নওগাঁর সাপাহারে প্রধানমন্ত্রীর অগ্রাধিকার ভিত্তিক একটি বাড়ি-একটি খামার প্রকল্পের সরকারী অনুদান ও সমিতির সদস্যদের সঞ্চয়ের প্রায় ১৬ লাখ টাকা নিয়ে উধাও হয়ে গেছে উপজেলা প্রকল্প সমন্বয়কারী আবু বক্কর সিদ্দিক ওরফে রাজা৷ আইনগত ব্যবস্থা গ্রহন না করে ঘটনা গোপন রেখে আত্মসাতকৃত টাকা উদ্ধারের চেষ্টা করেও শেষ পর্যনত্ম ব্যর্থ হয়েছে প্রশাসন৷ গত ৮ দিনেও তার কোন সন্ধান করতে পারেনি প্রশাসন৷ এদিকে বাড়িতে তালা ঝুলিয়ে পরিবারের সদস্যদের নিয়ে গাঁ ঢাকা দিয়েছে আবু বক্কর সিদ্দিক৷
এদিকে ঘটনা জানার পর কষ্টে সঞ্চয় করা এসব টাকা ফিরে পাবে কিনা এই নিয়ে চরম উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছে সমিতির উপকারভোগীরা৷
জানা গেছে বাংলাদেশ পলস্ন্লী উন্নয়ন বের্াড(বিআরডিবি)র নিয়ন্ত্রাধীন সাপাহার উপজেলায় একটি বাড়ি একটি খামার প্রকল্পের আওতায় ৪টি ইউনিয়নে ৩৬ টি সমিতির মাধ্যমে গত ২০০৯ সালে এই প্রকল্পের কার্যক্রম শুরম্ন হয়৷ ২০ জন মহিলা ও ৪০ জন পুরম্নষ নিয়ে গঠিত প্রতিটি সমিতির সদস্যরা নিজ নিজ হিসাবে সঞ্চয় জমা করেন৷ একই পরিমান টাকা সরকারী অনুদান হিসাবে সমিতির হিসাবে জমা করা হয়৷ সেই সঙ্গে সদস্যদের উত্সাহ বাড়ানোর জন্য সরকারী ভাবে আরও বেশকিছু টাকা তাদের সমিতিতে জমা করা হয়৷ এই ভাবে সমষ্ঠিগত টাকা সদস্যদের মাঝে ঋন হিসাবে বিতরন করা হয়৷ ঋনের টাকা নিয়ে সদস্যরা একটি বাড়ি একটি খামার গড়ে তুলছে৷ ইতিমধ্যে এসব ঋন নিয়ে অনেকেই লাভবান হচ্ছে৷ এদিকে ঋনের আবেদন ও প্রসত্মাব পাশ না করেই ওই অফিসের উপজেলা প্রকল্প সমন্বয়কারী আবু বক্কর সিদ্দিক গত জানুয়ারী থেকে এপ্রিল মাস পর্যনত্ম পর্যায়ক্রমে ১৭টি সমিতির হিসাব থেকে ১৭টি চেকে সমিতির ম্যানেজারদের স্বাক্ষর জাল করে স্থানীয় অগ্রনী ব্যাংক থেকে প্রতিটি চেকে ৭০ হাজার থেকে ১ লাখ ৫০ হাজার টাকা পর্যনত্ম মোট ১৫ লাখ ৮০ হাজার টাকা উত্তোলন করে আত্মসাত করে৷ ঘটনা জানতে পেরে উপজেলা পলস্নী উন্নয়ন কর্মকতর্া মেহেদী হাসান অফিসের হিসাব রক্ষক এনামুল হককে বিষয়টি তদনত্ম করার জন্য নির্দেশ দেন৷ প্রকল্প সমন্বয়কারী আবু বক্কর সিদ্দিক ও সমিতির ম্যানেজারদের যৌথ স্বাক্ষরে পরিচালিত ব্যাংক হিসাব থেকে আবু বক্কর সিদ্দিক নিজেই ম্যানেজারদের স্বাক্ষর জাল করে টাকা উত্তোলন করে আত্মসাত করেছে উল্লেখ করে হিসাব রক্ষক ১ সেপ্টেম্বর রির্পোট দাখিল করেন৷ গত ২৯ আগষ্ট আবু বক্কর সিদ্দিক, তার পিতা সামসুল হক,আবু বক্করের দুই স্ত্রী ইতি বেগম ও প্রীতি বেগম উপজেলা অফিসে উপস্থিত হয়ে আগামী ১ সেপ্টেম্বর ১ লাখ টাকা এবং ৮ সেপ্টেম্বর সমুদয় টাকা পরিশোধ করার অঙ্গিকার করে ৩’শ টাকার ননজুডিশিয়াল স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর করে মুচলেকা প্রদান করেন এবং তাদের জমি জমার দলিল দাখিল করেন৷ এই ঘটনার পর থেকে আবু বক্কর ও তার পরিবারের সদস্যদের ১ সেপ্টেম্বর থেকে আর খুজে পাওয়া যাচ্ছে না৷ উপজেলা প্রশাসনের উদ্যোগে ইতিমধ্যে আবু বক্কর সিদ্দিকের গ্রামের বাড়ি নওগাঁ সদর উপজেলার কিত্তিপুর ইউনিয়নের বজরম্নক চকআতিথা, শ্বশুরবাড়ি একই উপজেলার মাগুড়া ও বদলগাছি উপজেলার ভবনগ্রামে কয়েক দফা পুলিশ অভিযান চালিয়ে তাদের আটক করতে পারেনি৷ ওই গ্রামের বাড়িতে তালা ঝুলছে বলে পুলিশ জানায়৷ এ ব্যাপারে উপজেলা পললস্নী উন্নয়ন কর্মকতর্া মেহেদী হাসান ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন ঘটনা জানার পর টাকা উদ্ধারের চেষ্টা চালানো হয়েছে৷ কিন্তু লিখিত অঙ্গিকার করার পরও আবু বক্কর কৌশলে স্বপরিবারে গাঁ ঢাকা দিয়েছে৷ উপজেলা নিবাহী অফিসার রম্নহুল আমীন মিয়া সাংবাদিকদের জানান, টাকা উদ্ধারের জন্য আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি৷ তবে তাকে আটকের জন্য সব ধরনের চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে৷ এ প্রসঙ্গে বিআরডিবির উপ-পরিচালক এস,এম, রহমতুল্লাহ বলেন, ব্যাংকের হিসাব গুলো নিরক্ষন করা হচ্ছে৷ দ্রম্নতই আইনগত ব্যাবস্থা নেওয়া হবে৷#