সংবিধান অনুযায়ী আগামী নির্বাচন

0
148
Print Friendly, PDF & Email

সংবিধান অনুযায়ী আগামী নির্বাচন হবে জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, সেই নির্বাচনে জনগণ ভোট দেবে।সংবিধান অনুযায়ী আগামী নির্বাচন
জনগণই ঠিক করবে কারা ক্ষমতায় আসবে। উন্নয়নের অগ্রযাত্রা অব্যাহত রাখতে আওয়ামী লীগকে আবারও ক্ষমতায় আনতে দেশবাসীর প্রতি আহবান জানিয়ে তিনি বলেন, আওয়ামী লীগকে আরেকবার ক্ষমতায় আনতে নেতা-কর্মীদের ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে হবে। যুদ্ধাপরাধীদের বিচার যাতে বন্ধ না হয়, এ বিচার শেষ করে জাতিকে যাতে কলঙ্ককমুক্ত করা যায় সে জন্যই দলকে ক্ষমতায় আনতে হবে। রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণকে ঘিরে বিরোধীদলীয় নেতা বেগম খালেদা জিয়ার সাম্প্রতিক বক্তব্যেরও জবাব দেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, মানুষের জন্য দরদ নাই, এখন সুন্দরবনের জন্য এত মায়াকান্না কেন, সেটাই আমরা বুঝি না। একপক্ষ লংমার্চ করেন, আর বিরোধীদলীয় নেতাও বলেছেন এটা হতে দেবেন না। গতকাল বিকালে গণভবনে অনুষ্ঠিত ঠাকুরগাঁও, কক্সবাজার, বাগেরহাট, গাইবান্ধা, ফেনী, সিরাজগঞ্জ, মুন্সীগঞ্জ জেলায় দলের প্রার্থী বাছাইয়ে ধারাবাহিক মতবিনিময় সভার সূচনা বক্তব্যে শেখ হাসিনা রামপালে কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র হতে না দেওয়ার বিরোধীদলীয় নেতা খালেদা জিয়ার হুমকির সমালোচনা করে বলেন, বিরোধীদলীয় নেতা দেশের উন্নয়ন চান না বলেই রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্রের বিরোধিতা করছেন। মানুষকে মিথ্যা কথা বলে বিভ্রান্ত করা যেমন তার চরিত্র, তেমনি আরেকটি চরিত্র হচ্ছে তিনি দেশের উন্নয়ন পছন্দ করেন না। শেখ হাসিনা বলেন, সরকারের উন্নয়নকাজ পছন্দ নয় বলেই বিরোধীদলীয় নেতা প্রতিনিয়ত সরকার হটানোর হুমকি দিচ্ছেন। তিনি বলেছেন ক্ষমতায় গেলে নাকি ভিন্নধারার সরকার পরিচালনা করবেন। ক্ষমতায় থাকতে তিনি হাওয়া ভবন খুলে দুর্নীতি ও মানুষের সম্পদ লুটপাট করে বিদেশে পাচার করেছেন। আবারও ক্ষমতায় এলে হাওয়া ভবনের বদলে নতুন ভবন খুলে নতুন প্রক্রিয়ায় ও ভিন্নধারায় দুর্নীতি করবেন। তিনি তো এখন জামায়াত ও হেফাজতকে সঙ্গে নিয়ে রাজনীতি করছেন। সেখানে তো তেঁতুল তত্ত্বও হাজির করেছেন। তার মানে ক্ষমতায় গেলে তিনি মেয়েদের লেখাপড়াও বন্ধ করে দেবেন, দেশকে অন্ধকারের দিকে নিয়ে যাবেন। প্রধানমন্ত্রী বলেন, দেশ পুরস্কৃত হলে তার ভালো লাগে না, তিরস্কৃত হলেই ভালো লাগে। কেননা তিনি ক্ষমতায় থাকতে দেশকে সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদের দেশে পরিণত করেছেন। দুর্নীতিতে পাঁচবার চ্যাম্পিয়ন করেছেন।

