়ে মাদ্রাসা, মসজিদ, আলেম সমাজ ও নিরীহ তৌহিদী জনতার উপর হাত দিয়ে কেউ যেন গণরোষের বারুদে আগুন না লাগান, সেই অনুরোধ করব।”

সভাপতির বক্তব্যে হেফাজতে ইসলামের কেন্দ্রীয় নায়েবে আমীর আল্লামা শামসুল আলম বলেন, “মুফতি ওয়াক্কাসকে মুক্তি না দিয়ে সরকার এখন মুফতি ইজহার সাহেবকেও আটক করে হেফাজতের ঈমানী আন্দোলনকে নস্যাত করার ষড়যন্ত্র করছে। পাশাপাশি ক্বওমী মাদ্রাসা নিয়ন্ত্রণের চক্রান্তকে আরো বেগবান করার জন্য এক ঢিলে দুই পাখী শিকারের উদ্দেশ্যে লালখান বাজার মাদ্রাসায় বিস্ফোরণের কথিত নাটক সাজিয়েছে। জনগণ এসব অপপ্রচারকে বিশ্বাস করে না।”

তিনি বলেন, “উদ্ভূত পরিস্থিতির সকল দায়দায়িত্ব ক্ষমতাসীন দলকেই বহন করতে হবে। নিরীহ মাদ্রাসা ছাত্রদের উপর হামলা, বিস্ফোরণের সাজানো নাটক ও অপপ্রচার, মাদ্রাসা বন্ধ করে দেওয়া এবং মিডিয়া সন্ত্রাস তৌহিদী জনতা চুপ করে সহ্য করবে না।”

সরকারের প্রতি জোর দাবি জানিয়ে বলেন, “সকল মিথ্যা অপপ্রচার বন্ধ করে অবিলম্বে চট্টগ্রামের ঐতিহ্যবাহি লালখান বাজার মাদ্রাসা থেকে পুলিশ প্রত্যাহার করে মাদ্রাসায় স্বাভাবিক পরিবেশ নিশ্চিত করুন। অন্যথায় এদেশের কোটি কোটি তৌহিদী জনতা আপনাদেরকে ইসলামের দুশমন হিসেবেই চিহ্নিত করবে।”

হেফাজতে ইসলামের কেন্দ্রীয় নায়েবে আমীর ও হাটহাজারী মাদ্রাসার প্রবীণ মুহাদ্দিস আল্লামা হাফেজ শামসুল আলম এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত প্রতিবাদ সভায় বক্তব্য রাখেন, হেফাজতে ইসলাম হাটহাজারী পৌরসভার সভাপতি মাওলানা মীর ইদরীস, মাওলানা জাকারিয়া নোমান ফয়জী, মাওলানা জাহাঙ্গীর আলম মেহদী, মাওলানা হাবীবুল হক বাবু, মাওলানা হাফেজ আমিনুল হক, মাওলানা তাজুল ইসলাম মাওলানা এমরান, মাওলানা আলমগীর, মাওলানা জুনাইদ বিন ইয়াহইয়া, মাওলানা কামরুল ইসলাম, মাওলানা সিরাজুল ইসলাম, হাফেজ বশির আহমদ ও আতিকুল্লাহ প্রমুখ।

শেয়ার করুন