বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, আগামী নির্বাচন নিয়ে মানুষ উদ্বিগ্ন ছিল। নির্বাচন নিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গতকাল সোমবার সচিবদের বৈঠকে যে বক্তব্য দিয়েছেন, তাতে মানুষের উদ্বেগ ও হতাশা আরও বেড়েছে। প্রধানমন্ত্রী সংলাপ ও সমঝোতার পথ বন্ধ করে দিয়েছেন।
আজ মঙ্গলবার রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ ব্রিফিংয়ে মির্জা ফখরুল এ কথা বলেন। এর আগে ১৮ দলের মহাসচিব পর্যায়ের বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। এতে ১৮ দলের নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
প্রসঙ্গত, প্রধানমন্ত্রী গতকাল সচিবদের বৈঠকে বলেন, সংবিধান অনুযায়ী বর্তমান সরকারের মেয়াদ শেষ হওয়ার আগের তিন মাসের মধ্যে অর্থাত্ আগামী ২৭ অক্টোবর থেকে ২৪ জানুয়ারির মধ্যে দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। এই অন্তর্বর্তী সময়ে জাতীয় সংসদ বহাল থাকলেও অধিবেশন বসবে না। মন্ত্রিসভা থাকবে, তবে কোনো নীতিনির্ধারণী সিদ্ধান্ত নেবে না।
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব অভিযোগ করেন, আওয়ামী লীগ নীলনকশা করে ক্ষমতা চিরস্থায়ী করতে চায়। তার প্রমাণ গতকাল প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য। তিনি বলেন, ‘অত্যন্ত দৃঢ়তার সঙ্গে বলতে চাই, ১৮-দলীয় জোট এ ব্যবস্থা মেনে নেবে না। নির্বাচন একটি নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনেই হতে হবে। এ ছাড়া কোনো নির্বাচনে ১৮ দল অংশ নেবে না।’ তিনি অভিযোগ করেন, সরকার জনগণের সঙ্গে লুকোচুরি খেলছে। পৃথিবীর কোনো দেশেই একটি সংসদ রেখে আরেকটি সংসদ নির্বাচন হওয়ার নজির নেই।
মানবতাবিরোধীরা ভোটার থাকতে পারবেন না—এমন বিধানসংবলিত ভোটার তালিকা (দ্বিতীয় সংশোধন) আইন, ২০১৩-এর খসড়ার নীতিগত ও চূড়ান্ত অনুমোদনের নিন্দা জানিয়েছেন মির্জা ফখরুল। তিনি বলেন, এই সিদ্ধান্ত সম্পূর্ণ মানবাধিকারের বিরুদ্ধে। কারণ, এখনো ওই সব মামলা পুরোপুরি নিষ্পত্তি হয়নি। আপিল বিভাগে বিচারাধীন আছে। এমন অবস্থায় এ ধরনের বিধান আইনের পরিপন্থী। তিনি এটি বাতিল করার দাবি জানান।
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে মির্জা ফখরুল বলেন, সরকার যেভাবে নির্বাচন করতে চাইছে, জনগণ তা মেনে নেবে না। জনগণ এ ব্যবস্থার বিরুদ্ধে দুর্বার প্রতিরোধ গড়ে তুলবে। আন্দোলন-সম্পর্কিত এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘আমরা আমাদের কৌশলে আন্দোলন করছি।’ প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যের মধ্য দিয়ে প্রমাণিত হয়েছে কারা সংলাপ চায়, আর কারা চায় না বলেও তিনি মন্তব্য করেন।
হেফাজতে ইসলামের নায়েবে আমির মুফতি মুহাম্মদ ওয়াক্কাসকে গ্রেপ্তারের নিন্দা জানিয়েছেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি এ ঘটনার নিন্দা জানিয়ে তাঁর মুক্তি দাবি করেন।