খালেদা জিয়াকে ইঙ্গিত করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, যার চুরি করার অভ্যাস তিনি সবাইকে চোর ভাবেন। যে নিজে মানুষ খুন করে, তিনি অন্য সবাইকে খুনি ভাবেন। তিনি বলেন, ৫টি সিটি করপোরেশন নির্বাচন হয়েছে। নির্বাচনে বিএনপি সমর্থিত প্রার্থী বিজয়ী হয়েছেন। অথচ বিজয়ী প্রার্থীদের সঙ্গে নিয়ে বিএনপি নেত্রী বলেছেন, এ সরকারের অধীনে কোনো নির্বাচন সুষ্ঠু হয়নি। তাহলে তাদের প্রার্থী জিতল কী করে। তিনি বলেন, মানুষ শান্তিতে থাকলেও অশান্তিতে আছেন একজনই। তিনি হচ্ছেন বিরোধীদলীয় নেতা।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, যুদ্ধাপরাধীদের বিচার হচ্ছে, রায়ও আসছে। ইনশাল্লাহ এ রায় অবশ্যই কার্যকর হবেই। মতবিনিময় সভায় দলের কেন্দ্রীয় নেতাদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন এইচটি ইমাম, মোহাম্মদ নাসিম, সতীশ চন্দ্র রায়, কাজী জাফরউল্লাহ, নূহ-উল-আলম লেনিন, ইঞ্জিনিয়ার মোশারফ হোসেন, মাহবুব-উল আলম হানিফ, আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন, বদিউজ্জামান ভুঁইয়া ডাবলু, ফরিদুন্নাহার লাইলী, ফজিলাতুন্নেছা ইন্দিরা, মাহমুদ হাসান রিপন, বদিউজ্জামান সোহাগ প্রমুখ।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ঝিনাইদহে যাচ্ছেন আজ : প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের সভানেত্রী শেখ হাসিনা আজ ঝিনাইদহে আসছেন। বিকাল ৩টায় তিনি ঝিনাইদহ সরকারি বালক বিদ্যালয় মাঠে জেলা আওয়ামী লীগ আয়োজিত জনসভায় প্রধান অতিথি হিসেবে ভাষণ দেবেন। এ উপলক্ষে ব্যাপক প্রস্তুতি গ্রহণ করেছে স্থানীয় প্রশাসন ও জেলা আওয়ামী লীগ। প্রধানমন্ত্রীর ঝিনাইদহ সফরকে দলীয় নেতা-কর্মীরা ভিন্নদৃষ্টিতে দেখছেন। আশা করা হচ্ছে প্রধানমন্ত্রী দলের কোন্দল নিরসন এবং জেলা-উপজেলা ও ইউনিয়ন পর্যায়ে পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠনের দিক নির্দেশনা দিতে পারেন। সূত্র জানায়, ঝিনাইদহ জেলা আওয়ামী লীগে কোনো নিয়ন্ত্রণ নেই। দলের লেবাস গায়ে জড়িয়ে অধিকাংশ নেতা অপকর্ম করে কোটিপতি, বিলাস বহুল বাড়ি-গাড়ির মালিক হয়েছেন। ৮ বছর আগে ঝিনাইদহ জেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলন হলেও সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক ছাড়া জেলার ৬টি উপজেলায় পূর্ণাঙ্গ কোনো কমিটি গঠন করা হয়নি। এ অবস্থায় দলের হাল ধরার মতো যোগ্য নেতৃত্ব গড়ে ওঠেনি। যারা আছেন তারা নিজেদের আখের গোছাতে ব্যস্ত থাকেন। প্রধানমন্ত্রীর আগমন এবং গুরুত্বপূর্ণ দিক নির্দেশনার মাধ্যমে দলের অভ্যন্তরীণ যাবতীয় অনিয়ম ও কোন্দল নিরসন হবে এ প্রত্যাশা দলীয় নেতা-কর্মীদের।

শেয়ার করুন