গতকাল দুপুরে রাজশাহীর ১৪ দলের নেতারা সংবাদ সম্মেলন করে অভিযোগ করেন, বিএনপি নেতা মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুল রাজশাহী সিটি করপোরেশনের (রাসিক) মেয়রের দায়িত্ব নেয়ার পর থেকে রাজশাহীতে বিএনপি-জামায়াত বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। অব্যাহত সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড চালিয়ে ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করছে তারা। এ থেকে অনুমান করা যাচ্ছে, আগামীতে বিএনপি-জামায়াত ক্ষমতায় গেলে তাদের জঙ্গিবাদে রাজশাহীসহ গোটা দেশ ২০০১ সালের চেয়েও ভয়াবহ হয়ে উঠবে।
এদিকে মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুল মেয়র হিসেবে দায়িত্ব নেয়ার তিন দিনের ব্যবধানে ১৪ দলের সংবাদ নিয়ে নগরীর সব মহলে ব্যাপক ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। তারা এটাকে মেয়র বুলবুলকে অসহযোগিতার লক্ষণ হিসেবেই দেখছেন।
মেয়র মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুল বলেন, এটা ঘোলা পানিতে মাছ শিকারের অপচেষ্টা ছাড়া আর কিছুই নয়। ১৪ দলের লোকজন মেয়র হিসেবে দায়িত্ব পালনে অসহযোগিতা করবে, সেটার আলমত। দায়িত্ব গ্রহণের তিন দিনের ব্যবধানে ১৪ দলের এ ধরনের সংবাদ সম্মেলন রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। তিনি সংবাদ সম্মেলনে তার বিরুদ্ধে আনীত সব অভিযোগ ভিত্তিহীন ও বানোয়াট বলে আখ্যায়িত করেন।
এদিকে ১৪ দলের সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, মেয়র হিসেবে বিএনপি নেতা মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুল দায়িত্ব গ্রহণের পর গত কয়েক দিন ধরে রাজশাহীতে বিএনপি, যুবদল, ছাত্রদল ও জামায়াত-শিবিরের ত্রাস সৃষ্টির ঘটনায় মহানগরীর সার্বিক আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির যে অবনতির ঘটেছে, এর দায়ভার নতুন মেয়রকেই নিতে হবে বলেও দাবি করা হয় সংবাদ সম্মেলন থেকে।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তৃতায় রাজশাহী ১৪ দলের সমন্বয়ক ও রাসিকের সাবেক মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন বলেন, ‘সারাদেশে যুদ্ধাপরাধী জামায়াত-শিবির ও তাদের দোসর বিএনপি এবং হেফাজতে ইসলাম যে নারকীয় সন্ত্রাস ও হত্যাযজ্ঞে লিপ্ত হয়েছে, তাতে তারা দেশ ও রাষ্ট্রকেই চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়েছে। তত্ত্বাবধায়ক সরকারের ধোয়া তুলে তারা সমঝোতা এবং সমাধানের পথে না গিয়ে সারাদেশে অরাজক অবস্থার সৃষ্টি করে গণতন্ত্রবিরোধী ষড়যন্ত্রে লিপ্ত রয়েছে।
তিনি বলেন, ‘এমন অবস্থায় রাসিকের নবনির্বাচিত মেয়র মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুল দায়িত্ব নেয়ার পর দিন থেকেই রাজশাহী মহানগরীতে বিএনপি ও জামায়াত জোট ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করতে উঠেপড়ে লেগেছে।
সংবাদ সম্মেলনে অভিযোগ করা হয়, বুলবুল দায়িত্ব গ্রহণের পরের দিনই (১৮ সেপ্টেম্বর) তার দেয়া তালিকা অনুযায়ী নিয়ম ভেঙে গ্যাস সংযোগ দিতে রাজি না হওয়ায় ছাত্রদল নেতাকর্মীরা গ্যাস কোম্পানির অফিসে হামলা চালিয়ে ভাংচুর ও কর্মকর্তাদের লাঞ্ছিত করে।
এছাড়া ওই দিন ভোরে নগরীর ২৩ নম্বর ওয়ার্ড স্বেচ্ছাসেবক লীগ কার্যালয়টি বিএনপি-জামায়াত সন্ত্রাসীরা আগুন দিয়ে জ্বালিয়ে দেয়। পরের দিন মহানগরী মির্জাপুরে ছাত্রলীগ কর্মী প্রসেনজিত্, সাদ্দাম হোসেন, নাহিদ ও সুমনের ওপর ধারালো অস্ত্র নিয়ে হামলা চালায় বিএনপি-জামায়াতের সন্ত্রাসীরা।
২০ সেপ্টেম্বর মহিলা দলের নেতা ও সিটি করপোরেশনের সংরক্ষিত আসনের কাউন্সিলর শামসুন্নাহারের নেতৃত্বে বিএনপির সন্ত্রাসীরা যুবলীগের ৫ নম্বর ওয়ার্ডের সাধারণ সম্পাদক এবং আওয়ামী লীগ কর্মী সীমার ওপর হামলা চালায়।
সংবাদ সম্মেলনে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন মহানগর আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি আলহাজ রফিক উদ্দিন আহমেদ, মীর ইকবাল, মুক্তিযোদ্ধা মোহাম্মদ আলী কামাল, ওয়ার্কার্স পার্টির মহানগর সম্পাদক লিয়াকত আলী লিকু, মহানগর জাসদের সাধারণ সম্পাদক আবদুল্লাহ আল মাসুদ শিবলি, মহানগর আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক অধ্যক্ষ শফিকুর রহমান বাদশা, মুক্তিযোদ্ধা নওশের আলী, ওয়ার্কার্স পার্টির নেতা দেবাশীষ প্রামাণিক দেবু, সাম্যবাদী দলের নেতা মাসুদ রানা প্রমুখ।