রাজধানীর চানখাঁরপুলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে যুবলীগ ও শ্রমিকলীগের পাল্টাপাল্টি ধাওয়া ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এ সময় কোনো কারণ ছাড়াই শিক্ষার্থীদেরকে পুলিশ লাঠিপেটা করেছে ও রাবার বুলেট ছুড়েছে বলে অভিযোগ রয়েছে। পুলিশের রাবার বুলেটে বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঁচজন শিক্ষার্থী আহত হয়েছেন।
আহত শিক্ষার্থীদেরকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। আনন্দবাজার দখলকে কেন্দ্র করে ৩৪ নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি এবং ফুলবাড়িয়া শ্রমিক লীগের সভাপতির মধ্যে দ্বন্দ্ব রয়েছে বলে জানা গেছে। ওই দ্বন্দ্বকে কেন্দ্র করে ওই সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে বলে জানা গেছে।
প্রত্যক্ষদর্শী ও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা জানান, আজ দুপুর ১২টার দিকে অমর একুশে হলের বিপরীতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাশেদ, মাসুদ ও মোতালেব নামে তিনজন শিক্ষার্থী একটি রেস্তোরাঁয় বসে খাচ্ছিলেন। বিল দেওয়ার সময় ফুলবাড়িয়া বাসস্ট্যান্ডের শ্রমিক লীগের সভাপতি খায়ের হোসেনের এক সমর্থক রাশেদের কলার ধরে তাঁর পরিচয় জিজ্ঞেস করেন। সেখানে যুবলীগের কয়েকজনও ছিলেন। কলার ধরার পরে রাশেদ জানান, তিনি ছাত্রলীগের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক। এ সময় তাঁদের মধ্যে কথাকাটাকাটি ও ধাক্কাধাক্কি হয়। একপর্যায়ে শ্রমিক লীগের কয়েকজন তাঁদেরকে মারধর করেন। এ সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের তিন শিক্ষার্থী হলে খবর দেন। খবর পেয়ে অমর একুশে হল থেকে বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থী ও কর্মচারী শ্রমিক লীগ ও যুবলীগের কর্মীদের ধাওয়া দেন। এ সময় তাঁদের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। একপর্যায়ে শ্রমিক লীগ ও যুবলীগের কর্মীরা পালিয়ে যান।
পরে শিক্ষার্থীরা দুই দলে ভাগ হন। অমর একুশে হলের শিক্ষার্থীরা হলের সামনে ও শহীদুল্লাহ হলের শিক্ষার্থীরা চানখাঁরপুলে অবরোধ করেন। এ সময় শাহবাগ থানার পরিদর্শক (তদন্ত) এম এ জলিল একুশে হলের সামনে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলেন। পরে তিনি চানখাঁরপুলের দিকে যান। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, পুলিশ চানখাঁরপুলে অবরোধ তুলে নেওয়ার জন্য শিক্ষার্থীদের চাপ দেয়। কোনো কারণ ছাড়া পুলিশ শিক্ষার্থীদেরকে লাঠিপেটা করে ও রাবার বুলেট ছোড়ে। এ সময় শিক্ষার্থীরা আতঙ্কে হলের ভেতরে চলে যান। পুলিশের ছোড়া রাবার বুলেটে বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঁচজন শিক্ষার্থী আহত হন। তাঁদেরকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
এ ঘটনার প্রতিবাদ জানাতে শিক্ষার্থীরা আনন্দবাজার মোড় ও দোয়েল চত্বরে অবরোধ করেন। পুলিশের আচরণের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এই আশ্বাস দেওয়ার পরে শিক্ষার্থীরা বিকেল তিনটার দিকে অবরোধ তুলে নেন।
এ ব্যাপারে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রক্টর আমজাদ আলী প্রথম আলো ডটকমকে বলেন, কোনো ধরনের অনুমতি ছাড়া কর্তৃপক্ষের উপস্থিতিতে পুলিশ শিক্ষার্থীদের লাঠিপেটা করেছে ও গুলি চালিয়েছে। পুলিশের গুলিতে শিক্ষার্থীরা আহত হয়েছেন। এটা তাঁদের গায়েও লাগতে পারতো। পুলিশ কেন এরকম আচরণ করল তা জানতে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলা হবে।
শাহবাগ থানার পরিদর্শক (তদন্ত) এম এ জলিল প্রথম আলো ডটকমকে বলেন, রেলওয়ের কর্মচারীরা আনন্দবাজার মোড়ে সাইনবোর্ড বসাতে যায়। এ সময় স্থানীয় লোকজন বাধা দেয়। স্থানীয় লোকজনের সঙ্গে শিক্ষার্থীরাও ছিলেন। চানখাঁরপুলে একটি গাড়িতে আগুন দেওয়া হয়। এ সময় পুলিশ শিক্ষার্থীদের বাধা দেয় ও রাবার বুলেট ছোড়ে।