জামায়াতকে সন্ত্রাসী সংগঠন উল্লেখ করে সংগঠনটিকে নিষিদ্ধ করতে একটি জাতীয় ঐতিহাসিক চুক্তি সম্পাদনে বিরোধী দলীয় নেত্রী খালেদা জিয়াকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়েছেন তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু এমপি।
মঙ্গলবার দুপুরে সচিবালয়ে নিজ দফতরে এক সংবাদ সম্মেলনে খালেদা জিয়ার প্রতি এ আহ্বান জানান তথ্যমন্ত্রী।
তথ্যমন্ত্রী বলেন, সময় এসেছে জামায়াতের মতো জঙ্গিবাদী, সশস্ত্র অন্তর্ঘাতমূলক সংগঠনের রাজনীতি নিষিদ্ধ করা। একই সঙ্গে জামায়াত, সাম্প্রদায়িক জঙ্গিবাদী যুদ্ধাপরাধীদের রাজনীতির অঙ্গন থেকে বর্জনের জন্য একটি ঐতিহাসিক জাতীয় চুক্তি সম্পাদনের সময় এসেছে। আশা করি, সেই চুক্তিতে খালেদা জিয়া এগিয়ে আসবেন।
সাম্প্রতিক সময়ে জামায়াতের হরতালে মানুষ পুড়িয়ে মারার ঘটনায় বিরোধী দলীয় নেত্রীর নীরবতারও সমালোচনা করেন তথ্যমন্ত্রী।
তথ্যমন্ত্রী বলেন, আমরা আশা করবো, পক্ষপাতিত্বের রাজনীতির মধ্য থেকে বেরিয়ে এসে তিনি জামায়াতের নাশকতার বিরুদ্ধে মুখ খুলবেন ও তাদের বর্জনের সিদ্ধান্ত নেবেন।
তথ্যমন্ত্রী বলেন, আদালত জামায়াতের নিবন্ধন বাতিল করেছেন। আইনানুগ, সাংবিধানিক, প্রশাসনিকভাবে একটি দলকে যেভাবে নিষিদ্ধ করতে হয়, আমরা সে পথে এগোচ্ছি। তাদের দিন ফুরিয়ে এসেছে। রাজনীতির মাঠ থেকে জামায়াতকে আইনানুগভাবে বিদায় জানানো হবে।
সংসদের মেয়াদ শেষ হওয়ার আগে জামায়াতকে নিষিদ্ধ করা যাবে কিনা- জানতে চাইলে মন্ত্রী বলেন, নির্বাচনকালীন সময়ে যে সরকার ক্ষমতায় থাকে সেই সরকার মৌলিক কোনো সিদ্ধান্ত নেয় না। যখন নির্বাচনকালীন সময় শুরু হবে তার আগ পর্যন্ত সরকার তার মৌলিক ও প্রশাসনিক কাজ চালিয়ে যাবে। জামায়াত নিষিদ্ধ প্রশাসনিক সিদ্ধান্ত। নির্বাচনের সঙ্গে নিষিদ্ধ করার সম্পর্ক নেই। প্রশাসন সময় মতো প্রশাসনিক সিদ্ধান্ত নেবে।
তথ্যমন্ত্রী বলেন, কাদের মোল্লার রায়ের পর তাকে বাঁচানোর জন্য জামায়াত প্রকাশ্য আদালতের বিচার না মেনে হরতাল ও বিক্ষোভ করে মানুষ পুড়িয়ে মেরেছে। তারা চোরাগোপ্তা ও অতর্কিত হামলা চালিয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
তিনি বলেন, জামায়াতের সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের তথ্য-উপাত্ত লিপিবদ্ধ করা হচ্ছে। প্রশাসন সময় মতো গণতান্ত্রিক রীতি-নীতির প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে সিদ্ধান্ত নেবে, যাতে আদালত অভিযোগ তুলতে না পারেন। সশস্ত্র সংগঠন জামায়াতের বিরুদ্ধে আটঘাট বেঁধে সিদ্ধান্ত নেবে সরকার।
তথ্যমন্ত্রী দেশের সুশীল সমাজের প্রতিনিধিদের জামায়াতের সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে বিবৃতি দেওয়ারও আহ্বান জানান। এছাড়া সন্ত্রাসী সংগঠন জামায়াত সম্পর্কে সতর্ক হয়ে তাদের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানোর জন্য দেশবাসীর প্রতি আহ্বান জানান।
বন্ধ হয়ে যাওয়া আমার দেশ, দিগন্ত টিভি এবং ইসলামী টেলিভিশন চালু করা হবে কিনা- এমন প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, আমার দেশ পত্রিকার ঘোষণাপত্র বাতিল করা হয়নি। তারা জেলা প্রশাসনের সঙ্গে যোগাযোগ করে পত্রিকা বের করতে পারবে।
চ্যানেল দু’টি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আমরা চ্যানেল কর্তৃপক্ষের জবাব পেয়েছি। এ ব্যাপারে দ্রুত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।