অশ্রুসিক্ত চোখে জড়িতদের গ্রেপ্তার চাইলেন স্বজনেরা

0
126
Print Friendly, PDF & Email

রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে অঝোরে কাঁদছেন জাহিদ আল লতিফ ও তাঁর স্ত্রী শামসুন নাহার ফেরদৌসী। একমাত্র ছেলে বখতিয়ার লতিফ হত্যার ঘটনায় একদিকে তাঁরা যেমন শোকাহত-আতঙ্কিত, অন্যদিকে চরম হতাশ। কারণ আট দিন হয়ে গেলেও এখনো পর্যন্ত জড়িত কাউকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি পুলিশ। তাই ছেলে হত্যার বিচার চাইতে এ দম্পতি নেমে এসেছেন রাস্তায়। তাঁদের সঙ্গে যোগ দিয়েছেন বখতিয়ারের বন্ধু-বান্ধব ও আত্মীয়স্বজন। ব্যানার আর প্ল্যাকার্ড নিয়ে দাঁড়িয়ে মানববন্ধন করে হত্যাকারীদের দ্রুত গ্রেপ্তারের দাবি জানিয়েছেন তাঁরা। গতকাল শুক্রবার এ মানববন্ধন হয়। গত ১২ সেপ্টেম্বর গভীর রাতে রাজধানীর উত্তর যাত্রাবাড়ীতে বাসায় ঢুকে এ লেভেল পড়ুয়া বখতিয়ারকে গুলি করে হত্যা করে দুর্বৃত্তরা। এ ঘটনায় নিহত ছাত্রের বাবা জাহিদ বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা আসামিদের বিরুদ্ধে ডাকাতিসহ খুনের অপরাধে মামলা করেন। মামলার এজাহার অনুযায়ী, ডাকাতির উদ্দেশে কয়েকজন যুবক বাসায় ঢুকে বখতিয়ারকে গুলি করে। ডাকাতের দল বেশকিছু স্বর্ণালংকারও নিয়ে যায়। ঘটনার পর পুলিশ ওই বাসার গৃহকর্মী মোছাম্মত চম্পার স্বামী মো. রাসেলকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য নিয়ে যায়। গত ১৪ সেপ্টেম্বর মামলাটি ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) কাছে হস্তান্তর করা হয়। তবে এখন পর্যন্ত কেউ গ্রেপ্তার হয়নি। মানববন্ধনে দাঁড়িয়ে চোখের পানি ফেলে শামসুন নাহার বললেন, ‘আমার সামনে আমার ছেলেটাকে গুলি করে মারা হলো। এখন আমি ছেলে হত্যার সুষ্ঠু বিচার চাই।’ বখতিয়ারের বাবা জাহিদ বলেন, ‘আমরা বিশ্বাস করি পুলিশ চাইলে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে যেকোনো অপরাধীকে ধরতে পারে। কিন্তু আমার ছেলের হত্যার ঘটনায় এখনো পর্যন্ত কেউ গ্রেপ্তার না হওয়ায় আমার এ বিশ্বাস নষ্ট হয়ে যাচ্ছে।’ তিনি বলেন, ‘পুলিশকে ফোন করলে বলে, কাজ করছি। আমরা এখনো আশ্বাসের ওপরই আছি।’ ‘মায়ের বেডরুমে একমাত্র সন্তান খুন, সন্তান নিরাপদ কোথায়?’, ‘বখতিয়ার হতে পারত আপনার পরিবারের কেউ’—এ ধরনের লেখাসংবলিত প্ল্যাকার্ড নিয়ে মানববন্ধনে অংশ নেন বখতিয়ারের স্বজন ও বন্ধু-বান্ধবেরা। মানববন্ধন শেষে বখতিয়ারের ফুফু সাংবাদিক শারমিন রিনভী বলেন, পুলিশ এখন তাঁদের সঙ্গে কোনো যোগাযোগ করছে না। ফোন করলেও ধরছে না। কী তদন্ত হচ্ছে, কোনো কিছু জানা গেল কি না—এসব ব্যাপারে কোনো তথ্য পাচ্ছেন না তাঁরা।
জানতে চাইলে ডিবির (পূর্ব) উপকমিশনার জাহাঙ্গীর হোসেন মাতুব্বর প্রথম আলোকে বলেন, ‘পরিবারের পক্ষ থেকে এ ঘটনায় কাউকে সন্দেহ করা হয়নি। সেই হিসেবে এটি একটি সূত্রহীন ঘটনা। তদন্ত করে শতভাগ নিশ্চিত হওয়ার পর আমরা গ্রেপ্তার অভিযান চালাব। তদন্ত অনেকদূর এগিয়ে গেছে। আশা করি দ্রুত সাফল্য আসবে।’

শেয়ার করুন