বিরোধী দল রাজনৈতিক সঙ্কট সৃষ্টি করে অগণতান্ত্রিক শক্তির ক্ষমতা দখলের পথ তৈরি করছে বলে সরকারি দলের নেতাদের অভিযোগ নাকচ করেছেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
তিনি বলেছেন, বিএনপি নির্বাচনের মাধ্যমে ক্ষমতা পরিবর্তনে বিশ্বাস করে। তবে সেই নির্বাচন সুষ্ঠু হওয়ার জন্য চাই নির্বাচনকালীন নির্দলীয় সরকার পদ্ধতি।
শনিবার ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনে এক আলোচনা সভায় বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব একথা বলেন।
একইদিন আরেক আলোচনা সভায় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মওদুদ আহমদ সরকারকে হুঁশিয়ার করে বলেন, সংসদ বহাল রেখে দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনের যে কোনো প্রক্রিয়া রুখে দেয়া হবে।
ফখরুল বলেন, “বিএনপি একটি উদার রাজনৈতিক দল, কোনো সশস্ত্র দল নয়। আমরা নির্বাচনের মাধ্যমেই ক্ষমতার পরিবর্তন চাই। অন্য কোনো পথে নয়।”
আওয়ামী লীগ ক্ষমতা ধরে রাখতে দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন করতে চাইছে বলে দাবি করেন তিনি।
“জনগণের আশা-আকাঙ্ক্ষার প্রতি তোয়াক্কা না করে সরকার সংবিধান ও জুজুর ভয় দেখাচ্ছে। আমরা বলতে চাই সংবিধানের দোহাই দিয়ে লাভ হবে ন। এই সংবিধান বাইবেল-কোরআন নয়। জনগণের প্রয়োজনেই সংবিধান, এটা সরকারকে বুঝতে হবে।”
নির্বাচন নিয়ে আশু সঙ্কট অবসানে সরকারের পদক্ষেপ দেখার প্রত্যশায় থাকার কথাও জানান মির্জা ফখরুল।
“আর মাত্র কয়েক সপ্তাহ বাকি, এরপর বোঝা যাবে, সরকার কী করতে চায়। অনেকে বলছে, বিরোধী দল কী করছে। আমরা স্পষ্টভাবে জানাতে চাই, বিরোধী দল যা করা দরকার, তা-ই করছে।”
দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন হলে গণতন্ত্র রক্ষা পাবে না দাবি করে বিএনপি সমর্থক প্রকৌশলীদের সংগঠন এ্যাবের ওই আলোচনা সভায় বক্তব্যে সবাইকে নির্দলীয় সরকার প্রতিষ্ঠার আন্দোলনে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানান বিএনপির মুখপাত্র।
সংগঠনের ভারপ্রাপ্ত আহবায়ক প্রকৌশলী আ ন হ আখতার হোসেনের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখেন কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের সভাপতি কাদের সিদ্দিকী, অধ্যাপক আসিফ নজরুল, ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের একাংশের সভাপতি রুহুল আমিন গাজী, প্রেসক্লাব সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আবদাল আহমেদ, ড্যাবের মহাসচিব এ জেড এম জাহিদ হোসেন, চলচ্চিত্রকার চাষী নজরুল ইসলাম, শিক্ষক-কর্মচারী ঐক্যজোটের প্রধান সেলিম ভুঁইয়া, দ্য ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনের সাধারণ সম্পাদক মিয়া মোহাম্মদ কাইয়ুম, এ্যাব এর ভারপ্রাপ্ত সদস্য সচিব রিয়াজুল ইসলাম রিজু প্রমুখ।
জাতীয় প্রেক্লাবে ছাত্রদলের সাবেক নেতাদের এক আলোচনা সভায় মওদুদ বলেন, “একটা সংসদ বহাল রেখে আরেকটি সংসদ নির্বাচন কিভাবে হয়? যদি সরকার সংবিধানের দোহাই দিয়ে দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন করে তাহলে দেশে গণতন্ত্রের মৃত্যু ঘটবে।
“আমরা স্পষ্টভাষায় সরকারকে বলে দিতে চাই, সংসদ বহাল রেখে নির্বাচন হলে দেশ অচল করে দেয়া হবে। এই সরকারকে চলতে দেয়া হবে না। দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন এদেশের মাটিতে হতে দেয়া হবে না।”
সঙ্কট এড়াতে আলোচনার উদ্যোগ নিতে সরকারকে আহ্বান জানিয়ে মওদুদ বলেন, “এখনো সময় আছে, সঙ্কটের সমাধান করুন। নইলে সংবিধান কী আছে, কী না আছে- তা জনগণের কাছে বিবেচ্য হবে না।”
সাবেক ছাত্রদল ফাউন্ডেশনের সভাপতি আলী আকবর চুন্নুর সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখেন আমান উল্লাহ আমান, ইফতেখার আলম, আনিসুর রহমান বাদশা, ওবায়দুর রহমান টিপু, দেলোয়ার হোসেন, মশিউর রহমান বাবুল, আনিসুর রহমান আনিস, রিয়াজ উদ্দিন রানা, রবিউল ইসলাম মাসুম, শরিফ মোহাম্মদ ইন্নাস, মঞ্জুর হোসেন ঈসা প্রমুখ।