মানবতাবিরোধী অপরাধে দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাউদ্দিন কাদের (সাকা) চৌধুরীর ফাঁসির রায়ে বিস্ময় প্রকাশ করেছে প্রধান বিরোধী দল বিএনপি। দলটি মনে করে, সালাউদ্দিন কাদের সুবিচার পাননি। এই রায় গ্রহণযোগ্যতা হারিয়েছে।
গতকাল বুধবার বিকেলে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করে দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাউদ্দিন কাদেরের বিরুদ্ধে রায়ের পরিপ্রেক্ষিতে দলীয় অবস্থান তুলে ধরে বিএনপি।
বিএনপি বলেছে, বিচারের নামে রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে নির্মূলের ষড়যন্ত্র হচ্ছে। রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে নির্মূলের চেষ্টা ও গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানকে ধ্বংসের প্রতিবাদে আজ বৃহস্পতিবার সারা দেশে বিক্ষোভ সমাবেশ কর্মসূচি ঘোষণা করেছে বিএনপি। ঢাকায় আজ বেলা তিনটায় সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সমাবেশ অনুষ্ঠিত হবে।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। এ সময় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মওদুদ আহমদ, রফিকুল ইসলাম মিয়া, এম কে আনোয়ার, বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা জয়নুল আবেদীন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। কিন্তু তাঁরা কেউ সাংবাদিকদের কোনো প্রশ্নের উত্তর দেননি।
লিখিত বক্তব্যে মির্জা ফখরুল বলেন, বিএনপি মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচারের পক্ষে। তবে তা হতে হবে স্বচ্ছ, নিরপেক্ষ ও আন্তর্জাতিক মান বজায় রেখে। কিন্তু নানা ঘটনায় আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের গঠন ও এর বিচার নিয়ে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। এই বিচারের মাধ্যমে প্রমাণিত হয়েছে, রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে নির্মূল করার ষড়যন্ত্র করার জন্য বিচার চলছে।
মির্জা ফখরুল দাবি করেন, দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর রায় নিয়ে স্কাইপ কেলেঙ্কারি ও সালাউদ্দিন কাদেরের রায় ঘোষণার আগেই তা ইন্টারনেটে প্রকাশিত হওয়ায় এই রায় জনগণের কাছে গ্রহণযোগ্যতা হারিয়েছে। ফাঁস হওয়া তথ্য অনুযায়ী পয়লা অক্টোবর ঘোষণা করা রায় এ বছরের মে মাসে লেখা হয়েছে। অথচ ওই সময় মামলার শুনানি চলছিল। সাক্ষ্যগ্রহণ হচ্ছিল। বিচারিক ইতিহাসে এটা নজিরবিহীন ঘটনা। তিনি বলেন, দুজন সাক্ষীকে সাক্ষ্য দেওয়ার অনুমতি দেওয়া হয়নি। তাঁদের মধ্যে একজন হলেন বিচারপতি। তিনি সাক্ষ্য দেওয়ার জন্য অনুমতি চেয়েছিলেন। কয়েকজন সাক্ষী হলফনামার মাধ্যমে বলেছেন, সাকা চৌধুরী ২৯ মার্চ থেকে অক্টোবর পর্যন্ত পাকিস্তানে ছিলেন এবং সেখান থেকে লন্ডনে চলে যান। অথচ যে অপরাধে সাকা চৌধুরীর মৃত্যুদণ্ড হয়েছে, সেগুলো সংঘটিত হয়েছে ১৩ এপ্রিল থেকে জুলাইয়ের মধ্যে। সাক্ষীরা সাকা চৌধুরীর বাংলাদেশে অবস্থান না করার কথা বললেও তা আমলে নেওয়া হয়নি।
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব বলেন, প্রাপ্ত তথ্যাবলির কারণে বিএনপি মনে করে, সাকা চৌধুরী সুবিচার পাননি। রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ নির্মূলের ষড়যন্ত্রে বিএনপি নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছে। তিনি দাবি করেন, আইন মন্ত্রণালয়ের সচিবের কম্পিউটার থেকে রায় ফাঁস হয়েছে। এটা স্বীকার করে ট্রাইব্যুনালের রেজিস্ট্রার থানায় জিডি করেছেন।