পোশাক খাতের শ্রমিকের ন্যূনতম মজুরি পাঁচ হাজার টাকা হতে পারে। সরকারের সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের মধ্যে এ রকম আলোচনা রয়েছে বলে একাধিক বিশ্বস্ত সূত্রে জানা গেছে।
তবে তৈরি পোশাকশিল্পের মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএ সাড়ে চার হাজার টাকা পর্যন্ত ন্যূনতম মজুরি দেওয়ার বিষয়ে নিজেদের মধ্যে আলোচনা করেছে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে। তবে কোনো পক্ষ এখনই নাম প্রকাশ করে এ বিষয়ে কথা বলতে রাজি হয়নি।
বিজিএমইএ সূত্রগুলো জানায়, তারা ন্যূনতম তিন হাজার ৬০০ টাকার মজুরি প্রস্তাবটি করেছে কৌশলগত কারণে। মজুরি বোর্ডে শ্রমিক প্রতিনিধিরা জীবনযাত্রার ব্যয়সহ আনুষঙ্গিক বিভিন্ন বিষয় বিশ্লেষণ করে আট হাজার ১১৪ টাকায় নিম্নতম মজুরির প্রস্তাব করেছেন। তাঁদের ওপর চাপ সৃষ্টি করতে গিয়ে মালিকপক্ষ ৬০০ টাকা বৃদ্ধির প্রস্তাব করে।
অবশ্য পোশাক খাতের দুটি সংগঠন বিজিএমইএ ও বিকেএমইএর সাবেক একাধিক সভাপতি মনে করেন, মালিকপক্ষ ২০ শতাংশ বা মাত্র ৬০০ টাকা মজুরি বাড়াতে চাইলে তা তারা নিজেরাই আগে ঘোষণা করতে পারত। এর জন্য মজুরি বোর্ড গঠন করার দরকার ছিল না। সরকারের মেয়াদের শেষ সময়ে এসে রাজনৈতিক অস্থিরতার মধ্যে নতুন করে ইস্যু তৈরি করার সিদ্ধান্ত সঠিক হয়নি বলে মনে করেন তাঁরা।
অবশ্য যোগাযোগ করা হলে বিজিএমইএর সাবেক সভাপতি সফিউল ইসলাম মহিউদ্দিন প্রথম আলোকে বলেন, তাঁরা চান পোশাক কারখানাগুলোর সক্ষমতাকে বিবেচনায় নিয়ে মজুরিসহ শ্রমিকদের অন্যান্য সুবিধা দিতে। তিনি উদাহরণ হিসেবে বলেন, অনেক কারখানায় শ্রমিকদের দুপুরের পুরো খাবার (ভাত, তরকারি) দেওয়া হয়। কিন্তু কিছু কারখানায় তা দেওয়া হয় না। তিনি আরও বলেন, ‘আমরা চাইছি, এ ধরনের সুবিধা সব কারখানাতেই দেওয়া হোক।’
মহিউদ্দিন বলেন, কোনো কোনো বিদেশি ক্রেতা মজুরি বৃদ্ধি করলে তা তাঁদের পণ্যের মূল্যে সমন্বয় করতে রাজি আছেন। আবার কেউ কেউ এই সমন্বয় করতে চান না। তাই সবকিছু বিবেচনায় নিয়েই মজুরি নির্ধারণের কথা ভাবছেন তাঁরা।
বিজিএমইএর বর্তমান সহসভাপতি আবদুল মান্নান ও শহিদুল্লাহ আজিমের সঙ্গে পৃথকভাবে কথা বললে তাঁরা বলেন, তিন হাজার ৬০০ ন্যূনতম মজুরির প্রস্তাবটি তাঁদের চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নয়, এটা প্রাথমিক প্রস্তাব। তাঁদের বিবেচনা হচ্ছে, ছোট-মাঝারি, বড়—সব ধরনের কারখানা যাতে মজুরিটা ঠিকমতো দিতে পারে, তা মাথায় নিয়ে মজুরি নির্ধারণ করা।